সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন হাজারী লেইন এলাকা হতে এক রিকসা চালককে লোহার শিকলে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের সংবাদ পেয়ে ঝটিকা অভিযানে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন চট্টগ্রাম রাউজানের ডাবুয়া এলাকার রনধির মল্লিকের ছেলে মনি মল্লিক (২২), কোতায়ালী থানার হাজারী বাড়ী এলাকার মৃত যুবরাজ সিংহ হাজারীর ছেলে
প্রান্ত সিংহ হাজারী (২২) ও রাউজানের ডাবুয়া এলাকার রনধীর মল্লিকের ছেলে রাজীব মল্লিক (৩০)।
কোতোয়ালী থানার অপারেশন অফিসার এরশাদুল হক জানান, চট্টগ্রামের সিনেমা প্যালেস এলাকায় জাহাঙ্গীরের চা দোকানে চা খাওয়ার সুবাদে মাস তিনেক পুর্বে মনি মল্লিকের সাথে তার পরিচয় হয় রিকশা চালক মোঃ ফারুক। পরিচয় পরবর্তী মনি মল্লিক বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফারুখকে সিনেমা প্যালেস এলাকায় ভ্যান গাড়ি করে মাছ বিক্রয় করতে বলে। একপর্যায়ে মনি মল্লিকের দেওয়া ১০ হাজার টাকার মাছ কিনে ব্যবসা শুরু করে রিকশা চালক ফারুখ।
মাছ বিক্রি শেষে পিতার কিডনিজনিত রোগের সংবাদ পেয়ে ফারুখ বাবলুর গ্যারেজে ভ্যান গাড়ি রেখে তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ চলে যায়। রিকশা চালক ফারুখ দীর্ঘদিন পিতার চিকিৎসায় জন্য গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করায় চট্টগ্রামে আসতে পারেনি।
পরবর্তীতে চলতি মাসের ২ তারিখ ফারুখ চট্টগ্রামে আসলে ৩ মার্চ রাত সাড়ে ৮ টার সময় মনি মল্লিক ও প্রান্ত সিংহ হাজারী তাকে পাওনা টাকার বিষয়ে সমাধান করবে বলে বাকলিয়া থানাধীন বাস্তুহারা এলাকা হতে হাজারী গলিতে নিয়ে আসে।
সেখানে আসার পর তারা ফারুককে ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে বলে সে তাদেরকে তার পিতার অসুস্থতার কথা জানায় এবং প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার টাকা করে পরিশোধ করবে বলে জানায়।
মনি মল্লিক ও প্রান্ত সিংহ হাজারী তাকে পুরো টাকা একসাথে দিতে বললে ফারুক সব টাকা একসাথে দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা তাকে ৩ মার্চ রাত অনুমান সাড়ে ৮ টায় কোতোয়ালী থানাধীন হাজারী লেইনস্থ শিব মন্দিরের পাশে গলির ভিতর রাস্তার উপর আটক করে রাখে।
ঘটনাস্থলে থাকা একটি বাঁশের সিঁড়ির সাথে থাকা শিকল দিয়ে দুই পায়ে বেঁধে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে রাজীব মল্লিক আসামাত্রই মনি মল্লিক ও প্রান্ত সিংহ হাজারী ফারুককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে পুরো টাকা না দিলে জানে মেরে ফেলার হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।
পরবর্তীতে ৯৯৯ প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে এএসআই রুবেল বড়ুয়া সঙ্গীয় ফোর্সসহ ৪ মার্চ সকাল ১০ টায় ঘটনাস্থল থেকে মুমূর্ষু ফারুককে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে এবং মনি মল্লিক, প্রান্ত সিংহ হাজারী ও রাজিব মল্লিকের আটক করে। রিকশা চালক ফারুক বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় কোতোয়ালী মামলা দায়ের করেন।
আটককৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।