পরে সবুজের ঘরে থাকা একটি খালি স্টিলের বড় ড্রামের মধ্যে হেকমতের মরদেহ হাত-পা বেঁধে ঢুকিয়ে স্টোর রুমের মধ্যে রেখে দেন। এরপর বাড়িতে আনা তিন বস্তা সিমেন্ট দিয়ে ড্রামটি ভর্তি করেন। একদিন পর ভোর ৬টার দিকে সবুজ মরদেহ রাখা ড্রামটি নসিমনে তুলে নিয়ে রূপগঞ্জের কুশাব এলাকায় একটি মাছের খামারে ফেলে দেন।
সোমবার বিকেলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রূপগঞ্জ উপজেলার কালাদি এলাকার হেকমত আলী হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিস্তারিত জানান নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এসপি এআরএম আলিফ।
এর আগে গত ৫ জুলাই রফিকুল ইসলাম সবুজ নারায়ণগঞ্জ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিহত হেকমত আলী আসামি রফিকুল ইসলাম সবুজের ছোট খালু। ঢাকা বংশালে হেকমত আলীর একটি মোটরসাইকেল পার্টস এর দোকান ছিলো। ওই দোকানে সবুজ বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিলেন। গত ৪ বছর আগে হেকমত আলী ভুলতা গাউছিয়া নূর ম্যানশনের নিচতলায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে মেসার্স হাসান এন্টারপ্রাইজ নাম দিয়ে মোটরসাইকেল পার্টস এর ব্যবসা শুরু করেন। এ দোকানে সবুজকে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেন।
হেকমত গত আড়াই বছর আগে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বড় করার জন্য মার্কেটের নিচতলায় ১৩ ও ১৪ নম্বর দোকান ভাড়া নেন। ওই দোকানে সবুজ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে লাভের ৪০ শতকরা অংশীদার হন। গত দুই বছর আগে ব্যবসার উন্নতি হতে থাকলে সবুজ তার খালু হেকতম আলীকে ব্যবসায়িক অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হওয়ায় সবুজ ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা তুলে খালুকে দেন। এরপর থেকে সমানভাবে পার্টনার হওয়ায় ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকেন। কিন্তু আগের মতো ব্যবসার লাভের ৬০ ভাগ হেকমত নিজে এবং ৪০ ভাগ সবুজ নেয়ার কথা বললে দুইজনের মধ্যে বিরোধ ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও সবুজের বাবা-মা’র ইচ্ছার বিরুদ্ধে হেকমত বিয়ের পাত্রী নির্বাচন করলে সবুজ ও তার পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। হেকমতের মেয়ে হাফসাকে সবুজের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তাব দেন। কিন্তু সবুজ বিয়েতে অস্বীকার করলে হেকমত সবুজের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যবসার হিসাব বুঝিয়ে দিতে তাকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর সূত্র ধরেই মূলত সবুজ তার খালু হেকমত আলীকে হত্যা করেন।
উল্লেখ্য তিন মাস পর গত ২ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জ উপজেলায় কেশাব এলাকার একটি মাছের খামারের পানির নিচে ড্রাম থেকে হেকমত আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত হেকমত আলী উপজেলা কালাদি এলাকার কদম আলীর ছেলে।