চট্টগ্রাম ২৮৯ পটিয়া-১২ সংসদীয় আসনর আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, আমি স্কুল জীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের কর্মী হিসেবে রাজনীতি করে যাচ্ছি। ধারাবাহিকভাবে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে এখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি। ইতিপূর্বে পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতার সাথে এলাকাবাসীর সেবা করেছি। পটিয়ার আপামর জনসাধারণের সাথে ছিলাম, আছি এবং যতদিন বেঁচে থাকি থাকবো। পটিয়ার আনাচে-কানাচে আমার বিচরণ। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকার কারণে এই পটিয়া সারাদেশ তথা বিশ্ববাসীর কাছে বিপ্লবের চারণভূমি হিসেবে পরিচিত। কিন্ত বিতর্কিত নেতৃত্বের কারণে বিপ্লব তীর্থ পটিয়ার হারানো গৌরব-মর্যাদা ফিরে আনতে, পরিবর্তনের লক্ষ্যে আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। উপজেলা পরিষদ নিবার্চনেও তিনি নৌকা প্রতীক দিয়ে পটিয়া উপজেলার উন্নয়ন ও জনগণের সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন আমাকে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ এবং উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে পটিয়াবাসীকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে পটিয়া কমিউনিটি সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
এসময় মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, দেশের সাহিত্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গণের উর্ভর ক্ষেত্র পটিয়ায় মরণনেশা ইয়াবা, নানা ধরণের মাদক, কিশোর গ্যাং, চাদাঁবাজ, ভূমিদস্যু, বিশেষ পরিবারতন্ত্রে প্রভাবিত এলাকায় পরিণত হয়ে আসছিল। আমি সুস্থ ধারার অহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও মাদকমুক্ত স্মার্ট পটিয়া গড়ার লক্ষ্যে নৌকা মার্কায় আপামর পটিয়াবাসীর ভোট চাই। আমি দলমত, জাতি ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।
আপনারা (সাংবাদিকেরা) আরও অবগত আছেন, গত ১৯ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব ও আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবির বিন আনোয়ার পটিয়া সফর করে গেছেন। তিনিও বীর পটিয়াবাসীকে বলে গেছেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটিয়ার মানুষের মনে কথা বুঝতে পেরে প্রার্থী পরিবর্তন করেছেন। এবার আপনাদের দায়িত্ব মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে বিজয়ী করা। এবার পরীক্ষা দেওয়ার পালা। এখন আপনাদেরই প্রমাণ করতে হবে নৌকা বিজয়ী হবে নাকি দূর্বৃত্তায়ন বিজয়ী হবে। নৌকা বিজয়ী হবে নাকি ইয়াবা ব্যবসায়ী বিজয়ী হবে। নৌকা বিজয়ী হবে নাকি সন্ত্রাস, মাদকের হোতা বিজয়ী হবে’।
তিনি আরো বলেন, জনবিচ্ছিন্ন নানা অপকর্মের হোতা স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী নিজের এবং স্বজনদের অপকর্মের কারণে এখন জনগণের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছেন, তাই তিনি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা অপপ্রচার শুরু করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত দুইদিন ধরে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি মনে করি বিচ্ছিন্ন কিছু হলেও তা হচ্ছে, ক্ষুব্ধ জনতার ক্ষোভের বহি:প্রকাশ। বিশেষ করে হাবিলাসদ্বীপ, পটিয়া বাইপাস, জিরি বাকখাইন, কাশিয়াইশের বুধপুরা বাজারে সংঘটিত ঘটনাগুলো ঘটেছে মূলত: ১২০০ কোটি টাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খনন প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তু মানুষের ক্ষতিপূরণের টাকাআত্মসাতের ক্ষোভ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থী অনেক মানুষকে পথে বসিয়েছেন। রাতারাতি মানুষের চাষের জমি, বসতভিটা গ্রাস করেছে। এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আপনারা সংবাদ প্রচার করেছেন। এছাড়া তার ভাই নবাব, মহব্বতসহ আত্মীয় স্বজনরা সন্ত্রাসী বাহিনি গঠন করে তাদের মাধ্যমে ভূমিদস্যুতা এবং অবৈধ বালি মহালের কারবার চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারের প্রতিটি উন্নয়ন কাজে কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে বিপুল অর্থ লোপাট করেছে। তার সাঙ্গপাঙ্গদের লুটপাটের কথোপকথন ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মোটকথা বিগত ১৫ বছরে পটিয়াকে পিছিয়ে দিয়েছে এই ডিগবাজ। যিনি এখন আওয়ামী লীগ তথা জাতির পিতার নৌকার বিরুদ্ধে হুংকার ছুড়ছেন, ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি বলেন, সামশুল হক চৌধুরী তার ১৫ বছর ধরে করা নানা অপকর্মের কারণে যেখানে যাচ্ছেন সেখানে জনরোষের শিকার হচ্ছেন। বিভিন্ন প্রকল্পে জনগণকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের অর্থ আত্মসাৎ করায় সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টা তিনি বুঝতে পেরে কৌশলে নিজের লোকদের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষতি করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আইয়ুব আলী, যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ দাশ, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.ক.ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক হারুনুর রশীদ, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডাক্তার তিমির বরণ চৌধুরী, পটিয়া পৌরসভা মেয়র আইয়ুব বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আমম টিপু সুলতান চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ ফারুক, সদস্য রাশেদ মনোয়ার, মোঃ নাছির উদ্দিন, মোজাহেরুল আলম চৌধুরী, চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ, গোলাম সরোয়ার চৌধুরী মুরাদ, জেলা আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহম্মদ, এ কে এম এ আব্দুল মতিন চৌধুরী, চৌধুরী মাহবুবুর রহমান, কাজী আবু তৈয়ব, আওয়ামীলীগ নেতা ঋষি বিশ্বাস, মুহাম্মদ ছৈয়দ, আলমগীর আলম, এম এন এ নাছির, শহীদুর আলী মঞ্জু, মোজাম্মেল হোসেন রাজধন, আলমগীর , জেলা যুবলীগ নেতা মতুর্জা কামাল মুন্সী, সাইফুল হাসান টিটু, রাজু দাশ হিরো, আব্দুল হান্নান চৌধুরী লিটন, নুর আলম ছিদ্দিকী, রফিকুল আলম, দিদারুল আলম, জহির উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম জুয়েল, পটিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন সাব্বির।