রোস্তম আলী: রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুর বিভাগের ঊনিশটি উপজেলা ও ১৫১টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে তৃতীয় ধাপে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (২৮ নভেম্বর) বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে। একই দিনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন রংপুরের পীরগঞ্জ পৌরসভা ও নীলফামারী পৌরসভার ভোটাররা।
এ নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তৃতীয় ধাপে রংপুর বিভাগে ৫টি ইউনিয়নে ইভিএমে এবং বাকি ১৪৬টিতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার বিকেলের মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সকল সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যরা। রংপুর আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশন সূত্র জানায়, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর সাত ও পীরগঞ্জ উপজেলার দশটিসহ ১৭ ইউপির ১৫৪টি ভোটকেন্দ্রে, পঞ্চগড় সদর উপজেলার দশ ও আটোয়ারীর চারটিসহ মোট ১৪টি ইউনিয়নের ১২৬টি ভোটকেন্দ্রে, গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর পাঁচটি ও সুন্দরগঞ্জের তেরটিসহ ১৮ ইউপির ১৭৪টি এবং নীলফামারীর জলঢাকাতে এগারো ও কিশোরগঞ্জের আটটিসহ ১৯টি ইউপির ১৮০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়া দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে নয়, বিরামপুরের ছয় ও ফুলবাড়ীর সাতটি ইউপির ২০০টি ভোটকেন্দ্রে, লালমনিরহাট সদরে নয় ও কালীগঞ্জের আটসহ ১৭ ইউপির ১৭৫টি কেন্দ্রে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার আট, ফুলবাড়ীর ছয় ও নাগেশ্বরীর বারোটিসহ মোট ২৬টি ইউনিয়নের ২৮৩টি ভোটকেন্দ্রে এবং রংপুর সদরের দুই, তারাগঞ্জের পাঁচ ও কাউনিয়া উপজেলার ছয়টি ইউপির মোট ১৪১টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে ১৫১টি ইউপিতে এক হাজার ৪৭৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, নয় হাজার ৫১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং আঠারো হাজার ১০২ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নীলফামারী ও পীরগঞ্জ পৌরসভায় ২৫ জন প্রিজাইডিং, ১৬৬ সহকারী প্রিজাইডিং এবং ৩৩২ জন পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এদিকে রংপুরে তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি, ইকরচালী, আলমপুর, সয়ার ও কুর্শা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩০, সংরক্ষিত আসনে নারী সদস্য পদে ৭১ ও সাধারণ সদস্য পদে ১৭৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পাঁচ, জাতীয় পার্টির এক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পাঁচ, জাসদের এক ও স্বতন্ত্র ১৮ প্রার্থী রয়েছেন। কাউনিয়া উপজেলায় ছয় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছয়জন করে, জাতীয় পার্টির দুই এবং স্বতন্ত্র ১৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭৭ এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ও মমিনপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১০, সংরক্ষিত নারী সদস্য ২৪ এবং সাধারণ সদস্য পদে ৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া পীরগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে ৩, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ১১ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম মাহাতাব উদ্দিন জানান, রংপুর বিভাগের ১৫১টি ইউনিয়নের মধ্যে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, দিনাজপুরের বিরামপুর, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এবং গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে একটি করে ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। এছাড়া বাকি ১৪৬টি ইউপিতে ব্যালট পেপারে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই দফায় ৫১৫টি ইউনিয়নে ৮২২ জন চেয়ারম্যান, এক হাজার ৯৯৫ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য এবং সাধারণ সদস্য পদে পাঁচ হাজার ৩৭৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ৩০ লাখ ৮২ হাজার ৮৩০ ভোটার রয়েছেন বলেও তিনি জানান। এদিন নীলফামারী পৌরসভা ও রংপুরের পীরগঞ্জ পৌরসভায়ও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ দুটি পৌরসভায় মেয়র পদে ৬ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ৩৩ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯১ জন প্রার্থী বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য এবং ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্র ছাড়াও নির্বাচনী এলাকাগুলোতে বিজিবি, পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া মোবাইল টিম এলাকায় টহল দিচ্ছে এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।