রফিক তালুকদার, চট্টগ্রামঃ
হওয়া না হওয়ার শংকা মাড়িয়ে, অমানিশার অন্ধকার পেরিয়ে আলোর পথে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর উপর নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মান প্রকল্প।
নতুন এই সেতু নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করেছে দাতা সংস্থা কোরিয়ান
চলতি বছরের নভেম্বর থেকে কাজ শুরু করে দিয়েছে নিয়োগকৃত পরামর্শক সংস্থা,পরবর্তী ছয়মাসের মধ্যে নতুনভাবে সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশাসম্পন্ন করবেন তাঁরা
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. আহসান জাবির গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর জানা যাবে কত টাকা দাতা সংস্থা আমাদের দিতে পারে। আগামী ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে তাঁদের সাথে বৈঠক এর পর কালুরঘাট সেতু এলাকায় পরিদর্শন করবেন তারা।’
এর আগে গত ১৯ মে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে কোরিয়ান দাতা সংস্থা ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। সেখানে নতুন সেতুর অর্থায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইডিসিএফ। এরপর ছয় মাসের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই ও ডিটেইলড ডিজাইনের কাজ সম্পন্ন করার অনুরোধ করা হয়।
আহসান জাবির বলেন, ‘যেহেতু পরামর্শক নিয়োগ হয়েছে, সেহেতু কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা করছি।
রেলসংযোগসহ সড়ক সেতুটি কর্ণফুলী নদীর নাব্য থেকে ৭ দশমিক ৬ মিটার উচ্চতায় করতে ২০১৮ সালের প্রস্তাবিত প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১৫১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। অর্থায়ন ও নকশা চূড়ান্ত হলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আপত্তিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্পটি
দাতা সংস্থা কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তা সিইউক তখন বলেছিলেন, ‘সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করেছি। ছয় থেকে এক বছরের মধ্যে আমরা কাজটি শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান ইউসিং ইন্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে রেল মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৭ মিটার উচ্চতায় সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তে আপত্তি ছিল না বিআইডব্লিউটিএর। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে নকশা ও বাজেট চূড়ান্ত হওয়ার পর সেতুর উচ্চতা নিয়ে আপত্তি ওঠে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ১২ দশমিক ২ মিটার উঁচুতে সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানানো হয়। এ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি ও আলোচনা চলতে থাকে।
এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী রেল সংযোগসহ সড়ক সেতু নির্মাণের নির্দেশ দেন। এরপর দ্বিতীয় কালুরঘাট সেতু প্রকল্পে গতি আসে।
১৯৩০ সালে নির্মিত ৭০০ গজ দীর্ঘ রেল সেতুটি ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০০৪ ও ২০১২ সালে দুই দফায় সেতুটি বন্ধ রেখে সংস্কারকাজ করেছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা জরাজীর্ণ। ৯০ বছর বয়সী সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে কয়েক হাজার যানবাহন ও কয়েক জোড়া ট্রেন। কালুরঘাট সেতুর জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন কমিটি।
বর্তমান চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দীন আহমদ শপথ নেওয়ার পর থেকে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জোরেশোরে তদ্বির ও তৎপরতা শুরু করেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy