রেখা মনি ,নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিম্মআয়ের একটি পরিবারের উপর হামলার পর উল্টো বাদীপক্ষকে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় আবারও গংগাচড়া থানায় -১৫/৮/২১ তারিখে একটি জিডি করেছে বাদীপক্ষ যাহার মামলা নং -১০২৬।
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নিম্মআয়ের পরিবারের উপর অমানবিক হামলা ও নগদ অর্থ লুটের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় গত ২২/৬/২১তারিখে থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার যাহার মামলা নং-২৫/১৩৯।
এদিকে মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেই আসামী পক্ষ আপসের কথা বলে কৌশলে জামিনে বের হয়ে “বিজ্ঞ সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গংগাচড়া আমলী আদালতে -মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ২টি মামলা দায়ের করেন কিন্তু ২টির মধ্যে ১টি মামলার নতি পাওয়া যায়,যাহার সিআর নং ১২১/২১।
সরজমিনে অনুসন্ধান গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায় যে, রংপুরের আলোচিত ঘটনা পাগলাপীর এর ঠাকুর পল্লীগ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলার ঘটনার জরিত আসামিদের আবাসস্থল ও নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত-শিবিরের অবাধ বিচরণের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
উলেক্ষ্য যে,গত২০১৮সালের ১০ নভেম্বর ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে কয়েক হাজার মানুষ রংপুর সদর-গংগাচড়ার সিমান্তবর্তি ঠাকুরপাড়ায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে নয়টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত ও পুলিশের সাত সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি ও গঙ্গাচড়া থানায় আরেকটি মামলা করে এবং এর মধ্যেই বেশিরভাগ আসামী ছিলেন জুম্মারপাড় এলাকার।দুটি মামলায় ১৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও দুই হাজারের অধিক লোককে আসামি করা হয়।যার বেশিরভাগ আসামী জুম্মারপাড় আলমবিদিতরের।
গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের জু্ম্মাপাড় এলাকার- দাদন ব্যবসায়ী আনহার গংগের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল একই এলাকার রায়হান ইসলামের।
এরই জের ধরে গত রোববার (২০ জুন) বিকেলে দেশীয় লাঠি, সোডা, রড হাতে বাসা বাড়িতে জোরপূর্বক ঢুকে আনাহার, ফারুক, গোলজার, কামাল ও আমজানুরসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন হামলা চালায়। এসময় রায়হানের মা মোরশেদা বেগম ও ছোটবোন কামরুন্নাহার, ভাবী সম্পা বেগম, স্ত্রী সুমাইয়া ও ছোটভাই বোরহান শাহ নয়ন তাদেরকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন।
এতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে আনাহারের লোকজন বাড়িতে ভাংচুর করে অকাথ্য ভাষায় গালাগালি ও শ্লীলতাহানি করে। একপর্যায়ে তারা বোরহান ও তার মাকে মারধর করে জখম করে। বাড়িতে ভাংচুর ও মারধর করার সময়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে,জমির ধান বিক্রির নগদ ৫০ হাজার টাকা, রায়হানের স্ত্রীর ৭.৫আনা ৩২ হাজার টাকা মূল্যের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছুড়ে নিয়ে যায়।
ওই ঘটনায় প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে দাবি রায়হান ইসলামের। ঘটনার দিন মধ্যরাতেই গুরুতর আহত অবস্থায় বোরহান ও তার মাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলার ওই ঘটনায় সোমবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় গঙ্গাচড়া মডেল থানায় রায়হান ইসলাম বাদী হয়ে আনাহার মিয়াকে প্রধান আসামী করে আটজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা নং-২৫/১৩৯ দায়ের করেন। বাকি আসামীরা হলেন- ফারুক মিয়া (২৮), গােলজার হোসেন (৪৫), কালাম মিয়া (৬২), আমজানুর মিয়া (২৬), মোমেনা বেগম (২৫), শারমিন বেগম (২৭), কাওসার মিয়া (৩৫)।এঘটনায় ১জন কে গ্রেফতার করেছে গংগাচড়া থানা পুলিশ।
তবে অদৃশ্য কারন ও কালক্ষেপণ করে বাকি আসামিদের গ্রেফতার না করায়,আসামিরা জামিনে বেরিয়ে বাদী পক্ষ কে হত্যার হুমকি দিচ্ছে ফলে, জীবনের নিরাপত্তা বোধ করে
আবারো গংগাচড়া থানায় ১৫/৮/২১ তারিখে একটি জিডি(জিডি নং১০২৬) করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
সম্প্রতি স্থানীয় চেয়ারম্যান আফতাবুজ্জামান আফতাবের মাধ্যমে তদবির করে জোরপূর্বক
আসামীরা সকলেই আপসের কথা বলে কৌশলে বাদীকে দিয়ে কোর্টে জামিন নেন। পরে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে বাদীপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে আনহার গং।
আসামী আমেনা খাতুন আনহার গং কৌশলে “বিজ্ঞ সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গংগাচড়া আমলী আদালতে -মিথ্যা ও ভিত্তিহীন একটি মামলা দায়ের করেন,যাহার সিআর নং ১২১/২১ এবং গঙ্গাচড়া থানার কর্মকর্তা কে মামলাটির তদন্ত সহ ৯/৯/২১ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে উক্ত মামলার তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে আসামীদের দেয়া উল্টো মামলায় হামলার স্বীকার রায়হানের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দ্রুত প্রশাসনের কাছে বিচার দাবী করেছেন পরিবারটি।
Leave a Reply