1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০১:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কসবায় বিএসএফের এলোপাথাড়ি গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত! চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৩ হাজার পিস ইয়াবা সহ আটক ১ঃ মাদক পরিবহনে নিয়োজিত মোটর সাইকল জব্দ ট্রেনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে আন্ডাররেটেড ঘাতকের রহস্য এবং “হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স” চট্টগ্রামে ১৪ পিছ বিদেশী স্বর্নের বার সহ আটক ১ সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছেড়ে দিয়েছে আদালত আওয়ামীলিগের সময়ে আওয়ামীলিগের নেতা , বিএনপির সময়ে বিএনপির নেতা সেজে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা ! নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এলজিইডি কুমিল্লার মতবিনিময় কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ! সাভারে বিরুলিয়ায় নিহত নারী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা : স্বামী গ্রেফতার । ফেসবুকে মানহানিকর লেখা প্রচারের অভিযোগ এনে এক কোটি টাকার মানহানি এবং হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১, ১২.৫২ এএম
  • ২৪৫ বার পঠিত
কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে কুড়িগ্রামের উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প। বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে পড়েছে এই মৃৎ শিল্পটি। তারপরও পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য এখনও ধরে রেখেছে অনেকেই। উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিনে ব্রহ্মপুত্র  নদের তীরবর্তী দাঁড়িয়ে থাকা কুমারপাড়া যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা একটি স্বর্ণালী ছবি।
এখন আর পুর্বেরমত কুমার পাড়ার পাশদিয়ে যাওয়ার সময় কাঁচা মাটির সোঁদা গন্ধ পাওয়া যায় না। প্লাস্টিক এর তৈরী আসবাবপত্রের বদৌলতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাংলার পুরোনো এই শিল্প। বেকার হয়ে পড়ছে প্রায় সকল মৃত শিল্পী। মাটির আসবাবপত্রের চাহিদা না থাকা ও কুমার মাটি সংকটের কারণেই বর্তমানে মাথা তুলতে পারছেনা এই শিল্প।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের কুমারপাড়ায় ৩৫টি কুমার পরিবার বসবাস করছে। তারা দিন রাত একাকার করে মাটি দিয়ে তৈরি করছে বিভিন্ন মৃৎ-পণ্য।
কুমারদের মাটি দিয়ে তৈরি নানা জিনিস এর মধ্যে কুয়ার পাত, হাঁড়ি পাতিল, ভাঁড়, টালি, খেলনা, পুতুল, ফুলদানি, ছাঁইদানি ইত্যাদি বাংলার পুরোনো ঐতিহ্য বহন করে। পাল বা কুমাররা মাটি দিয়ে শৈল্পিক হাতে তৈরী করেন বিভিন্ন রকম মাটির হাড়ি-পাতিল, মাছ ধোয়া ঢোলা, কলস, পনুয়া, কসুরী, দইয়ের বাটি, ছোট বাচ্চাদের বিভিন্ন প্রকার খেলনা যেমন- পুতুল, হাতি, বাঘ, ঘোড়া, গাভী, পাখী, নৌকা, বালতি, গামলা, জগ, কড়াই, চুলা, টাকা জমানোর ব্যাংক ইত্যাদি।
এবং এগুলো বাড়িতে বাড়িতে ফেরি করে ও বিভিন্ন হাটে নিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত কুমাররা। এখন তা আর তেমন একটা চোখে পড়েনা। কুমারদের পূর্বপুরুষরাও এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিলেন। কিন্তু এ পেশা দিয়ে এখন আর সংসার চালানো যায়না বলে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে ঝুঁকছে অন্য পেশায়।
  তাদের তৈরি এ সব জিনিস এখন আর তেমন একটা ব্যাবহার করা হয় না। হিন্দুদের পূজা কিংবা বিয়েতে এখনো মাটির তৈরী কলস, বাটি ইত্যাদির ব্যবহার হলেও সেটা অতি নগণ্য। বর্তমানে পহেলা বৈশাখ সহ গ্রামীণ মেলায় মাটির তৈরি বিভিন্ন খেলনা পুতুলসহ কিছু জিনিস বিক্রি হয়। অনেকেই মাঝে মাঝে শখের বসে যৎসামান্য জিনিস ক্রয় করে থাকে। এক সময় এসব আসবাবপত্র দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কদর ও চাহিদা ছিল।
এক সময় মাটির তৈরী গাছ রোপণের টপের বেশী চাহিদা থাকলেও এখন অনেকটাই কমে গেছে। যা দেশের নার্সারীসহ বিভিন্ন বাড়ির শোভা বর্ধনের কাজে ব্যবহৃত হত। প্রতিটি টপ তখন ১০-১৫ টাকায় বিক্রয় করা হলেও বর্তমানে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প মূল্যে তা বিক্রি করতে পারছে না তারা।
এছাড়া এখন প্লাস্টিক সহ বিভিন্ন আয়রন জাতীয় জিনিসের তৈরি টপ পাওয়া যায় বলে এখন মাটির তৈরী টপের চাহিদা কমে গেছে। মাটির তৈরি থালা আকৃতির বাসন যা আগে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এখন আর তা ব্যবহার হচ্ছেনা। এসব কারণে প্রায় সারাবছরই কুমারদেরকে বসে থাকতে হয়। বাজারে প্লাস্টিকের পণ্যের কারনেই মূলত এই শিল্প বিলুপ্তির পথে। তাই মাটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহারে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। যদি সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয় তাহলে হয়তো আবার এ শিল্পে প্রাণ ফিরে আসবে ।
এ ব্যাপারে হাতিয়া ইউনিয়নের কুমারপাড়ার হরিশচন্দ্র পাল (৬০),নৃপেন্দ্র পাল(৫৫),জিতেন্দ্র পাল(৫৫) বলেন, করোনাকালীন সময়ে সরকারীভাবে কোন সহযোগীতে পাইনি। চেয়ারম্যান মেম্বারেরাও কোন খোজখবর নেয় না। বাপ-দাদার কাছে শেখা আমাদের এই জাত ব্যবসা আজও আমরা ধরে রাখছি।
উলিপুরসহ আশপাশের এলাকায় এক সময় মাটির তৈরি জিনিসের ব্যাপক চাহিদা ছিল, কিন্তু বর্তমানে বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে পড়েছে এই মৃৎশিল্পটি।
একই এলাকার মন্টুচন্দ্র পাল (৬৫) বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন মাটি সংগ্রহে অনেক খরচ করতে হয়। এ ছাড়াও জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে মিল না থাকায় প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে হচ্ছে।
এবিষয়ে হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম আবুল হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উলিপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ পেশার শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা একান্ত জরুরি।
কেননা, সরকার যদি পাল বা কুমার স¤প্রদায়কে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে কিছুটা সহায়তা দিতে পারে, তাহলে মাটির শিল্পের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews