কালাইয়ে মিমাংশার পরেও একই মামলায় দু’বছর ধরে সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ
নিরেন দাস,জয়পুরহাট,জেলা প্রতিনিধিঃ-
জয়পুরহাটের কালাইয়ে মিমাংশার পরেও একই মামলায় দু’বছর ধরে সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
প্রথম পক্ষ আঃ রাজ্জাক ওরফে সুলতান মামুদ,দ্বিতীয় পক্ষ সুমি আক্তারগণ জয়পুরহাট জেলার কালাইয়ে ১৩৬ নোটারী পাবলিক হলফনামা প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুছ মেম্বার,আলী আনসার, মর্জিনা বেগম, তানজিলা বেগম সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা গেছে, বিবাহ সংক্রান্ত পারিবারিক বিষয়বস্তু নিয়ে বগুড়া বিজ্ঞ আদালতে নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এ্যাড. তহমিনুর রহমান ও এ্যাড. পবনের সেরেস্তায় স্ট্যাম্পে লিখিত উভয়পক্ষের অভিভাবকগণের উপস্থিতে ও সকলের সম্মতিক্রমে আপোষ মিমাংশা করা হয়।
১৩৬ নং এভিডেভিডের মূলে ১ থেকে ১১ নং দফার বিষয় বস্তু নিয়ে উক্ত হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে ৩৪/১৮/ ৬/১৯/৫৮ পারিবারিক মামলা আপোষে স্বাক্ষীর মাধ্যমে মামলা নিষপত্তি করা হইলো। কিন্তু দ্বিতীয় পক্ষসহ তাহার অভিভাবকেরা প্রথম পক্ষের নিকট হইতে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টায় বিজ্ঞ আদালতের আইনকে অমান্য করে এখনো উক্ত মামলাটি চলমান রেখেছেন।
৩৪/১৮ রাষ্ট মামলা দীর্ঘ ৪ বছর শুনানি শেষে দ্বিতীয় পক্ষ সুমি আক্তারের অভিযোগ আদালতে প্রমানিত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের বিচারক উক্ত মামলা থেকে প্রথম পক্ষ সাংবাদিক আঃ রাজ্জাক কে অব্যহিত দিলেও এ বিষয়ে বাদীনি সুমি আক্তার ও মিথ্যা স্বাক্ষ প্রদান কারি মর্জিনা বেগম,মিজানুর রহমান, শফিকুল ও আলী আনসারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, সম্মানহানি, আর্থীক ক্ষতি, পারিবারিকভাবে অপদস্থ করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে সুমিগনের বিরুদ্ধে ধারা ১৭ অনুসারে যেকোনো সময় মামলা দায়ের করবেন সাংবাদিক আঃ রাজ্জাক।
এক পর্যায়ে ১৩৬ এভিডেভিডে ৬ নং দফায় দেন মহর খোরপোষসহ যাবতীয় দেনা পাওনা বুজিয়া পাইয়া দ্বিতীয় পক্ষ হয়ে স্বাক্ষর করেন, ইউনুস আলী আনসার মর্জিনা, তানজিলা বেগম এমনকি উক্ত এভিডেবিভিডটি গত ১৮/২/২০-ইং তারিখে বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক চাঁদনী বাজার প্রত্রিকায় তা প্রকাশ করা হয়।
সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষেও প্রায় দুইবছর ধরে এখনো ওই মামলাটি চলমান রয়েছে কিভাবে-? আর কোন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার জোড়ে উক্ত মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে তা সাংবাদিক মহলের নিকট কৌতূহল জাগিয়েছে। মামলা মিমাংশার পরেও কিভাবে মামলাটি চলমান থাকতে পারে। শুধু তাই নয় এ মামলার বিষয়ে দ্বিতীয় পক্ষকে নিয়ে জাতীয় দৈনিক ভোরের দর্পণ প্রত্রিকায় লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে জবাব চাওয়া হলেও তাহার কোন প্রকার জবাব না দিয়ে প্রথম পক্ষের নিকট মোটা অংকের অর্থের চাঁপ সৃষ্টি করে বিজ্ঞ আদালতের সাথে প্রতারণাসহ সাংবাদিককে এখনো বিভিন্ন হুমকি অব্যাহত রেখেছে বাদীনি পক্ষ৷
দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষী ইউপি সদস্য ইউনুছ মেম্বারের সাথে মুঠো ফোনে উক্ত ১৩৬ এএভিডেভিটে তাহার স্বাক্ষরের বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি বলেন উক্ত আপোষ নামায় আমি স্বাক্ষর করেছি এবং আলী আনসার মর্জিনা তানজিলা তারাও আমার উপস্থিততে স্বাক্ষর করেছে। তাহার এ কথার কল রেকডটি সাংবাদিক মহলের নিকট প্রমান সহিত রয়েছে।
আলী আনসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তিনি কোন স্বাক্ষর করেনি, ইউনুছ টাকা পয়সা খেয়ে মিথ্যা কথা বলছে আমার ভগনী জেলে ছিলো তার সাথে কথা বলেন। এক পর্যায়ে তিনি রাগান্নিত হয়ে বলেন আর কখনো এ বিষয়ে তাকে ডিস্টার্ব না করতে ।
দ্বিতীয় পক্ষ সুমি আক্তারের মুঠো ফোনে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ১৩৬ এভিডেভিটের বিষয় নিয়ে কথা বললে তিনি বলেন, আপনি সাংবাদিক তো নিউজ করবেন তা আমাকে ফোন করেছেন কেন-? জানেন না নারীদের ক্ষমতা সাংবাদিকের চেয়েও বেশি বলেই তিনি কলটি কেটে দেন।
মর্জিনা বেগমের সাথে স্বাক্ষাত করতে গেলে তিনি অশ্লীল ভাষাশ গালিগালাজ করতে থাকেন। এরপর তানজিলা বেগমের সাথে কথা বলতে গেলে তিনিও চড়াও হয়ে বলেন আমি কিছু বলতে পারব না। আপনাদের কি করার আছে করেন।
নাম প্রকাশে আনইচ্ছুক এক ব্যক্তি স্বীকার করেন যে, তানজিলা বেগমের এভিডেভিডে সাক্ষর করেছেন৷ প্রয়োজনে তিনি কোর্টে স্বাক্ষীও দিবেন।
উপরোল্লিখিত বিষয়ে নিম্নে এ্যড. আঃ জলিল এ্যাড. তহমিনুর রহমান ও এ্যাড.পবন কর্তৃক ১৩৬ এভিডেভিটের লিখিতসহ স্বাক্ষীর বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হইলো-এ্যাড, আঃ জলিল বলেন তার সেরেস্তার স্বমনে স্ট্যম্পে স্বাক্ষর করেন উভয় পক্ষ৷ তার বাড়ি কালাই থানাতে তাদেরকে তিনি চিনেন। প্রয়োজন হলে তিনিও আদালতে স্বাক্ষী দিবেন।
এ্যাড.তহমিনুর রহমান বলেন, আপোষ মিমাংসাকারীরা সেরেস্তায় উভয় পক্ষ তার সামনে টাকা পয়সা লেন দেন করে স্বাক্ষর গ্রহনের পরে বিষয়টি আইডেন্টি ফাইকরি৷ এটা প্রায় দুইবছর আগের ঘটনা আমি জয়পুরহাটের কালাই পারিবারিক আদালতে স্বাক্ষও দিয়েছি।
এ্যাড.পবন বলেন নোটারি রুলস-১৯৬৪ দ্বারা বাংলাদেশে নোটারী পাবলিকের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়। উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে নোটারী করতে হবে। নোটারী বিধিমালা (৬০-ক) অনুযায়ী, একজন নোটারীয়ান বা যিনি নোটারী করে দেন তাঁর নির্দিষ্ট কার্যালয় থাকতে হবে। এছাড়াও আমি জয়পুরহাটের কালাই পারিবারিক আদালতে গিয়ে স্বাক্ষ্য দিয়েছি সুমি আক্তার বগুড়া জেলা কারাগারে বন্ধি থাকায় তারা উভয়পক্ষের অভিভাবকের সম্মতিক্রমে স্বাক্ষর করিয়াছে এবং আমার অফিস থেকে এভিডেভিট সরবারহ করিয়াছি৷ যাহা রেজিষ্টারেও উল্লেখিত রয়েছে৷
উক্ত বিষয়ে উদয়পুর ও আহম্মেদাবাদ ইউপি আলী আকবর ওয়াজেদ আলী দাদা চেয়ারম্যানদ্বয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, আঃ রাজ্জাক একিটি আপষ নামার বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ করেছিলো। এনিয়ে ২য় পক্ষকে ডাকা হলেও তারা কোন যোগাযোগ করেনি৷
এ বিষয়ে সাংবাদিক আঃ রাজ্জাক বলেন, তার সম্পর্কে যে ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে, সবই মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও পারিবারিকভাবে তাকে হয়রানি করা হয়েছে। আমি দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করি’ আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি তাই বিজ্ঞ আইনের পাশাপাশি দেশের সকল জাতির দর্পণের নিকট আমার আকুল আবেদন আমাকে এ মিথ্যা হয়রানি থেকে রক্ষার্থে আপনাদের সহযোগীতা কামনা করছি৷ আমার বাবা ক্যন্সার রুগী সংসার বলতে আমার আর কিছুই নেই এবং তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্শন করে ন্যায্য বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, তার দীর্ঘদিনের অর্জিত মান-সম্মান সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছে এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের কারনে এবং একাধিক মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তার পরিবারে কোন প্রকার মামলা হামলা ছিলনা৷