করোনার দুঃসময়ে অবাক বাংলাদেশ দুচোখে বিস্ময় নিয়ে মানুষের দেবদূত যে বাংলাদেশ পুলিশকে দেখছে এই রূপান্তরের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা আজকের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে মফস্বল-গ্রামমুখো হয়েছে মানুষ। তীব্রস্রোত মানুষের। যতই মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, সতর্ক করা হচ্ছে ; অবুঝ শিশুর মতো মানুষগুলোর ঘরমুখো স্রোত কিছুতেই থামানো যাচ্ছিলো না।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান তড়িৎ গতিতে কর্মপরিকল্পনা তৈরি তাঁর প্রশিক্ষিত চৌকস টিম নিয়ে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাওয়া -আসার পথে তৈরি করে ফেললেন পরিকল্পিত শক্ত ব্যারিকেড। তিনি নিজেই রাস্তায় মানুষকে চমৎকারভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে সফলভাবে ফেরাতে শুরু করলেন যার যার অবস্থানে। যেন অবুঝ শিশুদের প্রতি দায়িত্বশীল অকৃত্রিম বন্ধুর দায়িত্ব পালন। মানুষকে সর্বাত্মক বিনয়ের সঙ্গে যুক্তি আর আবেগের সমন্বয়ে পুলিশ বোঝালেন- এই বাড়িমুখো হওয়ার পরিণাম, ভয়াবহতা। করোনার এই ভয়ংকর ঝুঁকির মধ্যে মানুষের পক্ষে প্রতিরোধ গড়তে, সেবার দুহাত প্রসারিত করে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় ক্ষুধা আর রোগে আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আজ প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত। তারপরও কী প্রবল মনোবলে উজ্জীবিত তাঁরা। নিজে কেন রাস্তায় এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকা ছেড়ে যাওয়াটা ঠেকানো না গেলে পরিণামটার কথা ভেবে এমন প্রবলভাবে অস্থির উঠেছি যে, নিজের কথা ভাবার কোনো অবকাশ নেই । মানুষকে বাঁচাতে হবে। মানুষ বাঁচানোটাই আজকের চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে আমাদের জিততেই হবে। জেতাতে হবে বাংলাদেশকে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ঈদের দু’দিন আগে ঢাকার দুই প্রবেশ পথ প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ফলে ঈদের আগে বাড়ি ফিরতে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসসহ ব্যক্তিগত যানবাহনে বাধা কাটল।গাবতলীতে পুলিশের দুটি চেকপোস্ট নির্দেশনা মোতাবেক ‘ইন’ও ‘আউটে’র ক্ষেত্রে তুলে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিরপুর ডিভিশনের দারুস সালাম জোনের এডিসি মাহফুজা আফরোজ লাকী।
করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটির মধ্যে গত ২৬ মার্চ হতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছে সরকার। পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন করলে আইনের কঠোর প্রয়োগের কথাও জানায় সড়ক পরিবহন বিভাগ।
গণমাধ্যম কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী তুলে দিয়েছেন ডিআইজি হাবিব :করোনা সংক্রমন এড়াতে গণমাধ্যম কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেন্জের ডিআইজি ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান। ডিআইজি হাবিবুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন- ঘরে থাকার জন্য যাদেরকে আমরা আহবান করছি তাদেরক ঘরে রাখার জন্য পুলিশ, তাদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার এবং এই খবরটি মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা কাজ করছেন। এ সময় পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন।
ডিআইজি হাবিব এর সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি :
খ্যাতিমান পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি হাবিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ‘উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ করোনা দূর্যোগের শুরু থেকেই সমাজের অসহায় ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অতি আপনজন হিসেবে পাশে দাড়িয়েছে, এই সময়ে উত্তরণ ফাউন্ডেশনের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে দেশের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গ।
ভয়াবহ ‘করোনা’ দূর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এম এ হাশেম। পারটেক্স গ্রুপ ও পারটেক্স পরিবারের যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম ডাইনামিক ও মানবিক পুলিশ ,ঢাকা রেন্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান এর উত্তরণ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গরীব, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ঘরে ঘরে পৌছে দেওয়া হয় অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।
‘পার্টেক্স গ্রুপ’ এর সহযোগিতায় বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ মুন্সীগন্জে বসবাসরত পিছিয়ে পড়া বেদে জনগোষ্ঠীর ৬৭৯টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে।