রোববার সন্তান প্রসবের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন এমভি মানামী লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়। তাদের জন্য অনেকেই যেমন দোয়া করেছেন, তেমনি ঘটে যাওয়া কাজটি নিয়ে প্রশংসাও করেছেন।
জানা গেছে, ২ জুলাই ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে কেবিনে একা যাত্রা করেন ওই নারী। মধ্যরাতে প্রসব বেদনায় প্রথম শ্রেণির করিডোরে বসে পড়েন তিনি। বিষয়টি কেবিন ক্রুদের নজরে এলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এ সময় ক্রুরা আরেক যাত্রীর সহায়তায় প্রসূতিকে কেবিনে নেন।
এদিকে লঞ্চের সিনিয়র সুপারভাইজার শাহাদাত হোসেনের নির্দেশে পুরো লঞ্চে চিকিৎসক কিংবা প্রশিক্ষিত ধাত্রী খোঁজা হয়। এজন্য যাত্রীদের কেবিনের রেজিস্টার খাতা দেখার পাশাপাশি মাইকেও ঘোষণা দেয়া হয়। যেখানে একজন চিকিৎসক ও ধাত্রীকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সৌভাগ্যক্রমে ওই লঞ্চের যাত্রী ছিলেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মুহাম্মদ রেজাউল কবির ও মিডওয়াইফ (ধাত্রী) শিরিন। যারা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের আহবানে সাড়া দিয়ে মধ্যরাতেই প্রসূতি মায়ের পাশে দাঁড়ান। যদিও এরইমধ্যে মাত্র সাত মাসের প্রিম্যাচিউর নবজাতকের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এরপরও চিকিৎসক ও ধাত্রীর চেষ্টায় লঞ্চের কেবিনেই নিরাপদে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন সেই মা। আর এ কাজকে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদে শেষ করতে লঞ্চের কেবিন ক্রুসহ ৪০ জন স্টাফ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। এছাড়া কোনো প্রকার ভিড় কিংবা ছবি তোলা থেকে বিরত রাখতে কেবিন এরিয়ায় নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেন তারা।
সোমবার দুপুরে এমভি মানামী লঞ্চের সিনিয়র সুপারভাইজার শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই নারীর নিরাপত্তার খাতিরে রাতে সর্বোচ্চ গতিতে লঞ্চ চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে ৩ জুলাই ভোর ৩টা ১৭ মিনিটে বরিশাল ঘাটে লঞ্চটি পৌঁছায়। এছাড়া ওই নারীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগেই ঘাটে অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছিল। পরে লঞ্চ নোঙর করার পরপরই অপেক্ষমান পরিবারের কাছে মা ও নবজাতককে হস্তান্তর করা হয়।