গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও মুকসুদপুরে দুটি হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোটালীপাড়ার রামশীল গ্রামের চাঞ্চল্যকর কৃষক নিখিল তালুকদার হত্যা মামলায় পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শামীম হাসান ও পুলিশ সোর্স রেজাউলের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। রামশীল গ্রামের দুই শতাধিক গ্রামবাসী কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল বাজারে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করেন। এরপর মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা রামশীল বাজার এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বাজার এলাকা প্রদর্শন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। মানববন্ধন ও সমাবেশে আসামিদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, কৃষক নিখিল হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি মহল তৎপর হয়ে উঠেছে। মামলার আসামি পুলিশের এএসআই শামীম হাসান ও সোর্স রেজাউলের বিরুদ্ধে করা মামলার সঠিক তদন্ত শেষে অবিলম্বে বিচার ও অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানান। উল্লেখ্য, গত ২ জুন সকালে কোটালীপাড়ার রামশীল বাজারের ব্রিজের পূর্ব পাশে নিখিলসহ চারজন তাস খেলছিল। এ সময় কোটালীপাড়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক শামীম হাসান একজন ভ্যানচালক ও পুলিশের সোর্স রেজাউল সেখানে হাজির হয়। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায় এবং নিখিলকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে এএসআই শামীম। এ সময় তাকে হাঁটু দিয়ে বার বার মেরুদণ্ডে আঘাত করলে নিখিলের মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। চিকিৎসার জন্য নিখিলকে প্রথমে বরিশালশের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে এবং পরদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত ৭ জুন রাতে নিখিলের ভাই মন্টু তালুকদার মামলা করলে ওই দিন রাতেই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন ৮ জুন আসামিদের জেল হাজতে পাঠায় আদালত। অন্যদিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ভ্যানচালক শাজাহান শেখ হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাঘদী ইউনিয়নবাসী। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাঘদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘণ্টাব্যপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী। পরে ওই স্থান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঘদী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মানববন্ধন চলাকালে নিহত শাজাহান শেখের স্ত্রী পিঞ্জিরা বেগম, ছেলে সোহাগ শেখ, পুত্রবধূ লাইজু বেগম, ফাহিমা বেগম ও এলাকাবাসী আনোয়ার হোসেন শেখ বক্তব্য দেন। এ সময় বক্তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। প্রসঙ্গত, গ্রাম্য আধিপত্য নিয়ে গত ৩০ মার্চ শাজাহান শেখকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে জাহাঙ্গীর শেখ ও তার লোকজন।পরে তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করা হলে ৩ এপ্রিল তিনি মারা যান।