1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
রাজধানীর আন্তঃ জেলা গাড়ি চোরচক্রের মূলহোতাসহ ০৫ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সাভারে পাওনা টাকার জন্য বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে হত্যামামলার আসামী রনি গ্রেপ্তার কাশিমপুরে জমি বিরোধ ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন কেশবপুরে সেই অবৈধ ইটভাটা রোমান ব্রিকসটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন নবাবগঞ্জে শ্রমীকলীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি খালের মাটি লুটের অভিযোগ ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি প্রনয়ন,বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস চাপায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণ জামিন নামঞ্জুর জেল হাজতে প্রেরন ফুলবাড়িতে যথাযথ মর্যাদায় সশস্ত্রবাহিনী দিবস উদযাপিত বাসে উঠাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ ছাত্রদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সাইন্সল্যাব এলাকা

রাজধানীর আন্তঃ জেলা গাড়ি চোরচক্রের মূলহোতাসহ ০৫ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১, ১১.০২ পিএম
  • ২৬৬ বার পঠিত

রাজধানীর আন্তঃ জেলা গাড়ি চোরচক্রের মূলহোতাসহ ০৫ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪

আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি,
র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।

সম্প্রতি র‌্যাব-৪ এর কাছে গাড়ি চুরির বেশ কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তকালে কয়েকজনের সংঘবদ্ধ একটি গাড়ি চোরচক্রের সন্ধান পায়। এই চক্রকে গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব-৪ কাজ করে যাচ্ছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ঢাকা মহানগরীতে বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, ধোলাইখাল এলাকায় এবং ঢাকার আশেপাশে গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় একটি গাড়ি চোর চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ গাড়ি চুরি করে, গাড়ির কালার, বডি ও নাম্বার প্লেট পরিবর্তন করে কম মুল্যে চোরাইপথে বিক্রি করে আসছে। র‌্যাব-৪ উক্ত চোরাকারবারীদের গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে ছায়াতদন্ত, স্থানীয় সোর্সের সহায়তায় দীর্ঘদিন অনুসরণ করে অবশেষে গতরাতে জানা যায় রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন বেরিবাধ এলাকায় সংঘবদ্ধ গাড়ি চোরচক্রের সদস্যরা গাড়ি চুরি ও চোরাইকৃত গাড়ি অবৈধ বিক্রির উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ১১ আগস্ট ২০২১ ইং তারিখ রাত ৩.৩০ ঘটিকা হতে দুপুর ১২.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন বেরিবাধ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোরাইকৃত ০৪ টি পিকআপ, ০৭ টি টায়ার রিং, ০২ টি টায়ার,০১ টি টুল্স বক্স, ০১ টি চাবির ছড়া ও ০৭ টি মোবাইলসহ সংঘবদ্ধ আন্তঃ জেলা গাড়ি চোরচক্রের নিম্নোক্ত ০৫ জন সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ

(ক) মোঃ সোহেল (২৬), জেলা- নারায়নগঞ্জ।
(খ) মোঃ সাগর (২৩), জেলা- নারায়নগঞ্জ।
(গ) মোঃ সাকিব হোসেন (২৫), জেলা- কুমিল্লা ।
(ঘ) মোঃ হাসান (২৬), জেলা- নারায়নগঞ্জ।
(ঙ) মোঃ কামরুজ্জামান (৩৯), জেলা- নারায়নগঞ্জ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা পরষ্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে পিকআপসহ বিভিন্ন প্রকার গাড়ি চুরির ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, তারা সংঘবদ্ধ আন্তজেলা চোরাকারবারী চক্রের সাথেও জড়িত। ধৃত দুধর্ষ চক্রটি পরস্পর যোগসাজোশে গত ৩ বছর ধরে রাজধানী ঢাকার ধোলাইখাল, যাত্রাবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিনি পিকআপ গাড়ি চুরি করে।

গ্রেফতারকৃত সোহেল ও সাগর ঢাকার একটি হাইস্কুল ও নারায়নগঞ্জের একটি কলেজে পড়াশোনা করতো। তারা সম্পর্কে আপন ভাই। সোহেল পেশায় একজন ড্রাইভার। তারা উভয়েই মাদকাসক্ত। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ও মাদকের টাকা জোগাড় করতেই গাড়ি চুরি শুরু করে তারা। বিশেষ করে সোহেলের গাড়ি চালানোর দক্ষতা থাকায় পিকআপ গাড়িগুলোর লক ভাঙা ও যেকোনো চাবি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করার বিষয়টি তার নখদর্পনে। এছাড়া গাড়িতে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইস দ্রুত সনাক্ত করে অকেজো করে দিতে সিদ্ধহস্ত সাগর। তাদের বাবা ভাড়ায় চালিত গাড়ির ড্রাইভার। তারা ২০২০ সালে গাড়ি চুরি মামলায় কুমিল্লায় জেলে ছিলো। সেখানে থাকা অবস্থায় তাদের সাথে মাদক মামলার গ্রেফতারকৃত এক আসামী সাকিবের সাথে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে একটা বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং সাকিবকেও তারা গাড়ি চুরি করতে উৎসাহী করে তুলে। গাড়ি চুরির মামলায় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তাদের সাথে মাদকাসক্ত যুবক হাসান ও কামরুজ্জামান এর পরিচয় হলে তাদেরকে গাড়ি চুরির কৌশল সর্ম্পকে প্রশিক্ষণ দেয়। পরবর্তীতে মূলত সোহেলের নেতৃত্বে তারা পাঁচজন মিলে গাড়ি চুরি করা শুরু করে। চক্রটির মূলহোতা সোহেল একাধিক ছদ্মনাম ব্যবহার করতো যেমনঃ স¤্রাট, বাদশা, বুলেট, বস ইত্যাদি।

চুরির/ছিনাতাইয়ের কৌশলঃ এই চোরচক্রটি নি¤েœাক্ত কৌশল অবলম্বন করে পিকআপ চুরি/ছিনতাই করতঃ

ক। পার্কিং হতেঃ পিকআপ গুলো পার্কিং এ থাকা অবস্থায় চুরি হওয়ার ঘটনাই বেশী। ড্রাইভার বা মালিকের অনুপস্থিতিতে সুবিধামত সময়ে বিশেষ কৌশল পার্কিং এ থাকা গাড়িগুলোর লক ভেঙ্গে ও বিশেষ ধরণের মাস্টার চাবি দিয়ে স্টার্ট দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেত।

খ। ড্রাইভারের সাথে সখ্যতা গড়েঃ কোন কোন ক্ষেত্রে চালকদের সঙ্গে মিশে কৌশলে তাদের পিকআপ ভ্যান চুরি করতে নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করে আসছিল এ চক্রটি। এজন্য তারা চালকদের লোভনীয় বিভিন্ন অফারও দিয়ে আসছিল। মালিকের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকার একটি অংশ ড্রাইভার’কে দিত।

গ। চেতনানাশক প্রয়োগঃ খালি চলন্ত পিকআপ ভাড়া করার কথা বলে থামিয়ে বিভিন্ন কৌশলে চালককে চেতনানাশক প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে নির্জন রাস্তায় ফেলে রেখে পিকআপ নিয়ে পালিয়ে যেত।

চোরচক্রের সাংঘঠনিক কাঠামোঃ উপরোক্ত চক্রটি ৫-৭ জনের সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত বলে যানা যায়।

ক। গাড়ির তথ্য সংগ্রাহকঃ এরা টার্গেটকৃত পিকআপের তথ্য সংগ্রহ করে মূলহোতা/বস’কে জানায়।

খ। স্পট থেকে গাড়ি চুরিঃ এ চক্রের সদস্য সাধারণত দক্ষ গাড়ি চালক হয়ে থাকে। ড্রাইভারের অনুপস্থিতিতে স্পট হতে দ্রæততম সময়ে পিকআপের লক ভেঙ্গে গাড়ি নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পালিয়ে যায়।

গ। চোরাইকৃত গাড়ি গোপন স্থানে লুকিয়ে রাখাঃ দলের এই সদস্য চোরাইকৃত গাড়ি তারা তাদের পূর্ব নির্ধারিত গোপন যায়গায় রেখে দেয়।

ঘ। চোরাইকৃত গাড়ির ডিসপোজাল প্রক্রিয়াঃ দলের এই সদস্যরা নি¤েœর তিন প্রক্রিয়ায় চোরাইকৃত গাড়ির ডিসপোজাল করেঃ

(১) ১ম প্রক্রিয়াঃ দলের নির্দিষ্ট সদস্য গাড়িতে থাকা কাগজ থেকে মালিকের মোবাইল নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ স্থাপন করে দড় কষাকষি করে টাকা আদায় করত। টাকা আদায় হলে এই চক্রের গাড়ি চালক বসের নির্দেশে গাড়ি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে মালিক’কে খবর দিত।

(২) ২য় প্রক্রিয়াঃ কোন কোন ক্ষেত্রে চোরাইকৃত গাড়ির রং পরিবর্তন করে ভূয়া নাম্বার প্লেট লাগিয়ে কমদামে বিক্রি করে দিত।

(৩) ৩য় প্রক্রিয়াঃ টাকা আদায় না হলে অথবা চোরাইপথে বিক্রি করতে না পারলে গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করার ব্যবস্থা করে।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, পিকআপ চুরির পর ঐ সংঘবদ্ধ চোর চক্রই ভুক্তভোগী কে মোবাইলে কল করে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত টাকা দাবি করে। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা নিয়ে চক্রটি বেশ কিছু গাড়ি ফিরিয়েও দিয়েছে। সেক্ষেত্রে চুরি করা গাড়িটি কোন এক নির্জন জায়গায় ফেলে রেখে ভুক্তভোগী কে জানিয়ে দেয়া হয় গাড়ির অবস্থান। চক্রটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বেনামী রেজিষ্ট্রেশনকৃত মোবাইল সীম ব্যবহারসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করত। চক্রটির বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ও গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু মামলা রয়েছে। এই পর্যন্ত তারা শতাধিক পিকআপ চুরি করে এ পর্যন্ত প্রায় ০১ কোটির অধিক টাকা আদায় করেছে বলে স্বীকার করে।

উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এরূপ সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী দলের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews