ইমাম হোসেন জীবন চট্টগ্রাম
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাযা বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাত ১১টায় হাটহাজারী দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি মহানগর নিউজকে নিশ্চিত করেছেন হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর প্রচার সম্পাদক আ.ন.ম. আহমাদুল্লাহ। মজলিশে এদানির এক জরুরি সভায় তার জানাযার বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর হাটহাজারী মাদ্রাসায় তাকে দাফন করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর সিএসসিআর হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সিএসসিআর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. এমজাদ হোসেন মহানগর নিউজকে বলেন, জুনায়েদ বাবুনগরীকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি এই হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা নিতেন। তিনি ডায়েবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
হাদিস শাস্ত্রের প্রবীণ শিক্ষক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার বাবুনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম মুহাম্মদ জুনায়েদ হলেও তিনি জুনায়েদ বাবুনগরী নামে দেশব্যাপী পরিচিত ছিলেন। তার পিতা আল্লামা আবুল হাসানও ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার তাফসির বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। তার মা ফাতেমা খাতুন বাবুনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হারুন বাবুনগরীর মেয়ে। হারুন বাবুনগরীর পিতা সুফি আজিজুর রহমান হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতাদের একজন।
বাড়ির পাশের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায় তিনি মক্তব, হেফজ ও প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। বাবুনগর মাদ্রাসায় হেফজ শেষ করার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি হাদিসে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য পাকিস্তান যান। ১৯৭৮ এর শেষের দিকে তিনি পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে ২২ বছর আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।
২০০৩ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করে আমৃত্যু ওই মাদ্রাসায় ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে আরবি, বাংলা ও উর্দু ভাষায় বেশ কিছু গ্রন্থও রচনা করেছেন।
পাঁচ মেয়ে এক ছেলে সন্তানের জনক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতে ইসলামের আমিরের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তার আগের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন।
সর্বশেষ গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে নাশকতার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তিনি অভিযুক্ত ছিলেন। এছাড়া ৫ মে শাপলা চত্বরে ঘটিত নাশকতা মামলাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় তিনি অভিযুক্ত ছিলেন।