1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, ভ্রমনের জনপ্রিয় স্থান সাজেক ভ্যালি
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
চকরিয়ায় ইটভাটা গুলো গিলে খাচ্ছে পাহাড় ও বন রহস্যজনক কারণে নিরব প্রশাসন পাইকগাছায় ৩১৪কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ ও ৪২ কেজি কারেন্ট জাল জব্দ দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি -শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন গাজীপুরের কাশিমপুরে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার কুড়িগ্রামের উলিপুরে মহান বিজয় দিবস পালিত বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন সাভার পৌরসভা ৩ নং ওয়ার্ডে সবুজ স্বদেশ যুব সংঘের আয়োজনে আলোচনা সভায় মেয়র পদপ্রার্থী মোঃ খোরশেদ আলম রেডার ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন: সভাপতি লাভলু, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রতিবন্ধী নাগরিকদের সঙ্গে তারেক রহমানের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, ভ্রমনের জনপ্রিয় স্থান সাজেক ভ্যালি

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮.০৮ পিএম
  • ৪৫৩ বার পঠিত

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ : সাজেক শব্দটা মনে আসলেই প্রকৃতিপ্রেমীদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে মেঘময় এক পৃথিবী ছবি। এখানে ক্ষণে ক্ষণে প্রকৃতি তার রূপ বদলায়। কখনও তীব্র শীত আবার মুহূর্তেই বৃষ্টি। চোখের পলকেই চারপাশ ঘোমটা টানে সাদাকালো মেঘে। এ যেন মেঘের উপত্যকা, মেঘেদের রাজ্য আর নিজেকে মনে হয় মেঘের রাজ্যের বাসিন্দা। হয়তো মনের অজান্তেই খুঁজতে থাকবেন সাদা মেঘের পরী অথবা মেঘের মধ্যে পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়ে ছুটি চলা রাজপুত্রকে।

সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া কংলাক পাহাড়। চূড়ায় উঠতে উঠতে দেখতে পাবেন মিজোরাম সীমান্তের পাহাড় আর সবুজের মিতালী। কংলাকের চূড়ার উঠে চারপাশে তাকালে সত্যি সত্যি ভুলে যাবেন যে আপনি ছিলেন কোন যান্ত্রিক নগরে দূষিত বাতাস, শব্দ এবং কর্কট সমাজে জন্ম নেয়া মানুষ। আপনার মন,প্রাণ,দেহ পুলকিত হবে এক বিশুদ্ধ চিন্তা এবং অনুভূতিতে। প্রভাত এবং প্রাতঃবেলায় সূর্যদয় ও অস্ত দেখার সুখানুভূতি আপনি সারা জীবন মনে রাখবেন। এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে অকবিও হয়ে ওঠেন কবি, অপ্রেমিকও হয়ে ওঠে প্রেমিক, একজন সচেতনও অবচেতনে হয়ে ওঠেন উন্মাতাল। একজন বৃদ্ধও সবুজের সুরা পান করে হয়ে ওঠেন তেজদীপ্ত তরুণ।

নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর এবং জনপ্রিয় স্থান সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley) । বাংলাদেশের এই বৃহত্তম ইউনিয়নটি রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। এ ইউনিয়ন ভারতের ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তবর্তী এলাকা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ১৮০০ ফুট। এর অবস্থান রাঙ্গামটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি থেকে এখানে যাতায়াত অনেক সুবিধাজনক। কারণ, খাগড়াছড়ির দিঘীনালা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। তাই ভ্রমণ পিপাসুগণ দিঘীনালা থেকেই সাজেক যেতে বেশি পছন্দ করেন।সময় সুযোগ পেলে ঘুরে আসতে পারেন এ নৈসর্গিক উপত্যকায়। তবে সাজেক প্রকৃতির আসল রুপ দেখার জন্য সেরা সময় হচ্ছে বর্ষাকালের শেষদিকে এবং শীতকাল।

যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি রুটে শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, সৌদিয়া ও শান্তি পরিবহনের বাস চলাচল করে। গাবতলী, কলাবাগানসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে পরিবহণগুলোর কাউন্টার। ঢাকা থেকে বাস ছেড়ে চট্রগ্রাম রোড হয়ে কুমিল্লা, ফেনী পার হয়ে চট্রগ্রামের মিরসরাই হয়ে খাগড়াছড়ি শহরে পৌছায়। এতে সময় লাগে ৮ ঘণ্টার মত।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকে যেতে হবে খোলা জীপে করে। যা চান্দের গাড়ি নামেই পরিচিত। দুই দিনের জন্য ভাড়া করলে আপনাকে গুনতে হবে ৬৫০০-১০০০০ টাকা। চান্দের গাড়িতে আসন সংখ্যা ১২টি। সাজেক যেতে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে দীঘিনালায়। দীঘিনালা নেমে আধা ঘন্টার জন্য ঘুরে আসতে পারেন হাজাছড়া ঝর্ণা থেকে। সাথে সেরে নিতে পারেন গোসলটাও।

কারণ সাজেকে পানির বড্ড অভাব। তবে চিন্তার কিছু নেই গোসল ও অন্যান্য কাজের জন্য দরকারি পানি প্রতিদিন ট্রাকে করে পৌঁছে যায় সাজেকে।

তবে পানি ব্যবহারে সাজেকে আপনাকে মিতব্যয়ী হতে হবে। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালার দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। দীঘিনালায় একটি সেনানিবাস রয়েছে। এরপর বাকি রাস্তাটুকু আপনাকে যেতে হবে সামরিক বাহিনীর এসকোর্টে। সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনী এই পদক্ষেপ নিয়েছে। দীঘিনালা থেকে সেনাবাহিনীর এসকোর্ট শুরু হয় সকাল ১০ টা থেকে ১১টার মধ্যে। তাই ঐ সময়ের আগেই আপনাকে পৌঁছে যেতে হবে খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালায়। নইলে একবার সকালের এসকোর্ট মিস করলে আবার এসকোর্টে পেতে অপেক্ষা করতে হবে বিকেল অবধি।

দীঘিনালা থেকে প্রথমে যেতে বাগাইহাট, তারপর মাচালং হাট হয়ে সরাসরি পৌঁছে যাবেন সাজেকে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেক যেতে মোট সময় লাগবে প্রায় আড়াই ঘন্টার মত। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তাধরে চলা এই ছোট জার্নিটি সাজেক ট্যুরের অন্যতম আকর্ষণ। চারদিকে শুধু পাহাড় আর হরিতের সমারোহ আপনাকে ভুলিয়ে দেবে পথের ক্লান্তি।

সাজেক বিলাস করবেন যেভাবে : সাজেক পৌঁছে খাওয়া দাওয়া করার পর দীর্ঘ যাত্রার শেষে আপনাকে একটু বিশ্রাম নিতেই হবে। এছাড়া সাজেকের কাঠফাটা দুপুরের রোদে না ঘোরাঘুরি করে রোদ পড়ার অপেক্ষা করাই ভাল। বিকেলে জীপে করে আপনি ঘুরে আসতে পারেন সাজেক ভ্যালির আরও ভেতরে। সেখানে একটু উঁচু টিলায় উঠলেই উপভোগ করতে পারবেন সূর্যাস্ত। সাজেকের সন্ধ্যা নামে অপরূপ এক সৌন্দর্য নিয়ে। দেখবেন মেঘমুক্ত নীলাকাশ একটু একটু করে অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে আর মিটিমিটি করে জ্বলে উঠছে একটি দুটি করে তারা। দেখবেন অল্পকিছুক্ষণের মধ্যে একটি দুটি থেকে সহস্র তারা আপনার চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে উঠবে। হয়ত আপনি এরকম তারা ভরা আকাশ জীবনে কখনও দেখেন নি।

সন্ধ্যার তারাভরা আকাশ দেখতে দেখতে মৃদুমন্দ হাওয়ায় চায়ের কাপে চুমুক দিলে আপনার হৃদয়ে যে অনুভূতি আসবে সেটাই হতে পারে আপনার সাজেক ভ্রমণের সবচেয়ে বড় আনন্দ। যারা তারা দেখতে ভালবাসেন তাদের জন্য সাজেক খুবই আদর্শ একটি জায়গা। এমনকি যারা এখনও মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথ দেখেননি তারাও সাজেক ভ্যালিতে এসে জীবনে প্রথমবারের মত দেখা পেতে পারেন মহাবিশ্বে আমাদের আশ্রয়স্থল আকাশগঙ্গার।

ভোরে সূর্যোদয় দেখতে চাইলে হ্যালিপ্যাডে চলে যাবেন অবশ্যই। সেজন্য উঠতে হবে খুব ভোরে আর চলে যেতে হবে এক বা দুই নম্বর হ্যালিপ্যাডে। সাজেকে সূর্যোদয়ের সময় সোনালি আভা সাদা মেঘের উপর যখন ঠিকরে পড়ে তখন আসাধারণ এক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

কিছু বিষয় অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন :
•সঠিক সময়ে এসকর্ট দেয়া।
•সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের ছবি তোলা যাবে না।
•স্থানীয় লোকজনের ছবি তোলার আগে অবশ্যই অনুমতি নিয়ে নিবেন।
•ছুটির দিনে কটেজ পাওয়ার ঝামেলা এড়াতে বেশ কয়েক দিন আগে (এক মাস আগে) বুকিং দিয়ে নিন।
•রবি, এয়ারটেল বা টেলিটক সিম সঙ্গে নিন।
•সঙ্গে জাতীয় পরিচয় পত্র রাখুন।
•সঙ্গে করে পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যান।
•সাজেকে যাবার রাস্তা অনেকটা আঁকাবাঁকা এবং উঁচুনিচু। তাই জীপের ছাদে বা মোটর সাইকেলে সতর্ক থাকুন।
•দুই থেকে তিন দিনের জন্য সাজেক গেলে চান্দের গাড়ি রিজার্ভ নেয়ার দরকার নেই। সেক্ষেত্রে শুধু যাওয়ার জন্যই গাড়ি নিন। আসার সময় অন্য গাড়িতে আসুন অথবা দীঘিনালা থেকে ফোন করেও গাড়ি নেয়া যাবে।

সাজেকের পাশাপাশি যা যা ঘুরতে পারেন খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনা গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো; আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝর্ণা, দেবতার পুকুর, হর্টিকালচার পার্ক, তৈদুছড়া ঝর্ণা, বিডিআর স্মৃতিসৌধ, মায়াবিনী লেক, শান্তিপুর অরণ্য কুঠির ইত্যাদি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews