ঢাকা-১৮ আসনের উত্তরখান ও দক্ষিণখান ইউনিয়ন দুটি সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত হলেও ওয়ার্ডগুলোতে উন্নয়নের দৃশ্যমান ছোঁয়া লাগেনি। রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরা। অফিসগামী মানুষ, অসুস্থ রোগী ছাড়াও শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। সু-পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তায় পানি দীর্ঘক্ষণ জমে থাকার কারণে বর্ষাকালে অধিকাংশ রাস্তা মানুষ ও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠে। আজমপুর রেললাইন-উত্তরখান মাজার ও কসাইবাড়ি-দক্ষিণখান বাজার যাওয়ার রাস্তা বছরের অধিকাংশ সময় থাকে পানির নিচে। খানাখন্দ ভরা ভাঙা সড়কগুলো মানুষের চরম কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়ই নতুন নতুন দুর্ভোগ পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ৭টি (৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ড) ওয়ার্ডের পাড়া মহল্লার রাস্তাগুলো বিভিন্ন জায়গায় কার্পেটিং উঠে গিয়েছে, বেশিরভাগ কাঁচারাস্তায় ইটের সলিং ভেঙে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এই সমস্যাগুলোর মধ্যেই প্রতিদিন পথ চলতে হচ্ছে উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকার নতুন ৭টি ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের। পুলিশ ফাঁড়ি থেকে জয়নাল মার্কেট, গণকবরস্থান থেকে দক্ষিণখান থানা রোড, বাবুর্চী বাড়ি রোড, হলান অটোস্ট্যান্ড থেকে নর্দাপাড়া আশকোনা প্রাইমারি স্কুল, উচ্চারটেক মেডিক্যাল রোড, দক্ষিণখান থেকে নগইরাবাড়ী রোড, পণ্ডিতপাড়া থেকে সোনার খোলা, সিটি কমপ্লেক্স রোড, দক্ষিণখান বাজার থেকে মাজার রোড, মাস্টারপাড়া হতে বালু মাঠ, শাহ কবির মাজার থেকে দক্ষিণখান, চামুরখান থেকে উত্তরখান থানা রোড, দোবাইদা থেকে সাইনবোর্ড, আটিপাড়া থেকে রাজাবাড়ী, কাঁচকুড়া বাজার থেকে বাওথার, মুন্ডা মাউসাইদ, রাজাবাড়ি ও কাওলার সড়কগুলো একেবারেই বেহাল দশা। এছাড়াও অভ্যন্তীরণ রাস্তাগুলোর এতোটাই খারাপ অবস্থা পায়ে হেঁটে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।
দক্ষিণখানের স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ঢাকা-১৮ আসনে একাধিক ব্যক্তি এমপি নির্বাচিত হলেও এই এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমাদের এলাকা বরাবরই থেকেছে অবহেলিত। আমাদের দেখার কেউ নেই। তাই আমরা চাই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে এমন একজনকে এমপি নির্বাচিত করা হোক যিনি হবেন আমাদের উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকার বাসিন্দা। যিনি আমাদের দুঃখ-দুর্দশা বুঝবেন।
উত্তরখান এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন জানান, আমরা চাই রেল লাইনের পূর্ব পাশের কেউ এমপি হোক। তাহলে নিজের স্বার্থে হলেও উত্তরখান ও দক্ষিণখানের উন্নয়নে তিনি কাজ করবেন। কারণ এই আসনের প্রায় ৫৫ শতাংশ ভোটার রেল লাইনের পূর্ব পাশে বাস করে।
এদিকে, দক্ষিণখানের স্থায়ী বাসিন্দা খসরু চৌধুরী ঢাকা-১৮ আসন থেকে এমপি প্রার্থী হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, ক্লাব-চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনা তাকে ঘিরে। তিনি প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা উচ্ছ্বসিত। অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষ তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন। তাকে বিজয়ী করতে কাজ শুরু করেছেন আপন তাগিদে।
জানাগেছে ঢাকা-১৮ আসনের দক্ষিণখানে খসরু চৌধুরীর প্রতিষ্ঠিত কে সি হাসপাতালে প্রতিবছর লাখো রোগী স্বল্প খরচে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। দক্ষিণখানে তার প্রতিষ্ঠিত কে সি স্কুল এন্ড কলেজও ছড়িয়ে যাচ্ছে শিক্ষার আলো। কে সি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বছরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা-১৮ আসনের জনগণকে। তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মসংস্থান হচ্ছে লাখো মানুষের। অপরদিকে গরীব, দুস্থ, অভাবিদের দুহাতে দান করে যাচ্ছেন এই কর্মবীর। বহু ঘটনা এমন আছে যেখানে অভাবিরা এসেছেন তাঁর কাছে একটু সাহায্যের জন্য, কিন্তু খসরু চৌধুরী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে শুধু তাদের অভাবটুকু দূর করে দেননি, বরং বিভিন্নভাবে তাদের জীবনের উপায় ও স্বাবলম্বী করে দিয়েছেন।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে খসরু চৌধুরী ঢাকা-১৮ আসনে অসংখ্য রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেছেন পাকা রাস্তা, মেরামত ও সংস্কার করেছেন অনেক পুরনো সড়ক। নিজ অর্থ ব্যয়ে আশ্রয়হীন ও গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন তিনি।
খসরু চৌধুরী প্রসঙ্গে বৃহত্তর উত্তরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উত্তরখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিলন বলেন, দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে খসরু চৌধুরী ঢাকা-১৮ আসনের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডে তার প্রতিষ্ঠিত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান কে সি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিম্নআয়ের অসহায় মানুষ, কর্মহীন, বেকার জনগোষ্ঠী, ফুটপাত ও বস্তিতে থাকা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময়ে ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডে কে সি ফাউন্ডেশনের কর্মী বাহিনীদের নিয়ে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছেন। স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিটি শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে তিনি মাসব্যাপী আলোচনা সভা ও খাবার বিতরণের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রতি বছর শীতের সময় তার পক্ষ থেকে ঢাকা-১৮ আসনের সাতটি থানা ও ১৪টি ওয়ার্ডের হাজার হাজার পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। ঢাকা-১৮ আসনে যেখানেই মানুষ বিপদে পড়েছে সেখানেই পৌঁছেছে খসরু চৌধুরীর সহযোগিতা। নিজস্ব অর্থায়নে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল করে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। ঢাকা-১৮ আসনের দক্ষিণখান ও উত্তরাখানে তার মালিকানাধীন নিপা গ্রুপে ৩০ হাজারেরও অধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। খসরু চৌধুরী সিআইপি এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হবেন এটা নিশ্চিত করেই বলা চলে।
সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সালাউদ্দিন পিন্টু বলেন, ঢাকা-১৮ আসনের জনপ্রিয় নেতা খসরু চৌধুরী সিআইপি। তিনি জনবান্ধব, কর্মীবান্ধব, দলবান্ধব আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি সারাজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, নীতি-নৈতিকতার চর্চা করেছেন। অসহায় গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানো তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় স্মার্ট ঢাকা-১৮ আসন গড়তে ভোটাররা তাকেই বেছে নিবে বলে আশা করেন তিনি।
ঢাকা-১৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. খসরু চৌধুরী সিআইপি বলেন, ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডের মানুষ প্রতিনিয়ত জলাবদ্ধতা ও ড্রেনেজ সমস্যায় ভুগছে। আমার প্রথম কাজ হবে সর্বাধিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই সমস্যাটির সমাধান করা এবং সিটি করপোরেশনের সাথে সমন্বয়পূর্বক স্বল্পতম সময়ের মধ্যে টেকসই পরিবর্তন নিশ্চিত করা। জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য ড্রেনেজ পরিকল্পনার অবকাঠামোগত ও প্রকৌশলগত সমাধানের পাশাপাশি পরিকল্পনাগত ও ব্যবস্থাপনাগত সমাধানের কার্যকর ও টেকসই সমন্বয় নিশ্চিত করা হবে।