ঢাকা জেলার আশুলিয়া পলাশবাড়ী এলাকার চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস দুরুল হোদা (৪২) হত্যাকান্ডের পলাতক আসামী মতিউর রহমান মতিন (২৫)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
রবিবার (১০ ডিসেম্বর ২০২৩)তারিখ র্যাব-৪ ও র্যাব-৫ এর যৌথ আভিযান পরিচালনা করে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানাধীন বালাহান্দা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নওগাঁ জেলার মতিউর রহমান মতিনকে গ্রেফতার করা হয়। আশুলিয়া থানার ধামসোনা ইউনিয়নের পলাশবাড়ী এলাকার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস দুরুল হোদা (৪২) হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী মতিউর রহমান মতিন ।
গত ২০ নভেম্বর ২০২৩ খ্রি. তারিখ ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার পলাশবাড়ি বাতানটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা হতে দুরুল হোদা (৪২) নামের জনৈক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের স্ত্রী খাতিজা (২৮) একই দিন দুপুর ০২.৩০ ঘটিকার সময় পোশাক কারখানা থেকে বাসায় ফিরে নিজের স্বামীর মরদেহ দেখতে পেলে তার আর্তনাদে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন এবং ঘরের ভিতর প্রবেশ করে দেখতে পায় যে, ভিকটিম দুরুল হোদার হাত-পা বাঁধা এবং মুখে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো নিথর দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে।
উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে বিষয়টি থানা পুলিশের পাশাপাশি র্যাবকে অবহিত করলে র্যাব-৪ এবং র্যাব-৫ এর আভিযানিক দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উক্ত হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে ছায়াতদন্ত শুরু করে।
র্যাব-৪ সিপিসি ২ এর কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খাঁন জানায়,গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম দুরুল হোদা (৪২) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার উত্তর ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্ত্রীসহ ঢাকা জেলার আশুলিয়া পলাশবাড়ির বাতানটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিনি একটি কীটনাশক কারখানার প্যাকিংম্যান হিসেবে কাজ করতেন এবং তার স্ত্রী আসামি খাতিজা খাতুন(২৮) স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। একই পোশাক কারখানায় চাকুরী করার সুবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মতিউর রহমান মতিনের সাথে ভিকটিমের স্ত্রী খাতিজা খাতুনের পরিচয় হয় এবং পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের মাঝে বিবাহ বর্হিভূত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে ভিকটিম দুরুল হোদা ও তার স্ত্রী মধ্যকার প্রায়শই তুমুল ঝগড়া-বিবাদ হতো।
পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী খাতিজা খাতুন ও ধৃত আসামীর যোগসাজশে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভিকটিমের স্ত্রী গত ১৯ নভেম্বর ২০২৩ খ্রি. রাতের খাবার শেষে ভিকটিম দুরুল হুদাকে তার নিয়মিত ঔষধের পাশাপাশি কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় যার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ভিকটিম অচেতন হয়ে পড়লে আসামী মতিউর ভিকটিমের বাসায় প্রবেশ করে। ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী ভিকটিমের স্ত্রী খাতিজা খাতুনসহ ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে ও মুখ পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং ভিকটিমের মুখমণ্ডল ও মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মেঝেতে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে ধৃত আসামী মতিউর রহমান ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে নওগাঁ জেলায় নিজ এলাকায় আত্মগোপন করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।