1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
ভুয়া করোনা টেস্ট, চিকিৎসার নামে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা বাণিজ্য রিজেন্ট হাসপাতালের
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি প্রনয়ন,বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস চাপায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণ জামিন নামঞ্জুর জেল হাজতে প্রেরন ফুলবাড়িতে যথাযথ মর্যাদায় সশস্ত্রবাহিনী দিবস উদযাপিত বাসে উঠাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ ছাত্রদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সাইন্সল্যাব এলাকা আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পেলেন বাহারুল আলম পুঠিয়ায় সাথী ক্লিনিককে ১০ হাজার জরিমানা, সাংবাদিকের হুমকি নড়াইলে মদ্যপানে ১স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু,আরও ১ জন হাসপাতালে ভর্তি রাজশাহীতে গোপনে মৃত ব্যাক্তির জমি বিক্রয়ের অভিযোগ

ভুয়া করোনা টেস্ট, চিকিৎসার নামে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা বাণিজ্য রিজেন্ট হাসপাতালের

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০২০, ৯.১৯ পিএম
  • ২১৪ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৪ সালে। অথচ এর ছয় বছর পরে এসে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গেই চুক্তি করেছিলো অনুমোদনহীন এই হাসপাতাল! শুধু তাই নয় অন্তত ছয় হাজার মানুষের নমুনা নিয়ে করোনা টেস্ট না করেই  ভুয়া পজিটিভ-নেগেটিভ রিপোর্ট দিয়ে  তিন কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে  রিজেন্ট হাসপাতাল। যার মূল হোতা খোদ এই হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ শাহেদ।

র‌্যাব  বলছে, করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করত রিজেন্ট হাসপাতাল।  সরকার থেকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করার অনুমতি নিলেও রিপোর্টপ্রতি সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা করে আদায় করত তারা। এভাবে জনগণের সাথে প্রতারণা করে  তিন কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে রিজেন্ট। অফিসে বসেই এই সমস্ত অপকর্মের ও প্রতারণা বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ করত হাসপাতালটির মালিক রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ। এমনকি করোনা মহামারির মধ্যে গাড়িতেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্টিকার লাগিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে এই শাহেদ। ইতিমধ্যে এই প্রতারণা বাণিজ্যের জন্য সিলগালা করে দেয়া হয়েছে রিজেন্টের উত্তরা ও মিরপুর হাসপাতাল। এর আগে ৬ জুলাই নানা প্রতারণার অভিযোগ আমলে নিয়ে ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। এদিন বেলা দুইটা থেকে র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে একটি দল প্রথমে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। সেখান থেকে আটজনকে আটকের পর র‍্যাবের দলটি মিরপুরে রিজেন্টের অন্য শাখায় অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান চলার সময় র‍্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তিন ধরনের অভিযোগ ও অপরাধের প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন। প্রথমত, তারা করোনার নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করত।  দ্বিতীয়ত, হাসপাতালটির সঙ্গে সরকারের চুক্তি ছিল ভর্তি রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার। সরকার এই ব্যয় বহন করবে। কিন্তু তারা রোগীপ্রতি  এক লক্ষ/ দুই লক্ষ , আড়াই লক্ষ টাকা বিল আদায় করেছে (এ সময় সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকর্মীদের বিলের নথি দেখান)। পাশাপাশি রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দিয়েছে—এই মর্মে সরকারের কাছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বেশি বিল জমা দেয়। সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল এ পর্যন্ত শ দুয়েক কোভিড রোগীর চিকিৎসা দিয়েছে।

সারোয়ার আলমের ব্রিফিং থেকে জানা যায়, রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তৃতীয় অপরাধ হলো সরকারের সঙ্গে চুক্তি ছিল ভর্তি রোগীদের তারা কোভিড পরীক্ষা করবে বিনা মূল্যে। কিন্তু তারা আইইডিসিআর, আইটিএইচ ও নিপসম থেকে ৪ হাজার ২০০ রোগীর বিনা মূল্যে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে এনেছে।

সারোয়ার আলম আরও জানান, অভিযানে দেখা গেছে, রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স ২০১৪ সালে শেষ হয়ে যায়। এরপর আর লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। তবে কীভাবে অনুমোদনহীন এমন একটি হাসপাতালকে কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘোষণা করা হলো সেই প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে? প্রশ্ন উঠেছে লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৪ সালে শেষ হওয়ার পরেও কেনো রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য সরকার চুক্তি করল?

এ বিষয়ে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, ২০১৪ সালে অর্থাৎ ৬ বছর আগে হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবুও তারা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে কীভাবে সনদ নিয়েছে বোধগম্য নয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

সারোয়ার আলম বলেন, সরকারিভাবে যে টেস্টগুলো ফ্রি করার কথা সেই টেস্টের জন্য রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাড়ে তিন হাজার  থেকে চার হাজার টাকা করে নিচ্ছে। সবচাইতে জঘন্য যে কাজ করেছে সেটা হলো টেস্ট না করে রিপোর্ট দেওয়া এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সিল ও প্যাড ব্যবহার করা। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসম) সহ যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্যাড ও সিল তারা ব্যবহার করেছে ওইসব প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে ওইসব সিল বা প্যাড তাদের নয়। এছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা চিকিৎসার নামে সরকারের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে আবার রোগীদের কাছ থেকেও মোটা অংকের বিল নিচ্ছে। হাসপাতাল থেকে  কোভিডের বিপুল পরিমাণ ভুয়া সনদ জব্দ করা হয়েছে।

রিজেন্টের অনিয়ম-অপরাধ ও প্রতারণা

অভিযানের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কয়েকটি অনিয়ম ও প্রতারণার প্রমাণ পেয়েছি আমরা। প্রথমত, করোনা টেস্টের জন্য আসা রোগীদের বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহ করার কথা ছিল রিজেন্টের। কিন্তু আমরা দেখলাম তারা প্রায় ১০ হাজার জনের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে, প্রত্যেকের কাছ থেকে তারা টাকা নিয়েছে। দ্বিতীয়ত, এসব নমুনার অর্ধেকের বেশি পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট দিয়েছে, যা সম্পূর্ণ প্রতারণা।

তিনি আরও বলেন, রিজেন্ট সরকারকে জানিয়েছে তারা কোভিড-রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছে। এই বলে তারা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ ক্লেইম করেছে। অথচ অনেক রোগীর কাছ থেকেও তারা দেড় লাখ-দুই লাখ, আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বিল আদায় করেছে বলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি।

সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্টকে কোভিড হাসপাতালের এই অনুমতি দেয়ার আগে শর্ত ছিল এখানে যারা ভর্তি হবেন, তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে ফ্রি অব কস্ট (বিনামূল্যে) পরীক্ষা করাবে। আর রিজেন্ট বাসায় বাসায় গিয়ে ১০ হাজারের বেশি নমুনা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ২৬৪ জনের নমুনা আইইডিসিআরসহ অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান থেকে টেস্ট করিয়েছে। বাকি নমুনাগুলো টেস্ট না করে ভুয়া রিপোর্ট করেছে। আমরা আইইডিসিআরে রিপোর্ট ক্রসচেক করে দেখেছি, রিজেন্ট এগুলো তাদের পাঠায়নি। ভুয়া রিপোর্টের জন্য  টাকা নিয়েছে। আমরা দেখলাম এ পর্যন্ত সে ৩ কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে। বিষয়গুলো চেয়ারম্যান নিজে ডিল করেছে, অন্যান্য কয়েকজন কর্মীও ছিল।

গত মার্চ মাসের শেষ দিকে উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়। সেখানে করোনা চিকিৎসার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। গত ২৩ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় এলাকার লোকজনের ওপর হামলা করে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিকের ভাড়া করা মাস্তান বাহিনী।

এলাকাবাসীর আপত্তির মুখে রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের অন্ত নেই। রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা নিয়ে নানা ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। রিজেন্ট হাসপাতাল আসলে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের নাম করে করোনা পরীক্ষার ভুয়া ফলাফল দিত। রিজেন্ট হাসপাতাল করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করলেও সেগুলো পরীক্ষা না করিয়েই মনগড়া রিপোর্ট দিতো বলেও ভুক্তভোগী লোকজন অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, হাসপাতাল পরিচালনার লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ বছর আগেই শেষ হয় রিজেন্টের। তারপরও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে করোনা চিকিৎসা দিতে থাকে তারা। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা চললেও রোগীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।

এছাড়া করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে কেবল হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করানোর কথা থাকলেও অনুমতি ছাড়াই বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতো রিজেন্ট হাসপাতালের এজেন্টরা।

আলম নামে এক ব্যক্তি জানান, ‘করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে তিনি পরীক্ষা করাতে চান। তার পরিবারেরও কয়েকজনের একই ধরনের উপসর্গ ছিল। রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে গত ২৭ জুন হাসপাতাল থেকে তারিক শিবলী নামে এক কর্মকর্তা আলমের বাসায় যান নমুনা সংগ্রহ করতে। ৬ জনের নমুনা নিয়ে ফি হিসেবে সাড়ে চার হাজার টাকা করে ২৭ হাজার টাকা নেন তিনি। কোন রশিদ না দিয়ে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে আসেন শিবলী। ২৯ জুন নমুনা পরীক্ষার ফল পান সাইফুল। ই-মেইল ঠিকানা থেকে যায় রিপোর্ট সেটি ছিল রাজধানীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিউটের (আইপিএইচ) প্যাডে। ইমেইলে নমুনা সংগ্রহের সাইট হিসেবে রিজেন্ট হাসপাতাল ও রেফার্ড বাই রিজেন্ট হাসপাতাল লেখা ছিল। নমুনা পরীক্ষায় ৬ জনের মধ্যে দু’জন পজিটিভ ও ৪ জন নেগেটিভ আসে। রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ জানালে ৩ জুলাই ফের তাদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া হয়। এবার তাদের নমুনা পরীক্ষার ফল আসে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) ওয়েবসাইটে।

তবে এবার আলমের পরিবারে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৪ জন পজিটিভ ও ২ জন নেগেটিভ। আগের বারের ৪ জনেরই রিপোর্টে নেগেটিভ ছিলো। শুধু তাই নয়, নিপসমে এই ৬ জনের নমুনা সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই দেখানো হলেও ওই দিন আলম বা তার পরিবারের কারও কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।

অপরাধ ধামাচাপা দিতে রিজেন্টের অভিনব কৌশল

গত কয়েকদিন ধরে এই অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসতে থাকলে নিজেদের অপরাধ ঢাকতে নতুন কৌশল নেয় রিজেন্ট। অভিনব এই কৌশলের বিষয়ে সারোয়ার আলম বলেন, যখন আমরা বিভিন্নজনের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাচ্ছিলাম তখন রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ এটাকে গোপন করার জন্য একটা প্রেস কনফারেন্স করে। সেখানে তারা বলে, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসবের জন্য দায়ী না। রিজেন্ট হাসপাতালের ৩ জন কর্মী এর সঙ্গে জড়িত।’

সারোয়ার আলম বলেন, নিজেদের নিরপরাধ প্রমাণ করতে ৫ জুলাই রোববার ১ মাস ৭ দিন আগের ব্যাকডেট দিয়ে ৩ কর্মচারীকে বরখাস্ত করে রিজেন্ট। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটা সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছে রিজেন্ট। অথচ আমরা দেখলাম ওই ৩ কর্মী গত দেড়মাস অফিস করেছে, হাজিরা দিয়েছে। রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ ফ্লুইড দিয়ে তাদের হাজিরা খাতার স্বাক্ষরগুলো মুছে দিয়েছে, যাতে সে প্রমাণ করতে পারে যে আগেই তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। শুধু তাই না, রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ এই ৩ কর্মচারীকে বলেছে যে, ‘আপনারা চাকরি করেন কোনো সমস্যা নেই, আমরা আপনাদের আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসব।’ তার মানে কর্তৃপক্ষ স্টাফদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করার চেষ্টা করেছে। এই সমস্ত অপরাধ ও টাকার নিয়ন্ত্রণ চেয়ারম্যান নিজে করত।

এই ঘটনা বিশ্বে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করেছে

ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ এই ইতিহাস তৈরি করেছে বলে আমার জানা নেই। আমার ধারণা একমাত্র বাংলাদেশেই এই সমস্ত কিছু লোক টেস্টের নামে আমাদের দেশকে কলঙ্কিত করেছে। আমরা আশা করছি এই অপরাধের কারণে তাদের মারাত্মক শাস্তি হবে। আমরা চাই না এই কোভিড-১৯ নিয়ে কেউ কোনো প্রতারণার আশ্রয় নিক। এ অপরাধের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শাহেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদসহ বেশকিছু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। এ কারণে আমরা ৮ জনকে আটক করেছি। তাদেরসহ জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নিয়মিত ধারায় মামলা করা হবে। তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।

সপ্তাহ কয়েক আগে জেকেজি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও পরীক্ষা না করে প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম কর্নধার আরিফুল চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তাঁর স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জেকেজির কার্যক্রম দেখতে গেছেন, সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল মুখে সাবরিনা আরিফ চৌধুরী এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।জেকেজি কী করে নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন পেল, সে সম্পর্কেও অধিদপ্তর মুখ খোলেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews