সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব-দক্ষিণ উপকূলের চরে আটকে যাওয়া পণ্যবাহী ট্রলার থেকে চুরি হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে ঢেউটিন,টাইলস,নোঙরসহ বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়ার মালামাল।প্রায় ১ শত ৬৫ বান্ডিল টিনসহ প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকার মালামাল ছিলো বলে দাবি ট্রলার মালিক কামরানের।
এ ঘটনায় মগধরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কাশেম প্রকাশ কাশেম বেকারি ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছিন্টুকে আটক করা হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সৈয়েদ আহমেদ।এছাড়া তাদেরকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত রিমান্ড না মনজুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।এছাড়া চোরাই মালামালের মধ্যে কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।পুরো মাল উদ্ধার ও জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান চলছে বলে জানান এ মামলার আইও সৈয়েদ আহমেদ।
এই বিষয়ে মগধরা ইউনিয়নের ৯ নং ইউপি সদস্য সেলিম বলেন,আমার চোখের সামনে ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম এবং ৭নং ওয়ার্ডেট সাবেক ইউপি সদস্য সমির ও তার লোকজন বোড থেকে মালামাল নিয়ে গেছে।নিরাপত্তার স্বার্থে আমি বাঁধা দেয়নি।এছাড়া আরো ৩ জন ইউপি সদস্যের দাবি এই ঘটনায় অবশ্যই ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক ইউপি সদস্য সমির জড়িত থাকতে পারে।
এই বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন,এই ঘটনার সাথে অবশ্যই ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাকিব জাহাঙ্গীর এবং তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য সমির জড়িত রয়েছেন।এতবড় ঘটনা এরা ছাড়া কোনমতেই সম্ভব নয়।
এছাড়া ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জায়েদ সারোয়ার শিমুলের ও একই দাবি।রাকিব জাহাঙ্গীর ও তার ভাই সমির জড়িত আছে বলে মনে করেন তিনি।
এই বিষয়ে মগধরা ৭নং ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি নিজেই পুলিশকে সহযোগিতা করেছি।যেই দুইজন আটক হয়েছে এদের তথ্য আমিই প্রশাসনকে দিয়েছি।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এইসব ইউপি সদস্য আমার নামে মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছে।
এই বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য সমিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,একটা পক্ষ সব সময় আমাদের পিছনে পরে থাকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার জন্য।রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই না।আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না।
চোরাই মালামাল পুকুরে পাওয়ার ঘটনাকে সন্দ্বীপের জন্য দুঃখজনক উল্লেখ করে মগধরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার হোসেন বলেন,প্রশাসনের কাছে অনুরোধ থাকবে এ ঘটনার যাতে সুষ্ঠ তদন্ত হয় এবং জড়িতদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির যেন ব্যবস্থা করা হয়।
উল্লেখ্য যে,গত বুধবার(৩ অক্টোবর)চট্টগ্রামের চাক্তাই খাল থেকে এমবি রাজমহল নামে একটি মালবাহী ট্রলার নোয়াখালীর হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।সন্দ্বীপের পশ্চিম পাশে অবস্থিত ভাসানচরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে হাতিয়ার দিকে যাওয়ার সময় ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়।ইঞ্জিন বিকল হলে ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে সেদিন সন্ধ্যায় সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব-দক্ষিণ উপকূলের চরে এসে আটকে যায়।সেসময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে ট্রলারের তলার কাঠ ফেটে পানি প্রবেশ করলে ট্রলারে থাকা সারেং খালাসিরা বেড়িবাঁধ ভিতরে চলে আসে।পরদিন সোমবার বিকালে তাদের ট্রলারের কাছে অন্য একটি ট্রলার দেখতে পেয়ে বেড়িবাঁধ থেকে ট্রলারের কাছে গেলে দেখতে পান একদল লোক তাদের দূর্ঘটনা কবলিত বোট থেকে মালামাল নিয়ে যাচ্ছে।
এসময় নতুন টিন,নোঙর,টাইলস,ট্রলারটির পাখা-সেফ, বড় দুইটা ব্যাটারিসহ প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায় বলে জানান ট্রলারের মালিক কামরান।এছাড়া ট্রলারে থাকা প্রায় ১ হাজার বস্তা ইউরিয়া সার ও ২৫০ বস্তা সিমেন্ট পানি লেগে নষ্ট হয়ে যায়।
এই ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠ ও সঠিক তদন্তের দাবি জানান মগধরা ইউনিয়নের সচেতন মহল।