করোনায় টালমাটাল সিলেটে এবার ডেঙ্গু আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী অনেকাংশে বেড়ে যাওয়ায় সিলেটেও শুরু হয়েছে আতঙ্ক। স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, খুঁজলে সিলেটেও মিলবে এডিস মশার লার্ভা। অন্যান্য বছরও নগরীর কয়েকটি জায়গায় মিলেছে এ মশার লার্ভা। বিশেষ করে সিলেট নগরীর ২৫ এবং ২৬ নং ওয়ার্ডে এ মশার বংশ বিস্তারের আশঙ্কা বেশি থাকে। পরীক্ষায় লার্ভাও মেলে প্রতিবার। এমনকি এবার এডিস মশার ভরা প্রজনন মৌসুম চললেও এখনো সিসিকের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। তাই করোনাকালে গোপনে ডেঙ্গু বিস্তারের শঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ২০১৯ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু বিস্তারের পর পর সিলেটেও বেশ কিছু রোগী পাওয়া যায়। যার অধিকাংশই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে সিলেটে আসেন। সে সালে ঢাকা থেকে সংক্রমণ নিয়ে আসার পর সিলেটে বাড়তে থাকে রোগী। এমনকি গেল বছরও ধমক দিয়েছে ডেঙ্গু। কিন্তু সিসিকের অভিযান আর মানুষের সচেতনতায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা মেলে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ২০১৯ সালে ঢাকা থেকে অনেকে আক্রান্ত হয়ে সিলেটে আসার পর বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এবার যদিও এখনো কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। কিন্তু ঢাকায় যেহেতু রোগী বাড়ছে সুতরাং সিলেটেও প্রস্তুতি নিতে হবে। তা না হলে হাসপাতালগুলোতে চাপ বাড়লে বিপদ হবে। তাই আগে থেকে অভিযানে নামা প্রয়োজন। কারণ ডেঙ্গুর নিয়ম হলো আক্রান্ত কোনো মানুষকে মশা কামড় দিয়ে একই মশা অন্য মানুষকে কামড়ালে সেও সংক্রমিত হবে।
অপরদিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আ ফ ম নাজমুল বলেন, এপ্রিল থেকে অক্টোবর এই সাত মাস সময়কে ডেঙ্গুর প্রজনন মৌসুম বলা হয়। কিন্তু বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সময় হলো জুন থেকে সেপ্টেম্বর।
তিনি আরও বলেন, জমে থাকা স্বচ্ছ পানি থেকে এডিস মশার জন্ম হয়। সে হিসেবে আমাদের সিলেটের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি বা ছাদ বাগানে ফুলের টব, ইত্যাদিতে পানি জমে থাকে। অভিযানে না নামলে মানুষের সচেতনতা তৈরি হয় না। এবার যদি কোনো কারণে ডেঙ্গু বাড়ে তাহলে সিলেটে ভয়ানক পরিস্থিতি হবে।
তবে করোনা নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান থাকায় সিসিকের পক্ষ থেকে অভিযান শুরু না হলেও দ্রুত অভিযানে নামা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো জাহিদুল ইসলাম।