কাজী মোতাহার হোসেনে, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নাটোরে নিম্নমানের চাল জব্দের ঘটনায় খাদ্য গুদামের লোকাল সাপ্লাই ডিপোর (এলএসডি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজ উদ্দিনসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার নাটোর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল মতিন বাদী হয়ে মফিজ উদ্দিন, সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক মো. তরিকুল ইসলাম (৫২), নিরাপত্তা প্রহরী মো. তৈয়ব (৫৫) ও খাদ্য গুদামের চাল সরবরাহকারী মো. বেলালুজ্জামান বেলুসহ (৬০) আরও ১০/১২ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, নাটোর সদর এলএসডির ৬ নম্বর গোডাউনের প্রধান গেটের সামনে কতিপয় ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজশে চালে ভেজাল দিয়ে তা খাওয়ার অযোগ্য করে চালগুলো খাদ্য হিসেবে বিক্রি বা বিতরণ হবে মর্মে জানা সত্ত্বেও অনুরূপ ভেজালের মাধ্যমে সরকারি কিছু চাল গোডাউনে প্রবেশ করানো হচ্ছে বলে খাবর পান তিনি।
এরপর তিনি তা নাটোর থানার ওসিকে অবহিত করেন। পরে ওসির নির্দেশে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা যাচাইসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে তিনি ফোর্সসহ ওই দিন বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে যান।
ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা খাতুন, নাটোর জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্রলাল চাকমাসহ সংবাদকর্মীদের দেখতে পান।
সেসময় ইউএনও ও ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্রলাল চাকমা উপস্থিত প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষের সামনে প্রকাশ করেন যে চালগুলো নিম্নমানের। পরে ইউএনওর নির্দেশে নিম্নমানের চালসহ একটি ট্রাক ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্রলাল চাকমার জিম্মায় প্রদান করা হয়।
একই দিন ইউএনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বিষয়টি অবহিত করেন। যেহেতু তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি জ্ঞাত করেন, সেহেতু বাদী থানায় হাজির হয়ে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ্য করে নাটোর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এবং পরে জব্দ তালিকা ও জিম্মানামা একটি লিখিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে আদালতে পাঠান।
পরে গত ২৩ আগস্ট আদালত ১২ আগস্ট গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘সরকারি খাদ্য গুদামে “ট্রাকসহ ৫৯১ বস্তা নষ্ট চাল জব্দ”‘ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ, ১৩ আগস্ট গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘নাটোর খাদ্য গুদাম থেকে নিম্ন মানের চাল জব্দ, তদন্ত কমিটি’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ ও ২৩ আগস্ট প্রাপ্ত নাটোর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল মতিন কর্তৃক ১৩ আগস্টের সই করা ফরোয়ার্ডিংসহ সংযুক্ত জব্দ তালিকার মূল কপি,
নাটোর থানার জিডি, ১২ আগস্টের সত্যায়িত ছায়ালিপিসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে আমলযোগ্য অপরাধের সংঘটনের সুস্পষ্ট উপাদান বিদ্যমান রয়েছে মর্মে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়।
সেকারণে আদালত নিয়মিত মামলা দায়ের করে ২৫ আগস্ট আদালত চলাকালে লিখিতভাবে অবহিত করার জন্য নাটোর সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।