এনামুল হাসান, কেশবপুর (যশোর) :
যশোরের কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা সেই রোমান ব্রিকসটি অবশেষে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বুধবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে ভাটাটি গুড়িয়ে দেন। এসময় ভাটার মালিক সিদ্দিকুর রহমান ভাটা থেকে পালিয়ে যায়। অবৈধ ভাটাটি ভেঙ্গে ফেলায় এলাকার শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ উপস্থিত জনতা উল্লাস প্রকাশ করেন। এর পূর্বেও কয়েক দফা ওই অবৈধ ইটভাটা রোমান ব্রিক্সসটি ভেঙ্গে দেয়া হলেও প্রভাবশালী আ‘লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান আইনের প্রতি বৃদ্ধাংঙ্গুল প্রদর্শন করে ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের মাধ্যমে তার ভাটাটি চালু রাখেন। বুধবার সকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আসিফুর রহমান ও যশোর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপঃপরিচালক এমদাদুল হকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং ভাটা ভাংগার যন্ত্র ইস্কেবেটর গাড়ী, ভাটায় আগুন নিভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ী, পুলিশ, আনসার ও দমকল বাহিনীর লোকজন।
কেশবপুরে ১২টি ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে কেশবপুর ব্রিকস সহ দুইটি ভাটার বৈধ কাজগ-পত্র রয়েছে। অন্য ১০টি ইটভাটা অবৈধ ভাবে ইট পুড়িয়ে এলাকার পরিবেশ দুষন করে চলেছে।
এলাকাবাসীরা জানান, আ‘লীগের প্রভাবশালী নেতা সিদ্দিকুর রহমান, দলের প্রভাব খাটিয়ে গত ১০ বছর পূর্বে ফসলি জমি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে ওই ভাটাটি নির্মাণ করে, সেখানে ইট পুড়িয়ে পরিবেশ দুষণ করে আসছে। তিনি এলাকার ফসলি জমির উপরি ভাগের মাটি কেটে নিয়ে ভাটায় ব্যবহার করছেন। এতে ফসল উৎপাদন ব্যবহত হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার কাঁচা-পাকা সড়ক নষ্ট করাসহ শব্দ দুষনসহ পরিবেশ দুষণ করে চলেছেন। ভাটার চারপাশে অবস্থিত ক্ষেতের ফসলে কালীবর্ণ পড়ে ধান, পাট ও বিভিন্ন সবজি ক্ষেতের ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করলে ভাটার মালিক তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কৃষকদের ওপর হামলা চালায়। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এদিকে অটার মালিক সিদ্দিকুর রহমান সংশ্লিষ্ট সকলকে ম্যানেজ করে ভাটাটি চালু রাখেন।
এসব ঘটনা উল্লেখ করে, এলাকাবাসী সম্প্রতি পরিবেশ দুষনকারী অবৈধ ইটভাটা রোমান বিক্সসটি বন্ধ করাসহ ভাটার মালিক সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন উপদেষ্টা, যশোর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর ও কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আলাদা ভাবে আবেদন করেন।
এব্যাপারে ভাটার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে আমার ইটভাটাটি ভেঙ্গে দিয়েছে। পরিবেশবাদী বেলা আমার বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে ভাটা নিয়ে একটি মামলা করেছেন। আমি তার জবাবও দিয়েছি। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আসিফুর রহমান বলেন, বারইহাটি গ্রামে অবস্থিত অবৈধ ইটভাটা রোমান ব্রিক্সসটি এলাকায় পরিবেশ দুষন করায় তা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। আরও যেসব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা রোমান ব্রিক্সসটি ফসলী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশে নির্মাণ করায় তা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।