1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
জয়পুরহাট পুলিশের ফ্রি‘অক্সিজেন ব্যাংক’প্রসংশায় ভাসছেন পুলিশ সুুপার-মাছুম আহাম্মদ ভূঞা
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন

জয়পুরহাট পুলিশের ফ্রি‘অক্সিজেন ব্যাংক’প্রসংশায় ভাসছেন পুলিশ সুুপার-মাছুম আহাম্মদ ভূঞা

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১, ১০.৫২ পিএম
  • ৩০২ বার পঠিত
জয়পুরহাট পুলিশের ফ্রি‘অক্সিজেন ব্যাংক’প্রসংশায় ভাসছেন পুলিশ সুুপার-মাছুম আহাম্মদ ভূঞা
নিরেন দাস,সূর্যোদয় প্রতিনিধিঃ-
সারা দেশের ন্যায় জয়পুরহাটেও দিন দিন বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাস (কোভিট-১৯) এর সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এমনকি থেমেও নেই রোগীদের মৃত্যুও সংখ্যা। করোনায় শনাক্ত বা উপসর্গ দেখা দেওয়া বেশির ভাগ রোগীদেরই হচ্ছে শ্বাসকষ্ট। আর এ শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীরা অক্সিজেনের অভাবে চরম বেকায়দায় পড়ছেন।
এমন দুঃসময়ে অক্সিজেন সংকটে বেকায়দায় পড়া শনাক্ত রোগী বা করোনা উপসর্গে ভুগতে থাকা মানুষের মাঝে জয়পুরহাট জেলা পুলিশের ফ্রি ‘অক্সিজেন ব্যাংক’ এর মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ এবং সেবা দিয়ে জেলা জুড়ে প্রসংশায় ভাসছেন জেলা পুলিশ সুুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা-পিপিএম।
এবিষয়ে জানাগেছে,করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অন্যতম অনুসঙ্গ হলো অক্সিজেন যা হাসপাতাল ছাড়া মিলছে না। কিন্তু হাসপাতালে গেলে সেখানে রয়েছে বেড সংকট। আবার অনেক রোগী আছেন যারা অক্সিজেনের সুবিধা পেলেই বাড়িতেই সুস্থ হতে পারবেন। তাদের জন্যই ফ্রি ‘অক্সিজেন ব্যাংক’ চালু করেছেন পুলিশ সুুপার মাছুম আহাম্মদ।
পুলিশের এই ফ্রি সেবাই মানবসেবার ব্রত নিয়ে পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় পুলিশই এ সেবার হাল ধরেছে যা জেলার যেকোনো এলাকায় যাদের অক্সিজেন প্রয়োজন তারা যেকোনো সময় তথা দিনরাত ২৪ ঘন্টায় ০১৭৩৭৫৯৯৬৬৬ নম্বরে একটি কল দিয়ে শুধু ঠিকানা জানালেই তাদের বাড়িতে ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
জয়পুরহাট জেলাটি ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায়। করোনার এই সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে জেলার অনেক অসহায়, দুস্থ মানুষেরা করোনাজনিত কারণে অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এ মানবিক সহায়তার কথা চিন্তা করেই গত ১৯ জুন জয়পুরহাটে ‘অক্সিজেন ব্যাংক’ ফ্রি সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়।
আরও জানা যায়,জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা-পিপিএম’র হাত ধরে ১৯ জুন শুরু করা হয় এই মানবসেবার যাত্রা। প্রথম দিন ৮ টি সিলিন্ডার নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এখন তা দাঁড়িয়েছে ৩২ টিতে। শুরুর মাত্র একরমাসের মধ্যেই পঞ্চাশোর্ধে করোনার উপসর্গ ও আক্রান্ত রোগীরা পেয়েছেন পুলিশের এই ফ্রি সেবা।
জয়পুরহাট পুলিশের এ ফ্রি সেবার বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাইকরতলী এলাকার অক্সিজেন সেবাগ্রহীতার ছেলে মনিরুজ্জামান বাপ্পি জানান,আমার মা অসুস্থ হওয়ার পর আমি “জয়পুরহাট পরিবার” নামে ফেইসবুক গ্রুপের মাধ্যমে পুলিশের অক্সিজেন সেবার নম্বরটি পাই। সেদিন রাত সাড়ে ৩ টার সময় আমি ওই নম্বরে কল করলে মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে তারা বৃষ্টির পানিতে ভিজে আমাদের বাড়িতে এসে অক্সিজেন দিয়ে যায়। অক্সিজেন লাগানোর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে আমার মা সঠিক মতো শ্বাস নিতে পারে।
সেবাগ্রহীতার স্বামী আব্দুল মতিন জানান, আমার স্ত্রীর গত ২৪ জুন থেকে জ্বরে আক্রান্ত। কয়েক দিন পর আবার ভালো যায়। ৩০ জুন রাতে আবার অসুস্থ হয় পরে তখন অক্সিমিটার দিয়ে মেপে দেখি তার অক্সিজেন ৮০-এর নিচে। একটু পর তাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে গেলে জ্বর কমে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় আসি। পরে রাত ৩ টায় আবার অসুস্থ হয়। তখন অক্সিজেনের জন্য পুলিশকে কল দিই। কল দেয়ার কিছুক্ষণ পরেই প্রচণ্ড বৃষ্টির পানিতে ভিজে অক্সিজেন নিয়ে আসে। পরে অক্সিজেন দিলে আমার স্ত্রী সুস্থ হয়। আমি আপনাদের মাধ্যমে (পুলিশ সুপার) স্যার ও সেবাদানকারী পুলিশ ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানাচ্ছি।
সেবাগ্রহীতা সাবেকুন নাহার রূপালী জানান,আমি করোনা রোগী ছিলাম, খুবই অসুস্থ হওয়ার পর আমাকে জয়পুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে কোনো অক্সিজেন পাইনি বা তারা কোনো ওষুধও দেয়নি। প্রাথমিকভাবে দেখে বের করে দেয়। সেখান থেকে বাসায় আসার পর আমার স্বামী ও ছেলে পুলিশের কাছে ফোন দিলে পুলিশ বাসায় এসে আমাকে অক্সিজেন দিয়ে যায়। এরপর আমি সুস্থ হই। আমি আল্লাহতালার কাছে দোয়া করি এসপি স্যারসহ তাহার পরিবারের সকলকেই যেন দীর্ঘ আয়ু দান করেন।
ফ্রি অক্সিজেন ব্যাংক সেবায় কর্মরত পুলিশ সদস্য ও জেলা পুলিশ হাসপাতালের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট আরিফুল ইসলাম জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয়কে জানান,পুলিশ সুপার স্যারের দিকনির্দেশনা জেলার যেকোনো এলাকা থেকে ফোন পাওয়া মাত্রই দিনরাত ২৪ ঘন্টায় আমরা রোগীদের বাসায় অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।আমাদের সেবাই শুধু অক্সিজেনই নয়, রোগীর ক্যানোলা পরীক্ষা, ইনজেকশন পুশ করাসহ রোগীদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, কয়েক দিন আগে সদর উপজেলার এক বাসা থেকে রাত ৩ টার দিকে ফোন পাওয়া পর সেখানে গিয়ে অক্সিজেন দিয়ে আসা হয়েছে। তখন থেকেই সেবাটি আমাদের পুলিশ সুপার স্যার চালু করেছেন। আমি একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের এই সেবা করতে পেরে আমি নিজে থেকেই ভীষণ আনন্দের সহিত গর্বিত বলে মনে করি।
প্রসংশায় ভাসা জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা-পিপিএম জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, জয়পুরহাট জেলাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ায়। করোনার এই সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে করোনাজনিত কারণে যারা শ্বাসকষ্টে ভুগছিল আমরা এমন অনেক অসহায়, দুস্থ মানুষের ফোন পাচ্ছিলাম। তখন ভাবলাম,আমরা মানবিক সহায়তা করতে পারি। এই চিন্তা থেকেই জয়পুরহাট জেলা পুলিশ গত ১৯ জুন থেকে এ অক্সিজেন সেবা কার্যক্রম চালু করি।
তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করছি, তা শুধু নয় অক্সিজেন প্রদানের পর পুলিশের দক্ষ একটি টিম ওই রোগীদের ফোন দিয়ে ঠিকমতো খোঁজখবর নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা যাদের অক্সিজেন প্রদান করেছি, তারা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে বলে তিনি বলেন আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ প্রধান হিসেবে এই করোনাকালীন সময়ে মানুষের সেবা দিতে পেরে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews