বিশেষ প্রতিনিধি॥ সৈয়দপুর শহরের অভ্যন্তরে সবকটি সড়কে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৩০ হাজার ব্যাটারী চালিত অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। আর এ সকল যানবাহন যত্রতত্র পার্কিং ও সড়কের ধারের ফুটপাত বেদখলের কারণে যানজটে প্রায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে এ শহরের। সমাধানে তাই উড়ালসেতু নির্মাণের দাবী জানান সচেতনমহল।
এ শহরের কেন্দ্রস্থল বঙ্গবন্ধু চত্তর। এর পাশে মদিনা মোড় শহীদ ডা: জিকরুল হক সড়ক দিয়ে উত্তরে রেলকারখানা, রেলমাঠ, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়, রেলওয়ে হাসপাতাল, মিস্ত্রিপাড়া হয়ে বাইপাস কাচা বাজার বিশ্বরোড যেতে হয়। এক লেনের এ সড়কে বাস ছাড়া শিক্ষক,শিক্ষার্থী, বিভিন্ন কর্মজীবিগণ সিএনজি, অটোবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান যাতায়াত করে। এ সকল যানগুলো শহরের ব্যাস্ততম এলাকা মদিনা মোড়ে যত্রতত্র ভাবে রাখা হয়।
পাশাপাশি এ মোড় হয়ে শহরের প্রতিটি সড়কের ধারে ব্যাবসায়িরা ফুটপাত ভাড়ায় দিয়ে ভ্রাম্যমান দোকান বসিয়েছে। এতে ভ্রাম্যমান দোকান আর অটো বাইকের জটে বড় যানবাহন গুলো চলাচল করতে বিড়ম্বনায় পড়ছে। আর অবৈধ দখলদার ও যানের জট কাটাতে আধাঘন্টা ব্যায় হচ্ছে। তারওপর ওই মোড়ের ১০০ গজ দক্ষিনে বঙ্গবন্ধু চত্তর। সেখানে রয়েছে রেল ক্রোসিং।
এ শহর হয়ে প্রতিদিন নীলসাগর এক্সপ্রেস, রুপসা, তিতুমির, সিমান্তসহ অন্যন্য মালবাহী ট্রেন মিলে ৬টি ট্রেন ১২ বার যাওয়া- আসা করায় চতুরদিকে প্রকট হয় যানজট। এতে নাকাল অবস্থা পথচারিদের। আর এ জট সড়াতে প্রায় ৪০ মিনিট ব্যায় হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু সড়ক, শহীদ শামসুল হক রোড, বিমানবন্দর রোড, চাউল মার্কিট রোড ও কলাহাটি রোড হয়ে কোন গাড়ি যাতায়াত করতে পারে না।
তবে যানজটের ভয়াবহ চিত্র চোখে পড়ে শহরের শহীদ শামসুল হক সড়কে। বিশেষ সকাল ও সন্ধায় উত্তরা ইপিজেড ছুটির পর প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক ও স্থানীয়রা মিলে অটোবাইক ও সিএনজিতে চলাচল ও অন্যন্য যাত্রী ওঠানামা করায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। তাই দিনভর ওই মুহুর্তে সড়কটি পারাপার হওয়া ঝুকি পুর্ণ। তবে এ শহরের বঙ্গবন্ধু চত্তর থেকে ঢেলাপিড় বাজার, বঙ্গবন্ধু চত্তর থেকে টার্মিনাল ও চৌমুহুনি বাজার পর্যন্ত অটোবাইকের পৃথক কমিটির মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ সকল যান চলাচল করছে।
মইনুল হক নামে এক পথচারি জানান, সংকির্ণ সড়ক। তাও বেদখল। পাশাপাশি যত্রতত্র অটোবাইকের ষ্টান্ড। ও ট্রেন চলাচল নিয়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এর থেকে স্থায়ী সমাধানের পথ বের করতে হবে।
আবিদ আলি নামে এক ব্যবসায়ি জানান, এ শহরের থানার সামনে প্রায় ২০ টি সিএনজির স্টান্ড করা হয়েছে। এগুলোর কোন অনুমোদন নেই। নেই ফিটনেস। চালকদের নেই লাইসেন্স। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবাধে চালানো হচ্ছে। এতে অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গতির কারণে যানজটের পাশাপাশি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
সিএনজি অটোরিকশার চালকরা জানান, ট্রাফিক আগে গাড়ি প্রতি ৫ হাজার টাকা জড়িমানা করত। এখন করে না। পেটের দায়ে এ গাড়ি চালাচ্ছি। সামনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করব। তবে নিয়ম মেনেই সড়কে গাড়ি চালাচ্ছি। আবুল হোসেন নামে এক অটোরিক্সা বলেন, ‘গরিব মানুষ আমরা,। গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষন নেইনি। দেখেই শিখেছি। আর এভাবে রিক্সা চালিয়ে পরিবার কে সহায়তা করছি।
শহরের প্লাজা মার্কেটের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, ব্যাটারীচালিত এ সকল অবৈধ যানগুলোকে একটি নীতিমালার আওতায় নেওয়া উচিত। তাহলে যানজট কমবে। পাশাপাশি পৌর পরিষদকে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে কঠোর ভুমিকা রাখতে হবে। তাহলেই কেবল যানজট মুক্ত শহর গড়া সম্ভব হবে।
জানা যায়, এ শহরের ৬টি স্পটে অবৈধ্য যানবাহনের অপারেশন, মোবাইল কোট, যানজট নিরসন ও পরিবহন তদারকিতে একজন পরিদর্শক, দুই জন সার্জন, ৪ জন এটিএসআই, ৫ জন কন্সটেবল রয়েছে ট্রাফিক বিভাগে। এই স্বল্পো সংখ্যক জনবল দ্বারা শিফটিং ডিেিউটর মাধ্যমে কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তাই আরও জনবলের পাশাপাশি পৌর পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন সমন্বিত ভাবে পরিকল্পিত নগর গড়ার পদক্ষেপ নিলে অবশ্যই সমস্যা থাকবেনা বলে মতামত প্রকাশ করেন সৈয়দপুর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো: নাহিদ পারভেজ। তবে এ শহরে অবৈধ যানের চলাচল রোধ আর ফুটপাতে ভ্রাম্যমান দোকানীদের না তাড়িয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ করলে এর স্থায়ী সমাধান হতে পারে মনে করছেন শহরবাসি।