ফখরুল আলম, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায়  জামাই-শাশুড়ির অনৈতিক সম্পর্ক ও কোটি টাকা আত্মসাতের প্রতিকারে  বৃহস্পতিবার কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ ইব্রাহিম হাওলাদার।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ইব্রাহিম বলেন, ‘পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ২০০৮ সালে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে মালয়েশিয়া যাই। এর আগে ২০০২ সালে পারিবারিক সিদ্ধান্তে ধুলাসার ইউনিয়নের বেতকাটা গ্রামের মোঃ নুরুল ইসলাম নেগাবানের মেয়ে মোসাঃ হাওয়া বেগমকে বিয়ে করি। আমাদের দাম্পত্য জীবনে ৩ কন্যা ইয়াসমিন (১৭), ইমা (১২) ও আশা (৬) এবং এক ছেলে মোঃ তালহা (৪) জন্মগ্রহণ করে। প্রবাস জীবনে কঠোর পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাই। অথচ আমার প্রেরিত সমুদয় টাকা আমার স্ত্রী ও নিজ মেয়ের জামাই অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে আত্মসাৎ করায় আজ আমি নিঃস্ব, সর্বস্বান্ত হয়ে পথে পথে ঘুরছি।’

ইব্রাহিম আরও বলেন,‘আমি আইনী সহায়তা পেতে ৮ আগস্ট ২০২০ মহিপুর ওসি’র শরণাপন্ন হই। তাকে সব খুলে‌ বলি এবং আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রমাণাদি প্রদর্শন করি। কিন্তু ওসি মনিরুজ্জামান আমার ফোন নিয়ে সকল তথ্য, প্রমাণাদি অন্যায়ভাবে মুছে দেয়, যাতে আমি আইনী‌ সহায়তা নিতে না পারি। তিনি (ওসি) আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ গ্রেফতারের ভয় দেখান। আমি অনেক অনুনয় বিনয় করায় তিনি ৮ আগস্ট ২০২০ তারিখে ২৩২ নং জিডি রেকর্ড করেন। থানা থেকে ফিরে জানতে পারি ওসি সাহেব জামাই-শাশুড়ির অনৈতিক সম্পর্কের এ‌ বিষয়টি পূর্বেই জ্ঞাত। এমনকি তিনি বিভিন্ন সময় তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের ভয় দেখিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। এমনকি স্ত্রীকে দেয়া একটি অ্যান্ড্রয়েড স্যামসাং মোবাইল সেট অদ্যাবধি ওসি তার হেফাজতে রেখেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ইব্রাহিম বলেন, ‘বিদেশে থাকাকালীন জানতে পারি আমার স্ত্রী আমার কম বুদ্ধিসম্পন্ন নাবালিকা মেয়ে ইয়াসমিনকে লতাচাপলী ইউনিয়নের খাঁজুরা গ্রামের তোফাজ্জেল জোমাদ্দারের পুত্র রবিউল (২৪) এর সাথে রেজিস্ট্রি কাবিন ছাড়াই বিয়ে দেয়। রবিউল‌ তার পূর্ব পরিচিত এবং তার সাথে আমার স্ত্রীর গোপন সখ্যতা থাকায় আমার পরিবারের কোনো আপত্তি সে শোনেনি। আমি আরও জানতে পারি আমার স্ত্রী তুচ্ছ কারণে সন্তানদেরসহ আমার ৮০ বছরের বৃদ্ধ বাবাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছে। এসব শুনে আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। তবুও সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে তাকে সংশোধনের সুযোগ দেই। কিন্তু তারা কেউ সংশোধন হয়নি। বরং কম বুদ্ধিসম্পন্ন মেয়ে ইয়াসমিনকে তাদের অনৈতিক সম্পর্কে সম্মত থাকতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বাধ্য করছে। এমনকি জামাই-শাশুড়ি পরস্পর যোগসাজশে ইয়াসমিনের গর্ভের সন্তান নষ্ট করেছে।’

ইব্রাহিম বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে আমার জীবনের বাস্তব গল্প দেশবাসীকে জানাতে চাই। যাতে আর কোনো প্রবাসী নাগরিক আমার মত এরকম সর্বস্ব হারিয়ে মানসিক যন্ত্রণায় না ভোগে।’

এর আগে ১২ আগস্ট ২০২০ বিজ্ঞ কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জঘন্য এ জামাই-শাশুড়ির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি এবং শ্বশুরকে সমন দিয়ে আদালতে তলব করেন। পরবর্তীতে ১৩ আগস্ট আলোচিত শাশুড়ি হাওয়া বেগম ৪ সন্তানকে নিয়ে আদালতে হাজির হলে আদালতের অনুকম্পায় সে জামিন লাভ করেন। তবে আলোচিত জামাই রবিউল পলাতক রয়েছেন।