নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে মিঠু সিন্ডিকেটের কাছে স্বাস্থ্য খাত জিম্মি। মিঠু সিন্ডিকেট যে লিস্ট দেয় সে অনুযায়ী কাজ হয়। এছাড়া তিনি পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় প্রত্যেক জেলায় একজন করে সচিবকে সভাপতি না করে সংসদ সদস্যদের সভাপতি মনোনয়ন দিন।
বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এই অভিযোগ তোলেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘করোনার সময় স্বাস্থ্য বিভাগের অনেক দুর্নীতি। এরই মধ্যে সরকার প্রধান অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। দুদকও এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে। যেখানে সারাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের ওষুধ বা ইক্যুইপমেন্ট পার্সেস করা হয়। প্রকিউরমেন্টে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কনসার্ন আছে- এই কথা বলে মিঠু সিন্ডিকেট যে লিস্ট দেন সে অনুযায়ী তাদের সরকারি পার্সেস করতে হয়। যদি তাদের কথা মতো পার্সেস না হয় তবে পরিচালককে বদলি করা হয়।’
মুজিবুল হক সংসদে স্বাস্থ্যসচিবকে লেখা গণমাধ্যমে প্রকাশিত ডিজির চিঠি পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘কথা মতো কাজ না করলেই কর্মকর্তাদের বদলি করে দেন মিঠু সিন্ডিকেট। যত বড় পদই হোক না কেন সেই পদে বদলি মিঠু সিন্ডিকেটের কাছে সময়ের ব্যাপার মাত্র।’ এ সময় সংসদে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
পয়েন্ট অব অর্ডারে মুজিবুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করার জন্য এবং এর ক্ষতি ঠেকাতে যথেষ্ট প্রোগ্রেস আছে। অনেক পদক্ষেপ নিচ্ছেন, আমরা সহায়তা করছি। প্রধানমন্ত্রী সব সময় সংসদীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। এই সংসদে সংসদীয় রাজনীতিতে আনার জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিলেন ১৯৯১ সালে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, এখন করোনা মোকাবিলা করার জন্য প্রত্যেক জেলায় যে কমিটি করা হয়েছে, সেই কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে একজন সচিবকে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশের ৬৪ জেলায় কি এমপি ছিল না? যাকে আহ্বায়ক করলে আমরাও কমিটিতে থাকতে পারতাম, অনেক কাজ করতে পারতাম। আমার মনে হয় আমলাতান্ত্রিক বিষয়টা এই সরকারের পক্ষে মানায় না। আমরা দেখেছি, অনেক সচিবের চাকরি আছে এক মাস বা দুই মাস, তারা আবার নির্বাচন করতে চান। তারা তাদের ইচ্ছে মতো, পছন্দ মতো কার্যক্রম করতে চান। তাই আমি অনুরোধ করব, যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র, সেখানে জেলায় যদি একজন মন্ত্রী অথবা এমপি সভাপতি থাকেন তাহলে তার সঙ্গে কাজ করতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব।
মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, ‘একজন সচিব যিনি আমার চেয়ে ক্রমানুযায়ী স্ট্যাটাসে নিচে, তিনি ডাকলে আমার যেতে হয়। এতে আমাদের অনেকেই অসুবিধা বোধ করি। এসব অসঙ্গতির বিষয়টা দেখবেন। আমাদের কাজে লাগানোর জন্য যদি আপনার দলের এমপিদেরও সভাপতি করেন তাতেও আমরা কাজ করব।’