ডেস্কঃ
চট্টগ্রামে ইজারার নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকার মোহরা ৫নং ওয়ার্ডেস্থ কাজীর হাটে ইজারা আদায়ের নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। স্থানীয় দেলয়ার, লিয়াকত এবং স্ক্র্যাপ জসিমের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনার সংঘবদ্ধ একটি চক্র ২০১০ সাল থেকে ইজারা আদায়ের নামে জবরদস্তি চাঁদাবাজি করে আসছে। কয়েক যুগ ধরে কামালবাজার এবং কাজীর হাট নামের পাশাপাশি দুটি হাট-বাজার থাকলেও চাঁদাবাজদের কবলে পরে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাজীর হাটের কাঁচামাল তরিতরকারি ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক ইজারা আদায়ের পরিষ্কার নির্দেশনা থাকলেও ক্রতা-বিক্রতাদের সুবিধার্থে কোনদোকান থেকে কতটাকা ইজারা আদায় করা হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশে উদাসীন হাটের ডাক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সপ্তাহে শুক্রবার এবং মঙ্গলবার দুইদিনের কাজীর হাটকে এখন বাজার বসিয়ে প্রতিদিনই চাঁদা আদায় করছে এচক্রটি। হাট-বাজারের নিয়মানুযায়ী কোন দোকানে কি ধরনের পণ্য বিক্রয় করা হবে এবং বিক্রয় যোগ্য পণ্যের নির্দিষ্ট তালিকা প্রস্তুত করে স্থায়ীভাবে একটি চার্টের মাধ্যমে হাটের প্রবেশদ্বার সমূহে টাঙিয়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। যেন হাট-বাজার কর্তৃপক্ষ ইজারা আদায়ের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে না পারেন। তবে এসব তথ্য সম্পূর্ণরূপে গোপন করে ইজারার নামে খুচরা কাঁচামাল বিক্রতাদের কাছথেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। ২০০৮ সালে ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এসময় মহানগরের প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী সংগঠন। এদিকে সংঘবদ্ধ এ চক্রটি কৌশলে কাজীর হাট কমিটির লোকদেরকে হাতীর পাঁচ-পা দেখিয়ে ইজারা আদায়ের দায়ীত্ব পেয়েছে বলে সুত্র জানায়। এছাড়া কর্পোরেশনের দেয়া নির্ধারিত সীমানা ছাড়িয়ে প্রায় চারগুণ পরিসরে সীমানা বাড়িয়ে আরকান সড়কের উপর হাট-বাজার বসিয়ে নিয়মিত চাঁদাবাজি করছে এচক্রটি। জানা যায় কাজীর হাটের নির্ধারিত সীমানা দেওয়া হয়ে জানআলী স্টেশনের প্রবেশদ্বার থেকে পশ্চিমে আল-আমীন বিস্কুট এন্ড বেকারি কারখানা পর্যন্ত এবং সপ্তাহে দু’দিন শুক্রবার ও মঙ্গলবার হাট বসাতে পারবেন ডাক কর্তৃপক্ষ।
কিন্ত কর্তৃপক্ষীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়েও সড়কের জায়গা আরও চারগুণ পরিমাণ দখল করে চাঁদাবাজির পথ প্রশস্ত করে নিয়েছে চক্রটি। এতে আরও চারগুণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এছাড়া ২০১৫ সালে দিকে জানআলী স্টেশন হইতে প্রায় ১’শ গজ পশ্চিমে গিয়ে পল্টন বাড়ির সম্মুখে রেললাইন সংলগ্ন প্রায় ১৫ শতক জমি দখল করে কাজীর হাটটিকে নিয়মিত বাজারে পরিণত করেছে চক্রটি। এতে কাঁচামালের দোকান্দার থেকে প্রতিদিনই ৩৫০-৪৫০/- টাকা করে ইজারা আদায় করছে এচক্রটি। এদিকে রেললাইনের জমি দখল করে কাটা তারের বেড়া দেওয়ার সময় বাধা দেন কর্তব্যরত রেলকর্মচারি। এসময় তাকে মারধোর করে দ্বিগম্বর করে দেয় স্ক্র্যাপ জসিম তার দলের লোক। এব্যাপার রেলকর্তৃপক্ষের মামলায় কয়েক মাস জেল খেটে জামিনে মুক্ত হয় স্ক্র্যাপ জসিম। এছাড়া এই চক্রটির সাথে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেকের নামে বিভিন্ন থানা আদালতে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি এবং মারামারির এবং মাদকের মামলা রয়েছে বলে সূত্রে জানায়। সরেজমিনে দেখা যায় এবং কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে যে রাস্তার মাথা এলাকায় কাপ্তাই সড়কের পূর্ব-পশ্চিম পাড় এবং আরকান সড়কের উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ে ফুটপাতে কাঁচামালসহ প্রায় ৫শতাধিক দোকান রয়েছে। তাদের কাছথেকে প্রতিদিনই ইজারার নামে চাঁদাবাজি করছে এসংগঠনের লোকেরা। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এড়াতে দেশব্যাপী মানুষের জানমাল সুরক্ষায় সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত বজায় রেখে হাট-বাজারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেন সরকার। এরই ধারাবাহিতা অব্যাহত রেখে কাজীর হাটের সকল ভাসমান এবং অস্থায়ী কাঁচামাল ব্যবসায়ীদেরকে সিডিএ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে সরিয়ে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেয় সিএমপি কমিশনার। সরেজমিনে দেখা যায় স্কুলটির সীমানা প্রাচীরের ভীতর এবং বাহিরে প্রায় ৩’শটি দোকান বসানো হয়েছে। দেখা যায় ৬/৪ ফুট আয়তনের প্রতিটা দোকান থেকে দৈনিক ৩৫০ টাকা ইজারা ইজারা আদায় করছে এচক্রটি।
এবং ১২/৪ ফুট দোকান থেকে ৪৫০ টাকা ইজারা আদায় করা হচ্ছে। প্রতিটা ছোট দোকানে ৩০০ টাকা ইজারা এবং বড় দোকান থেকে ৪০০ টাকা ইজারা আদায় করা হচ্ছে। বাড়তি ৫০ টাকার মধ্য ঝাড়ুদার ২০টাকা, পুলিশের ২০ টাকা এবং পানির বিলের জন্য ১০ টাকা আদায় করা হয়েছে। তবে মে মাসের ২৮ তারিখে সিডিএ গার্লস স্কুলের মাঠ থেকে দোকানপাট গুলো সরিয়ে আবার পূর্বে সেই রেলওয়ের দখলিয় জায়গাজমিতে বসানো হয়েছে। এছাড়া হাটবারে ৫’শর অধিক দোকানপাটে সমাগম হয় কাজীর হাটে। সিডিএ গার্লস স্কুল হইতে জানআলী স্টেশনমুখ পর্যন্ত আনুমানিক ৫’শ গজের মধ্যে ১ হাজারটি ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে। এতে তরিতরকারি কাঁচাবাজার ছাড়াও ভ্যান গাড়িতে কাপড়চোপড়, পিয়াজ-রোশন, কসমেটিকস, ইলেকট্রিক ভাল্ব মুচির দোকানসহ হরেক রকমের দোকান দেখা যায়। এসব দোকান থেকে গড়ে দৈনিক ৩৫০ টাকা করে আদায় করা হলে ৩লক্ষ ৫০হাজার টাকা আদায় করা হয় যা বছর শেষে গিয়ে দাড়ায় ১৪ কোটি টাকা। অথচ এসকল খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছথেকে প্রতি লাই/টুকরি তরিতরকারি বাবদ ৮-১০ টাকা ইজারা নির্ধারণ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশন। অতিরিক্ত ইজারা আদায়ের প্রভাবে, বিক্রয় যোগ্য মালামাল চড়া দামে বিক্রি এবং ওজনে কম দেওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। চিহ্নিত চাঁদাবাজদের নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে ওই ব্যবসায়ীর উপর চালানো হয় পৈশাচিক নির্যাতন। এবিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা জানান যে, কাজী বাড়ির দেলোয়ার, ককুলাপাড়ার মূসার ছেলে স্ক্র্যাপ জসিম, বেলায়েত হোসেনের ছেলে লেয়াকত, টেন্ডল বাড়ির নাজের আলীর ছেল নূর মোহাম্মদ, কাজী বাড়ির হাফেজ মেম্বারের ছেলে দেলোয়ার, জানআলী স্টেশনের মৃত ইলিয়াসের পুত্র তানিম চক্রের অত্যাচারে অতিষ্ঠ কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত ইজারা আদায়ের ফলে সকল ব্যবসায়ীদের মাঝে