1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
সাবরিনা-সাহেদের মতো প্রতারকদের চিনবেন যেভাবে
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৪ অপরাহ্ন

সাবরিনা-সাহেদের মতো প্রতারকদের চিনবেন যেভাবে

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০, ৯.০৮ এএম
  • ৫৪২ বার পঠিত

ডেস্ক : নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্যই বেশিরভাগ মানুষ মূলত প্রতারণা করে থাকে। আর প্রতারণা করার অন্যতম কৌশল হলো মিথ্যা বলা। আজ রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম গ্রেফতার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ‘মহাপ্রতারক’। সব সেক্টরেই তার প্রতারণা রয়েছে। এছাড়াও সাহেদ ঠগবাজি ও মিথ্যাচারেও অন্যতম।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতে, দেশে মহামারি করোনাকালে যিনি চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রতারণা করতে পারেন সে নিজের স্বার্থের জন্য সব করতে পারেন। তার এমন প্রতারণার কারণে আর্ন্তজাতিক অঙ্গণেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। বর্তমানে র‌্যাব সদর দফতরে রাখা হয়েছে করোনা টেস্টে ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার দায়ে গ্রেফতার রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রতারক মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে। বুধবার দুপুর ৩টায় র‌্যাব সদর দফতরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অন্যদিকে, করোনার নমুনা পরীক্ষার নামে প্রতারণার অভিযোগে রোববার গ্রেফতার হন জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী৷ গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইইডিসিআরের সঙ্গে জেকেজি হেলথ কেয়ার (জোবেদা খাতুন সার্বজনীন চিকিৎসাসেবা) বুথ স্থাপন করে করোনা টেস্ট করার চুক্তি করে। সে অনুযায়ী ২৩ জুন পর্যন্ত ১৫ হাজার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট দিয়ে জেকেজি প্রায় ৮ কোটি টাকা রোজগার করে।

মানুষ তার স্বার্থের জন্যই প্রতরণার আশ্রয় নেয়। স্বার্থ বলতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থ, মান-মর্যাদা ও প্রতিপত্তি লাভের স্বার্থ কিংবা ক্ষমতা লাভের স্বার্থ। আর কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্য বা প্রতিহিংসাটা ব্যক্তিগত স্বার্থহানির জন্যও হতে পারে। আবার ধর্মীয়, জাতিগত বা রাজনৈতিক কারণেও হতে পারে।

তবে যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, প্রতারকদের কিছু সাধারণ আচরণগত বৈশিষ্ট্য থাকে রয়েছে। যা জানা থাকলে পারিবারিক, আর্থিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় যে কোনো পর্যায়েই প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকা যাবে। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অর্থ ও সম্মান হারানো থেকেও বাঁচা যাবে। জেনে নিন প্রতারক চেনার উপায়-

> প্রতারক ব্যক্তিরা বেশি কথা বলে। নিজের ঢোল নিজেই পেটাই অর্থাৎ সততা ও সত্যবাদিতা জাহির করা।

> কথায় কথায় শপথ ও কসম করে। সেই সঙ্গে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা ও আকুতি মিনতিও করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নিজের দু:খের কথা বলে মানুষের কাছে সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টা করে।

> অন্যের দু:খে হা-হুতাশ করে কৃত্রিম সহানুভূতি প্রকাশ করে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা কথা বলে ও প্রচার করে।

> দ্বিমুখী ভূমিকা ও আচরণ করে। নিজে অন্যের কাছে ভালো সেজে আরেকজনের বিরুদ্ধে কথা বলে।

> সাময়িকভাবে নিজের সন্তানের চেয়ে অন্যদের কিংবা বাচ্চাদের চেয়ে বড়দের প্রতি বেশি যত্নবান হয়। দেখানো ভালোবাসা ও সেবাযত্নে এরা বেশি পারদর্শী হয়ে থাকে।

> প্রতারক ব্যক্তিরা অল্পেই রেগে যেতে পারেন। আবার স্বেচ্ছায় তা ভুলে ভালো ব্যবহার দিয়ে সবার মন জুগিয়ে চলার চেষ্টা করেন।

> প্রতারক ব্যক্তিরা মানুষের উপকারের চেয়ে পটানোর কাজে বেশি মনোযোগী হয়।

> একবার কোনো উপকার করলে তার বিনিময়ে অনেক বড় কিছু আদায়ের প্রচেষ্টায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে।

> ভুল করে বারবার ক্ষমা চাওয়া, বিশ্বাস ভঙ্গ করা ও ব্ল্যাকমেইল করা প্রতারক ব্যক্তির আচরণগত আরেকটি বৈশিষ্ট্য।

> ব্যবসায়ী, ডাক্তার, রাজনীতিবিদ যাদেরকেই প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত বকবক করতে দেখবেন, তাদের থেকে দূরে থাকবেন। যারা সত্যিকার কাজের, তারা শুধু সংশ্লিষ্ট কাজ সম্পর্কিত কথাই বলে থাকেন।

এবার জেনে নিন বিশেষজ্ঞরা প্রতারক চেনার কৌশল সম্পর্কে কী বলেছেন- 

প্রতারক ব্যক্তিদের আচার-আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন আসে। তাদের মুখের অভিব্যক্তি থেকে শুরু করে কথা বলার ধরণসহ দেহভঙ্গিগুলোও প্রতারণাপূর্ণ চারিত্রিক বৈশিষ্টেরই লক্ষণ প্রকাশ করে। এমনটাই বলেছেন একসময় এফবিআইয়ে আচরণ বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করা গবেষক লিলিয়ান গ্লাস।

তার মতে, মিথ্যা বলার সময় স্নায়ুবিক দুর্বলতা ও টেনশনে ভোগার কারণে দেহভঙ্গিগুলোতে এই পরিবর্তন দেখা দেয়। লিলিয়ান গ্লাস তার লিখিত বই ‘দ্য বডি ল্যাঙ্গুয়েজ অব লায়ারস’এ প্রতারকদের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় যুক্তরাজ্যের সাউদার্ন মেথোডিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জেমস ডব্লিউ পেনিবেকার একটি টেক্সট অ্যানালাইসিস প্রোগ্রাম থেকে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত পর্যবেক্ষণ করেন।
গবেষণায় দেখতে পান, ভাষার বিশেষ কিছু কাঠামো পর্যবেক্ষণ করে কেউ সত্য এড়িয়ে গেছেন কিনা তা অনুমান করা সম্ভব।

গবেষণায় দেখা গেছে, মিথ্যাবাদীরা এই তিন ধরনের শব্দ খুব কমই ব্যবহার করেন, প্রথম ব্যক্তি শব্দ: আমি, আমাকে বা আমার। জ্ঞানীয় শব্দ: উপলব্ধি বা চিন্তা। বর্জনকর শব্দ: কিন্তু বা ব্যাতীত। কানাডার গবেষকরা সম্প্রতি একটি গবেষণায় একদল স্বেচ্ছাসেবী লোককে একজোড়া গলার স্বর শুনতে দিয়ে কে কতটা আকর্ষণীয় আওয়াজ করছেন তার মূল্যায়ন করতে বলেন। এরপর গবেষকরা তাদেরকে ওই দুজনের প্রত্যেকে কোনো রোমান্টিক সম্পর্কে কতটা প্রতারণা প্রবণ হবেন তারও মূল্যায়ন করতে বলেন।

নারী সেচ্ছাসেবকদের বেশিরভাগই বলেছেন, নিচু আওয়াজের গলার স্বর সম্পন্ন পুরুষরা তাদের সঙ্গীনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন। আর পুরুষদের বেশিরভাগই অনুমান করেছেন যে, উঁচু আওয়াজের গলার স্বর সম্পন্ন নারীরা তাদের সঙ্গীর সঙ্গে প্রতারণা করবেন।

প্রতারক ব্যক্তি যে কোনো কথাতেই মিথ্যা বলে থাকে। আর মিথ্যা বলার একটি স্পষ্ট লক্ষণ হলো হঠাৎ করেই কথা বলায় অক্ষমতা। কারণ মিথ্যা বলার সময় মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। প্রতারক চরিত্রের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বরং ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসবে। তখন অন্যকে দোষারোপ করে নিজের ঢোল পেটাতে থাকে প্রতারকরা। উপরোক্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে দূরে থাকুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews