রাজধানীর মহাখালীতে ৭ তলা বস্তিতে আগুনে পুড়ে গেছে বহুঘর ও বস্তিবাসীদের স্বপ্নের আবাসস্থল। ২৩ নভেম্বর রাত আনুমানিক ১১ টা ৪৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১২ টি ইনিটের প্রচেষ্টায় রাত ১২ টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার জানান সর্বমোট ২০০ ফায়ার কর্মী ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। যদিও এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায় নি তবে নিঃস্ব হয়ে গেছে অসংখ্য বস্তিবাসী। আগুন নিভে গেলেও তার সাথে সাথে নিভে যায় তাদের অধরা সুখ স্বপ্ন।
মহাখালীর ৭ তলা বস্তিতে আগুনে কাশেম আলীর বসতবাড়ি ও মুদি দোকান পুড়েছে।
মহাখালীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস ফাইভের ছাত্রী ফারিয়া।আগুন লাগায় নিজের পরিবারের সাথে বের হয়ে যাওয়ায় নিজের পড়ার বইগুলো সাথে নিতে পারেনি। ফলে পুড়ে যায় তার শিক্ষার প্রদীপটিও। পুড়ে যায় নববধূ গীতা রানীর বিয়ের বেনারসি। রাতের আধারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মিলিয়ে যায় তাদের জীবনের আশার শেষ আলোটুকুও। সকালে সূর্য ওঠার পর দেখা যায় বসতবাড়ি ও আশেপাশের দোকানপাট কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই। করোনাকালীন এমন একটা সংকটময় সময়ে এই অগ্নিকান্ড যেন অসহায় বস্তিবাসীদের জন্য মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ। তাই তাদের পাশে দাঁড়ানো সুধী সমাজ তথা সামর্থ্যবানদের নৈতিক দায়িত্ব।
৭ তলা বস্তিটির ওই অংশের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টি দোকান পুড়ে গেছে। আগুনের ভয়াবহতা দেখে বস্তিবাসীরা এদিক ওদিক ছুটাছুটি করেও কিছু করতে পারেনি। কারন আগুন নেভানোর কোন ব্যবস্থা বস্তিতে ছিলো না। এই বিষয়টি সত্যিই আমাদের জন্য অনেক বেশি দুঃখজনক।আগুন লাগার প্রকৃত কারনও জানা যায় নি। তবে আগুন লাগার কারন উদঘাটনে আমাদের অনেক বেশি সোচ্চার হতে হবে। কেনো প্রতি বছর আমাদের দেশে নিমতলি, চকবাজার ট্র্যাজেডির মত ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। শীতকাল তথা এই সময়টাতে প্রায়শই এমন দূর্ঘটনাগুলো বেশি ঘটতে দেখা যায়।বিশেষ করে বস্তিগুলোতে ঘনবসতি আর অসচেতনতার কারনে এমন ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। এই বিষয়ে এখন সময়ের দাবী হচ্ছে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ ও পদক্ষেপ গ্রহন করা। এসব ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বস্তিবাসীদের নিরাপদ আবাসন তথা জীবিকার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..