ডেস্ক: বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিশেষ বৈঠক করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। রবিবার (২৩ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা হঠাৎ কেন বাংলাদেশ সফরে এলেন তা নিয়েও বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় কমিটি।
জানা গেছে, রবিবারের বৈঠকে বাংলাদেশ ও তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বর্তমান সম্পর্কের চ্যালেঞ্জ এবং সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার সূচি ছিল। এই আলোচনা পরবর্তী বৈঠকে করবে সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনার জন্য আমরা পরবর্তী বৈঠকের দিন ঠিক করেছি। ওই দিন রুদ্ধদ্বার মিটিং হবে।
সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী সংসদীয় কমিটির বৈঠক এমনিতেই রুদ্ধদ্বার। তারপরও রুদ্ধদ্বার বৈঠক কেন জানতে চাইলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, কমিটির সদস্যদের বাইরে বৈঠকে অনেকেই উপস্থিত থাকেন। সামনের বৈঠকে আমরা উপস্থিতি ঠিক করে দেব। সেজন্য ক্লোজডোর বলা হচ্ছে।
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রীংলার ‘অনানুষ্ঠানিক’ সফরের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, আমরা জিজ্ঞেস করেছি উনি আনঅফিসিয়াল ভিজিটে আসলেন কেন? কূটনৈতিক সফর আনঅফিসিয়াল হয়? আমাদের মন্ত্রণালয় জানাল, এরকম সফর হয়। আগের শিডিউল করা ভিজিট না। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল প্রধানমন্ত্রীকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
দুই দিনের আকস্মিক সফরে গত ১৮ অগাস্ট বাংলাদেশে আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব । সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে তার বৈঠক হয়। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক নিয়ে সরকার তরফে কিছু জানানো হয়নি। শ্রীংলার এই সফরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা ভারতে উৎপাদিত হলে তা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে বলে আশ্বস্ত করেছে ভারত।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় বাংলাদেশ নিয়ে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফারুক খান বলেন, বৈঠকে এ বিষয়টি আমরা তুলেছিলাম। মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে তারাও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের কাছে বিষয়টি তুলেছিল। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে তারাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে তাদের কিছু করার নেই।
বৈঠকে সম্প্রতি লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিস্ফোরণের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশিদের অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, ওই বিস্ফোরণে ৫ জন বাংলাদেশি প্রবাসী মারা গেছেন। প্রায় ৮০ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। শান্তিরক্ষা কাজে নিয়োজিত ২১ জন নৌ-বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন।
ফারুক খান বলেন, ওই দেশে প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশি অবৈধভাব বসবাস করছেন। তাদের ফেরত আনার জন্য কমিটি ব্যবস্থা নিতে বলেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমাদের জানিয়েছেন এই অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জার্মান বিনিয়োগকারীদের সম্পৃক্ত করা এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন অপপ্রচার বন্ধে পলিটিকাল পর্যায়ে যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ মাঝে মধ্যে ওয়ার্কশপ/সেমিনারের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, আব্দুল মজিদ খান, হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক, কাজী নাবিল আহমেদ এবং নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশ নেন।ডেস্ক: ডেস্ক: