ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি-
ঠাকুরগাঁও সদরে প্রেমের জালে ফাসিয়ে ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে’ অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্র জারিফ কায়সার ওরফে বাপ্পি (১৯) এর বিরুদ্ধে। পরে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টার অভিযোগে জারিফসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান।
আটককৃতরা হলেন- সালন্দর ইউনিয়নের বরুনাগাঁও বিহারীপাড়া গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে জারিফ কায়সার ওরফে বাপ্পি (১৯), একই গ্রামের এরশাদ আলী ছেলে কুরবান আলী (৩২) ও শহরের টিকাপাড়া এলাকার মনতাজ আলীর ছেলে গোপাল (৩০)।
এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় গ্রেপ্তারসহ মামুন (৪১) ও বাবুকে (৩০) নামের আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বরাতে ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, “সদরের বরুনাগাঁও বিহারীপাড়া গ্রামে খালার বাড়িতে প্রায়েই ঘুরতে আসত ওই স্কুলছাত্রী। এখানে প্রতিবেশী বাপ্পীর সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রীর পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে বাপ্পীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
“সোমবার দুপুরে ওই স্কুলছাত্রী তার খালার বাড়িতে ঘুরতে আসে। এ সময় পরীক্ষার অ্যাসাইনম্যান্ট প্রস্তুত করার জন্য খালার বাড়ির পাশে এক বান্ধবীর বাড়িতে যায় স্কুলছাত্রী। সেখানে ওই বান্ধবীর মোবাইল ফোনে বাপ্পীর সঙ্গে তার কথা হয়।”
পরে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে স্কুলছাত্রীকে কৌঁশলে জারিফ কায়সার ওরফে বাপ্পি শহরের পূর্ব গোয়ালপাড়া এলাকায় তার ভাবি নুপুর আক্তারের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আবার মেয়েটিকে বাপ্পী ধর্ষণ করে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
ওসি বলেন, “বিষয়টি মিমাংসার জন্য প্রতিবেশী কুরবান আলী, গোলাপ, মামুন ও বাবু মিলে ওই স্কুলছাত্রী এবং বাপ্পীকে নিয়ে আক্চা ইউনিয়নে পল্টন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে মকবুলের গ্যারেজে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য স্কুলছাত্রীকে তারা চাপ প্রয়োগ করে। তবে বিষয়টি মিমাংসা করতে রাজি হয় নি স্কুলছাত্রীটি। মিমাংসা না হওয়ায় কৌশলে বাপ্পিকে সেখান থেকে সড়িয়ে দেয় তারা। পরে রাত ১১টার দিকে স্কুলছাত্রীকে সঙ্গে দিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায় কুরবান, গোলাপ, মামুন ও বাবু।
“পরে স্কুলছাত্রীকে বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনকে জানায়। এরপর স্থানীয় লোকজন কুরবান ও গোলাপকে আটক করে পুলিশের জরুরি নম্বর ৯৯৯- এ কল দিয়ে জানায়। এ সময় মামুন ও বাবু পালিয়ে যায়।”
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে কুরবান ও গোপালকে আটক করে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ১০টার দিকে মামলার ১ নম্বর আসামী জারিফ কায়সার ওরফে বাপ্পীকে শহরের শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান তানভিরুল।
পুলিশ জানায়, মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে।