সরকার পরিকল্পিতভাবে ট্যানারিশিল্পকে ধ্বংস করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কোরবানির সময় যে সকল ট্যানারির মালিক ও আড়ৎদাররা কোরবানির চামড়া কিনে এবার তারাও তা কিনেনি। এটা হলো সরকারের ব্যর্থতা। শুধু ব্যর্থতা নয় সরকার পরিকল্পিতভাবে ট্যানারিশিল্পকে ধ্বংস করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এটার কারণ হচ্ছে অন্য কাউকে সুবিধা দেওয়া। অন্য কোথাও অন্য কোন দেশে চামড়া শিল্পের বিকাশ ঘটানোর জন্যই পরিকল্পিতভাবে সরকার দেশের চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছে।
শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রামে নিজ বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, কোরবানির ঈদের গরু ছাগলের চামড়া নিয়ে যে তেলেসমাতি চলেছে সেটা শুধু দুঃখজনক না, এই সরকার যে গরীবকে পিষে মারার সরকার তা তারা প্রমাণ করেছে। গত কয়েক বছর আগেও আমরা দেখেছি কোরবানির পশুর চামড়া ৩ হাজার-৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, দেড় হাজার- দুই হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে ছাগলের চামড়া। এবার টাকা তো দূরের কথা কেউ কেনার জন্য আসেনি এবং সরকার ট্যানারি শিল্পের বিকাশ ঘটানোর জন্য যে ঋণ দিতে চেয়েছিলো সরকার সে ঋণ দেয়নি। তিনি বলেন, যে সকল হালাল পশু কোরবানি দেওয়া হয় তার চামড়া বিক্রি করে গরিব মানুষ ও এতিমদের দেয়া হয় এটি হচ্ছে নিয়ম। যা যুগের পর যুগ শতাব্দীর পর শতাব্দী গরিবের হক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমান সরকার যারা দিনের বেলা ভোট করতে ভয় পায় রাতের অন্ধকারে ভোট করে সেই সরকারের কোন নীতি যে জনগণের পক্ষে প্রণীত হবে না এটাই স্বাভাবিক।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, মানুষ এবার চামড়া বিক্রি করতে না পেরে নদীতে ফেলে দিয়েছেন মাটিতে পুঁতে রেখেছে। অথচ এই চামড়া কেনার জন্য ঈদের দিন থেকে ঈদের কয়েকদিন আগে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে যারা কোরবানি দিত তাদের সাথে চুক্তি করত, তাদের অনুরোধ করা হতো কোরবানির চামড়া যেন তাদের কাছে বিক্রি করা হয়। কিন্তু এবারে সেধরনের কোনো লোক পাওয়া যায়নি। ফলে চামড়া শিল্পের উপর যেমন আঘাত এসেছে পাশাপাশি এই চামড়া বিক্রি করে গরীবদের যে সহযোগিতা করা হতো সেটা থেকেও তারা বঞ্চিত হয়েছে। অর্থাৎ গরিবের হক আদায় করা হয়নি হক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এই বঞ্চিত করার মূল কারিগর হচ্ছে বর্তমান সরকার। তাদের নীতির কারণে এই শিল্পটি আজ ধ্বংস হয়েছে এবং চামড়ার দাম শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তিনি বলেন, মানুষ যখন চামড়া ফেলে দিচ্ছে তখন এক টাকা দিয়েও কেউ নিতে চাচ্ছে না। আমি বলব এই যে নীতি সরকারের সেটি গণবিরোধী নীতি। এই গণবিরোধী নীতির কারণেই আজকে চামড়ার দাম শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে এবং চামড়া শিল্প ধ্বংসের উপক্রম হয়েছে।