চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে বেসরকারি হাসপাতালের কার্যক্রম। করোনা ভাইরাসের রোগী ভর্তির ক্ষেত্রেও রয়েছে অনীহা। আবার কোন রোগী ভর্তি করা হলেও বিল নেয়া হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। বাড়তি বিল নেয়ার ক্ষেত্রে অজুহাতের শেষ নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বাড়তি টাকা নেয়ার অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হারুন উর রশিদ সানী বাবা আনিস মিয়াকে হারিয়ে শোকে দিশেহারা। কয়েক দিনের জ্বরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারি মেট্রোপলিটন হাসপাতালে। কিন্তু শেষপর্যন্ত আর বাড়ি ফেরা হয়নি। এদিকে শোকাহত সন্তানের হাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধরিয়ে দেয় বাড়তি বিলের ফর্দ।
এ প্রসঙ্গে তার ছেলে বলেন, শুধুমাত্র ঘুমের ওষুধ আর স্যালাইন দিয়েই ৯৪ হাজার টাকা বিল করেছে। এটা মোটেও স্বাভাবিক না।
একই ধরনের অভিযোগ নগরীর অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কাই করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কোন রোগী বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পেলেও চিকিৎসার নামে গলার কাঁটা বিলের বোঝায় জর্জরিত তারা।
এক ভুক্তভোগী বলেন, মাত্র ৭ দিনে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার বিল এসেছে। এই টাকা পরিশোধ করতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে।
অবশ্য বাড়তি বিল নেয়ার নানা অজুহাত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ম্যাক্স হাসপাতালের পরিচালক রঞ্জনপ্রসাদ দাশগুপ্ত বলেন, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা দিয়ে ১ ঘণ্টায় ৭০ লিটার করে দিতে হয়। ১৫০ টাকা করে পার লিটার যদি নিই, সে যদি ১৪ দিন নেয়, তার বিল তো অটোমেটিক্যালি বাড়বে।
সরকারিভাবে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ন্যায্যমূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ ও বিলের পরিমাণ নির্ধারণ না করলে এই অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে না বলে মনে করেন নগরীর জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটি আহবায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান।
তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালের বিল বানানোর অজুহাতের শেষ নেই। দাম নির্ধারণ করে না দিলে এটা চলতেই থাকবে।
কোন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে বাড়তি টাকা নেয়ার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমাকে, সিভিল সার্জন বা ডিসিকে জানাতে পারে। তবে কেউ জানায় না। তাহলে ব্যবস্থা নেয়া যেত।