সরকার পতনে একদফা দাবিতে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের প্রথমদিনে ফাঁকা চট্টগ্রাম অঞ্চলের সড়ক । চট্টগ্রামের সড়কগুলোতে কমেছে যানবাহনের সংখ্যা। ঢাকা-চট্টগ্রাম ,চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়কের পাশাপাশি আঞ্চলিক মহাসড়কেও দৃশ্যত হরতাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাতে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরমুখি আমদানি রফতানি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। টানা তিন দিনের অবরোধের মঙ্গলবার প্রথম দিন সকাল নয়টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮ থেকে ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানার পুলিশ ১০ ব্যক্তিকে আটক করেছে। এ ছাড়া সকালে নগরীর কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে জামায়াত-শিবিরের কর্মী সন্দেহে আটজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সড়কে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে কমেছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত যানবাহন। হাতেগোনা কিছু গণপরিবহন চলাচল করছে। তবে সড়কে যাত্রীসংখ্যাও কম।
চট্টগ্রাম নগরীতে সকালে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ও অল্প কিছু গণপরিবহন চলাচল করেছে। রাস্তাঘাট ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় ফাঁকা। ব্যক্তিগত গাড়ি তেমন একটা দেখা যায়নি। দূরপাল্লার কোনো যানবাহনও চলাচল করেনি। নগরীর অলংকার ও কর্নেলহাট এলাকায় আটকে পড়েছেন বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা। অনেকেই ছোট যানবাহনে গন্তব্যের দিকে রওনা দেন।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্পটে প্রাইভেট কার ভাংচুর ও বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে৷ ভোরে নগরের ইপিজেড থানার সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় একটি লোকাল বাসে যাত্রী সেজে আগুন দিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। নগরীর নতুন ব্রিজ এলাকায় সড়কের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
অবরোধের পূর্বে সোমবার রাতে নগরের গরীবুল্লাহ শাহ মাজার এলাকায় দামপাড়া বাস কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনিবাসে আগুন দিয়েছিল দুবৃর্ত্তরা।
চট্টগ্রাম নগরী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এ ছাড়া উপজেলাগামী বাসও ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। নগরীর সিটি গেইট, আকবর শাহ্, অলংকার মোড়, নিউ মার্কেট, জিমালখান, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, জিইসি মোড়, নতুন ব্রীজ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকায় খুবই কমসংখ্যক যানবাহন দেখা গেছে। সড়কে বাসের সংখ্যা খুবই কম। অল্পসংখ্যক সিএনজি, অটোরিকশা এবং টেম্পু গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে।
শাহ আমানত সেতু এলাকায় কক্সবাজার-টেকনাফগামী বাসের প্রায় সব কটি কাউন্টার বন্ধ রয়েছে । একই চিত্র নগরীর অলংকার ও কর্নেলহাট এলাকার বাস কাউন্টারগুলোয়। বিআরটিসি, বায়েজিদ, কদমতলি, শূভপুরসহ বাস টার্মিনাল থেকে কোন বাস ছেড়ে যায়নি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল থেকে নির্দিষ্ট সময়ে সবকটি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি গন্তব্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন স্টেশনে দায়িত্বরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইন্সপেক্টর আমান উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।