1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
নড়াইলের মানুষের কাছে ‘মধু বাবুল‘
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
চট্টগ্রামে ১৪ পিছ বিদেশী স্বর্নের বার সহ আটক ১ সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছেড়ে দিয়েছে আদালত আওয়ামীলিগের সময়ে আওয়ামীলিগের নেতা , বিএনপির সময়ে বিএনপির নেতা সেজে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা ! নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এলজিইডি কুমিল্লার মতবিনিময় কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ! সাভারে বিরুলিয়ায় নিহত নারী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা : স্বামী গ্রেফতার । ফেসবুকে মানহানিকর লেখা প্রচারের অভিযোগ এনে এক কোটি টাকার মানহানি এবং হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন এক নারী। চোর সদস্যকে পুলিশে দেয়ায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মাধবপুর ইউপি সদস্যের বাড়িতে পালতক চোরদের হামলা ও মারধর, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুরুতর আহত এক সাংবাদিক। জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২৮ এপ্রিল 

নড়াইলের মানুষের কাছে ‘মধু বাবুল‘

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১, ১২.৪৫ এএম
  • ২০৯ বার পঠিত
কাজী মোতাহার হোসেন
এলাকার মানুষের কাছে তিনি ‘মধু বাবুল‘ নামেই পরিচিত। তবে আসল নাম বাবুল শেখ (৪৫)। নড়াইল সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের বাবুল শেখ এখন একজন সফল মৌ-খামারি। বর্তমানে তার খামারে ৪০ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি মৌমাছি পালন করে প্রতিবছর গড়ে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করছেন।
বাবুল জানান, তার এ সাফল্য একদিনে আসেনি। কৃষিজীবী বাবার সামান্য জমিতে চাষাবাদের আয় দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলত। দশম শ্রেণিতে পড়াকালে অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যায় লেখাপড়া।  ২০০২ সালে সাতক্ষীরায় এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। সেখানে রোস্তম আলী নামে এক ব্যক্তির মৌমাছির খামার পরিদর্শন করে মৌচাষ সর্ম্পকে তথ্য ও জ্ঞানলাভ করেন। ২০০৩ সালে নড়াইল প্রশিকা অফিসে মৌ চাষের ওপর দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর বাড়ির কিছু গাছপালা বিক্রি করে ও ধার-কর্জ নিয়ে মৌ চাষে নেমে পড়েন। সাতক্ষীরার মৌ চাষি আইউব আলীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকায় অস্ট্রেলিয়ান ‘এপিস মেলিফেরা’ জাতের মৌমাছিসহ পাঁচটি মৌ-বাক্স কেনেন। নিজের প্রশিক্ষণ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এক বছরের মধ্যে ২৫টি মৌ-বাক্স তৈরি করেন।
তিনি আরো জানান, ২০০৪ সালে ২৫টি বাক্সসহ মধু আহরণে বেরিয়ে পড়েন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে বক্স পেতে সংগ্রহ করেন মধু। ওই বছরে দশ থেকে ১২ মণ মধু উৎপাদিত হয় তার। লাভ না হলেও তিনি দমে যাননি। পরের বছর মৌ পালনের নার্সারি করেন। বর্তমানে তার বাক্স ১০০টি। মধু উৎপাদনের মৌসুমে যশোর, রাজশাহী, খুলনার সুন্দরবন, ঢাকা, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে আস্তানা গাড়েন। ১০০টি মৌ-বক্সের মাধ্যমে প্রতি মৌসুমে ৫০ থেকে ৬০ মণ করে মধু আহরণ করেন।
কেবল মধু আহরণ নয়, তরুণ বেকারদের কথা মাথায় রেখে নিজ বাড়িতেই তিনি গড়ে তুলেছেন মৌ চাষের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তিনি প্রায় এক হাজার বেকার যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুবরা নিজেরাই খামার গড়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
বাবুল শেখ জানান, ছিদ্রযুক্ত কাঠের বাক্সে মৌমাছির খামার গড়ে তোলা হয়েছে। আকারভেদে প্রতিটি বাক্সে পাঁচ থেকে ১৫টি করে ফ্রেম থাকে এবং প্রতিটি ফ্রেমে প্রায় তিন হাজার করে মৌমাছি থাকে। মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহের পর এসব ফ্রেমের উভয় পাশে জমা করে। সাধারণত ছয় থেকে সাতদিন অন্তর মধু সংগ্রহ করা হয়। মৌমাছিরা সর্ষে, তিল, ধান ও ডাল জাতীয় ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকে। এছাড়া লিচুসহ বিভিন্ন ফুল থেকেও মধু সংগ্রহ করে। বছরে আটমাস মধু সংগ্রহ করা হয়।
তিনি দাবি করেন, বছরে দেড় হাজার টন মধু উৎপাদিত হচ্ছে। বছরের অন্য সময়ে মধু উৎপাদন না হলেও মৌমাছিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে খাবার হিসেবে চিনির পানি অথবা মধু দিতে হয়।
বাবুল শেখের কাছ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মৌ চাষি খয়ের মোল্লা জানান, দশ বছর আগে প্রশিকা অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সাকুল্যে ৪-৫ জন মৌ চাষ করতেন। এখন এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ শতাধিক। উন্নত জাতের অস্ট্রেলিয়ান মেলিফেরা প্রজাতির মৌমাছির ভ্রাম্যমাণ খামার গড়ে তুলেছেন সবাই।
খয়ের মোল্লা  আরো জানান, উৎপাদিত মধুর অধিকাংশই খুলনার দৌলতপুরে ‘গ্রিনল্যান্ড এন্টারপ্রাইজ’ ও খুলনার সেন্ট জোসেফ স্কুলের শিক্ষক মহিবুল আলম কিনে নেন। বর্তমানে প্রতি কেজি মধু ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খামার থেকেও কিছু মধু বিক্রি হয়। উৎপাদিত মধু সারাদেশে বাজারজাত করার জন্য বিএসটিআই-এর লাইসেন্স নিয়েছেন। কিন্তু অর্থাভাবে মধু প্রসেসিং প্লান্ট স্থাপন করতে না পারায় উৎপাদিত মধু সারাদেশে বাজারজাত করতে পারছেন না। সরকারিভাবে তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেওয়া হয় না। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতায় মধু উৎপাদন বৃদ্ধি, যথাযথ মূল্য নির্ধারণ ও বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করতে পারলে তারা আরো লাভবান হবেন জানিয়ে তার ভাষ্য, এতে টিকে থাকবে মৌ-খামারগুলো।
নড়াইল কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দিপককুমার রায় বলেন, ‘নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের বাবুল শেখ মৌখামার গড়ে তোলার আইডল। শুনেছি তার কাছ থেকে সহস্রাধিক শিক্ষিত যুবক প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে। নড়াইলে বছরে প্রায় তিন হাজার  হেক্টর জমিতে সর্ষে চাষ হয়। ফলে মধু আহরণ একটি লাভজনক পেশা হতে পারে।’ এ ব্যাপারে মধু আহরণকারীদের সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews