1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
সমৃদ্ধ করেছে অর্থনীতি, সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন

সমৃদ্ধ করেছে অর্থনীতি, সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৯.৩৩ পিএম
  • ২৬৮ বার পঠিত

শহিদুল ইসলাম সোহেল নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মৌসুমের শুরুতেই জমে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সাদা মাছের পাইকারি বাজার। বাজারটি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতায় অবস্থিত। এ বাজারে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার মণ পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয়।
অক্টোবরের শেষে প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচ হাজার মণ মাছ বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। হারতা বাজারের কারণে যেমন দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে, তেমনি সৃষ্টি হয়েছে অনেক কর্মসংস্থান। পাশাপাশি সারাদেশের মাছের চাহিদা পূরণে ব্যাপক অবদান রাখছে এ বাজার। মূলত খামারে চাষ হওয়া মাছ এখানে বিক্রি হয় বলে স্থানীয়ভাবে বাজারটিকে বলা হয় সাদা মাছের বাজার।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বাজার জমে। বাজারের সময়সীমা এক থেকে দেড় ঘণ্টা হলেও এখানে কার্প জাতীয় মাছ রুই, কাতল, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, মিনার কার্প, পাঙ্গাশ, চিতল, তেলাপিয়া, সরপুঁটি, কৈ, শিং, চিংড়িসহ নানান প্রজাতির মিঠা পানির মাছ পাওয়া যায়। এ কারণে এ বাজারের সুনাম পুরো দেশজুড়ে।
মাছ চাষিরা ট্রলার, নৌকা বা ভ্যানযোগে মাছ এনে আড়তে তোলার পরপরই নিলামে বিক্রি হয়ে যায় মাছগুলো। বাজারেই রয়েছে বরফকল এবং বরফ ভাঙার মেশিন। মাছ বিক্রির পর পাইকারি ক্রেতারা গাড়িতে মাছ তুলে বরফ দিয়ে তাৎক্ষণিক বাজার থেকে চলে যাচ্ছেন।
বাজারটি পরিচালিত হয় হারতা আলোকোজ্জ্বল বহুমুখী সমবায় সমিতির মাধ্যমে। বাজার কমিটির সদস্য ও মাছের আড়তদার সুভাষ চন্দ্র হালদার বলেন, উজিরপুরে মাছের কয়েকশ’ ঘের রয়েছে। যারা সারাবছর মাছ চাষ করে এই বাজারে বিক্রি করেন। মাছ চাষীরা নৌকা, ট্রলার কিংবা ভ্যানযোগে জীবন্ত মাছ নিয়ে আসেন।তিনি আরও বলেন, শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার থেকে পাইকারি ক্রেতারা এই বাজারে মাছ ক্রয় করতে আসেন।
মাছ ব্যবসায়ী নিখিল দাস বলেন, হারতা সাদা মাছের বাজারটি আগে রাত তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত চলতো। কিন্তু চার বছর আগে বোমা ফাঁটিয়ে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। এরপর ব্যবসায়ীরা সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে বাজারের সময় দিনে নিয়ে আসেন। এখন প্রতিদিন দিনেই বাজার বসে। আশ্বিন মাস থেকে শুরু করে পৌষ মাস পর্যন্ত বাজারটি জমজমাট থাকবে।
মাছ চাষী কামরুল ইসলাম জানান, এই বাজারে মাছ পরিবহনের জন্য আলাদা ট্রলার তৈরি করা আছে। ট্রলারে পানি দিয়ে জীবন্ত অবস্থায় মাছগুলো নিয়ে আসা হয়। অপর মাছ চাষী পলাশ রায় বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় পাইকারি মাছের বাজার হারতা। এখানে শুধু সাদা মাছই বিক্রি হয়।
মাছের পাইকারি ক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিদিন তিনি পাইকারি মাছ ক্রয় করে কক্সবাজারের রামু, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, হারতা মাছের বাজারের সাথে কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষ জড়িত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
হারতা আলোকোজ্জ্বল বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সায়েম বিশ্বাস বলেন, সারাদেশে এখান থেকে মাছ যায়। বাজারে ২০টি আড়ত রয়েছে। যারা মাছের ব্যবসা করেন তারা সবাই হারতা, সাতলার স্থানীয় বাসিন্দা। এ ছাড়া মাছ চাষীরাও উজিরপুর, আগৈলঝাড়া, বানারীপাড়া উপজেলাসহ আশপাশের উপজেলার বাসিন্দা।
তিনি আরও বলেন, হারতার মাছের এ বাজারটি দীর্ঘ ২০ বছর আগে থেকে শুরু হয়েছে। এখন দক্ষিণাঞ্চলে বৃহত্তর মাছ বাজারের মধ্যে এটি একটি। এখান থেকে মাছ ক্রয় করে দেশের বিভিন্নস্থানের শতাধিক ব্যবসায়ী জেলায় নিয়ে যাচ্ছেন। আর স্বল্প সময়ের এ বাজারে প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। হারতার এ বাজারটি স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে জানিয়ে সায়েম বিশ্বাস আরও বলেন, এ বাজারকে ঘিরে শত শত মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
রাজশাহী থেকে আসা মাছ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, বরিশালের মাছের স্বাদ ও মান ভালো হয়। ক্রেতাদের কাছেও বরিশালের মাছের চাহিদা অনেক বেশি। তাই তারা কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে ট্রাক নিয়ে হারতা বাজারে এসেছেন মাছ ক্রয় করতে।
বরিশালের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, হারতার সাদা মাছের বাজার দেশের অর্থনীতির জন্য ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, যেকোনো পণ্যের সাপ্লাইচেইন ঠিক রাখতে হলে বাজারজাতকরণের সঠিক প্রক্রিয়া থাকতে হয়। যেটি হারতা বাজারে ধরে রাখতে পারলে দিনে দিনে স্থানীয়ভাবে মাছের উৎপাদন বাড়বে। ব্যবসার প্রসার ঘটার পাশাপাশি নতুন নতুন আরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, ঘটবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। সবকিছু মিলিয়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews