আনোয়ার হোসেন আন্নু: ভয়াভহ বন্যার পানিতে সাভার, আশুলিয়া ও ঢাকার ধামরাইয়ের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, তলিয়ে গেছে আঞ্চলিক সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে গার্মেন্টস শ্রমিকসহ কয়েক লাখ বানভাসি মানুষ। বাড়িঘর বন্যার পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
বানভাসি মানুষরা জানান, বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় অনেক কষ্টে আছেন তারা। কিন্তু এত কঠিন দুর্ভোগের মধ্যেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ত্রাণ বা সাহায্য পৌঁছায়নি তাদের কাছে। যার ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বানভাসি মানুষরা
সাভার-আশুলিয়া-ধামরাইয়ের (ঢাকা বিভাগ-২) পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বরত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাহাত রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরেই তুরাগ নদী, ধলেশ্বরী নদী ও বংশী নদীর পানি বাড়ছে। তুরাগ নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে বংশী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া খাল-বিল ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাভারে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, রাস্তা-ঘাট, বসতবাড়ি, বাজার, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি, মাছের ঘের ও পুকুরসহ বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সাভার পৌরসভার ও সাভার উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের গ্রাম ঘুরে বন্যায় পানিবন্দীদের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। পানিতে যাদের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে, তারা কোনোমতে জীবনযাপন করছেন।
এছাড়া শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও শ্রমিক কলোনিসহ রাস্তাঘাটে কলকারখানার বর্জ্য মিশ্রিত বিষাক্ত পানিতে চলাচল করতে গিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ।
সাভার পোড়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম বলেন, ২২ বছর পর এবার বন্যার পানি দেখা দিয়েছে। কিন্তু এলাকার কেউ এক কেজি চাল দিলো না। আমার নাক ফুল বিক্রি করে চাল কিনে এনেছি।
সাভার পৌরসভার আওয়ামী লীগ নেতা রমজান আহম্মেদ বলেন, ‘বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘরের ভেতরে হাঁটু পানি। ছোট বাচ্চাকে বাড়িতে রেখে কারখানায় যেতে হয়। পানি আরেকটু বৃদ্ধি পেলে পড়তে হবে মহাবিপদে। তখন বাচ্চাকেই দেখবে কে? আর থাকবোই বা কোথায়।’