
অনুমোদন ছাড়াই ভবন নির্মাণ, নকশার জন্য আবেদন পড়েছে মাত্র ৭টি
রেখা মনি নিজস্ব প্রতিবেদক:
Facebook Twitter share
আইন থাকলেও মানছে না কেউ। রাজারহাট উপজেলায় নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে গত এক বছরে জমির শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য একজনও আবেদন করেননি।
Surjodoy.com
পাকা ভবন নির্মাণে নকশা অনুমোদনের জন্য এ বছর মাত্র সাতটি আবেদন জমা পড়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে। অথচ প্রতি বছর অপরিকল্পিতভাবে ফসলি জমির ওপর নির্মাণ হচ্ছে শত শত বাড়িঘর। এ অবস্থায় আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে ফসলি জমি।
The Daily surjodoy
সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট-১৯৫২ অনুযায়ী যে কোনো ধরনের পাকা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনের যাচাই-বাচাই কমিটি থেকে নকশা অনুমোদনের বিধান রয়েছে।
The Daily surjodoy
এ ছাড়া ফসলি জমিতে বাড়িঘর স্থাপনের ক্ষেত্রে জমির শ্রেণি পরিবর্তনের অনুমোদন নিতে হবে। তবে এসব বিধিবিধানের তোয়াক্কা করছেন না কেউ। গত এক বছরে এই উপজেলায় বহুতল ভবনসহ তিন শতাধিক পাকা ভবন নির্মাণ হলেও নকশা অনুমোদনের আবেদন পড়েছে মাত্র সাতটি। ফসলি জমির ওপর আরও ৩০০ নতুন বাড়িঘর স্থাপনের কাজ চললেও জমির শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য কেউ আবেদন করেনি।
The Daily surjodoy
জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৬৩টি গ্রামে প্রতি বছর ফসলি জমির ওপর শত শত বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। পাঁচ বছর আগেও গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটের দু’ধারে বিস্তীর্ণ এলাকায় ছিল শুধু জমি আর জমি। এখন আর তা নেই। এমনকি বিল, জলাশয় ও প্লাবন ভূমি পর্যন্ত ভরাট করে নির্মাণ হচ্ছে বাড়িঘর।
The Daily surjodoy
উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল হরিশ্বর তালুক মৌজার দেউলার বিলে ২৫ বছর আগে পাঁচ শতাধিক একর আবাদি জমি ছিল। কৃষকরা সেখানে ধান, পাটসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করতেন। বর্ষাকালে পানি আর শুকনা মৌসুমে জমির আইল ছাড়া ভর দুপুরে রোদে ছায়ায় জুড়ানোর মতো কোনো গাছও ছিল না। তবে এখন ভিন্ন চিত্র।
The Daily surjodoy
দেখে বোঝার উপায় নেই এই দেউলার বিলটি এক সময় শুধুই ফসলের মাঠ ছিল। ২৫ বছরের মধ্যে সেখানে দুই সহস্রাধিক পরিবার ঘরবাড়ি নির্মাণ করে মানুষ বসবাস করছে। মানুষের যাতায়াতের জন্য তৈরি হয়েছে একাধিক কাঁচা-পাকা সড়ক ও বাড়ি সংলগ্ন পুকুর। প্রতি বছর তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ঘরবাড়ি।
The Daily surjodoy
এমনিভাবে উপজেলার চাকিরপশার বিল, ইটাকুড়ির দোলা, ঘড়িয়ালডাঙ্গা বিল, জুগিদাহ বিল, উকিলের ছড়া, খাউরিয়ার দোলা, বেদারজাল, জোকমারীর দোলাসহ ছোট-বড় ৩০টি বিল, জলাশয় ও প্লাবনভূমিতে বর্ষাকালে মাছ ও শুস্ক মৌসুমে ধান চাষাবাদ হতো। এখন এগুলো সংকোচিত হয়েছে। চারধার ভরাট করে মানুষ গড়ে তুলেছে বসতবাড়ি, দোকানপাট ও হাটবাজার।
The Daily surjodoy
উপজেলা সদর থেকে সাতটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম্য রাস্তার ধারে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার বাড়িঘর। অনেক স্থানে চলছে নতুন আবাস স্থাপন বা নির্মাণের কাজ। এমনকি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজও চলছে।
The Daily surjodoy
উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, রাজারহাট উপজেলায় মোট পরিবারের হালনাগাদ কোনো তথ্য নেই। তবে ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪৬ হাজার ৪৮৯টি পরিবারের তথ্য রয়েছে।
The Daily surjodoy
এ ছাড়া পরিসংখ্যান ব্যুরোর জনসংখ্যা জরিপ অনুযায়ী ২০০১ সালে রাজারহাট উপজেলায় মোট জনসংখ্যা ছিল এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৭৯ জন এবং ২০১১ সালে জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ৯৮১ জনে।
The Daily surjodoy
ইউএনও নুরে তাসনিম বলেন, অপরিকল্পিতভাবে কেউ যাতে বাড়ি নির্মাণ না করে সে বিষয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া ক্যাম্পেইন করার জন্য প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
The Daily surjodoy
এর পরও অনুমোদন ছাড়া বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এ বছর নতুন ভবনের নকশা অনুমোদন-সংক্রান্ত সাতটি আবেদন পেলেও জমির শ্রেণি পরিবর্তনের কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply