চট্টগ্রামে বাস্তবায়ন হচ্ছে আধুনিক পয়ঃশোধনাগার (স্যুয়ারেজ) প্রকল্প। এরই অংশ হিসেবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করবে চট্টগ্রাম ওয়াসা।প্রতিষ্ঠার ৬০ বছর পর স্যুয়ারেজ যুগে চট্টগ্রাম ওয়াসা। কর্ণফুলী ও হালদা নদী দূষণ রোধে ভূমিকা রাখবে তিন হাজার আটশো’ কোটি টাকার এই মহাপ্রকল্প। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হবে চট্টগ্রাম, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৬০ বছর পয়ঃনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা করেনি চট্টগ্রাম ওয়াসা। খাল নালার মাধ্যমে পয়ঃবর্জ্য পড়তো কর্ণফুলী ও হালদাতে। সেখান থেকে সাগরে। বর্ষাকালে চরমভাবে নাকাল হয় নগরবাসী। বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্য একাকার হয়ে পানি বাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয় তারা। এই অবস্থায় পয়ঃনিষ্কাশনের মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় ওয়াসা।মহানগরীর হালিশহরে একশো ৬৩ একর জায়গায় চলছে এ প্রকল্পের কাজ। এর মাধ্যমে বাসাবাড়ির তরলবর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহনের জন্য দুইশো কিলোমিটার পয়ঃলাইন স্থাপন ও ২৮ হাজার সার্ভিস কালেকশন দেয়া হবে। পয়ঃবর্জ্য সংগ্রহ করে পরিশোধনের পর পানি ফেলা হবে সাগরে। অবশিষ্ট কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হবে।পরিবেশবিদরা বলছেন, সভ্য দুনিয়ায় পয়ঃনিষ্কাশন ছাড়া কোনো নগর থাকতে পারে না। দূষণ রোধে এটি বিশাল ভূমিকা রাখবে। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম ফজলুল্লাহ গণমাধ্যমে বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে চট্টগ্রাম হবে স্বাস্থ্যকর নগরী। চলতি মাসে সংযোগ দেয়ার প্রথম পর্যায়ে মহানগরীর ২১টি ওয়ার্ডের ৩৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকার ২০ লাখ মানুষকে এ প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
স্যুয়ারেজের সুবিধাভোগী: স্যুয়ারেজ মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশ অনুযায়ী জোন-১ অর্থাৎ প্রথম ক্যাচমেন্ট এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ওয়াসা। এ এলাকার আওতাধীন নগরীর ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী, ১২ নম্বর সরাইপাড়া, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, ১৪ নম্বর লালখানবাজার, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম, ২১ নম্বর জামালখান, ২২ নম্বর এনায়েতবাজার, ২৩ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী, ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ, ২৫ নম্বর রামপুর, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ২৮ নম্বর পাঠানটুলী, ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ি, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩১ নম্বর আলকরণ, ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজার, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা, ৩৭ নম্বর উত্তর-মধ্যম হালিশহর ও ৩৮ নম্বর দক্ষিণ-মধ্য হালিশহর ওয়ার্ডের গ্রাহকরা পয়ঃসংযোগ পাবেন। প্রকল্পের অংশ হিসেবে এসব এলাকায় বাসাবাড়ির সীমানার অভ্যন্তরে নতুন ইন্সপেকশন পিট নির্মাণ, পয়ঃবর্জ্য সংগ্রহের পাইপলাইন নির্মাণ ও বিদ্যমান বৃষ্টির পানির লাইন থেকে পয়ঃবর্জ্য লাইন পৃথক, সেপটিক ট্যাঙ্ক বাইপাসপূর্বক নতুন পিটে সংযুক্ত করা হচ্ছে। পরে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে এটি বন্ধসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হবে বলে জানা গেছে।