প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ৫:৫০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ১২, ২০২১, ৮:৪৫ পি.এম
আইনের আশ্রয় চেয়ে পুলিশের পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়া স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত
নিরেন দাস,জয়পুরহাট,জেলা প্রতিনিধিঃ-
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আইনের আশ্রয় চেয়ে পুলিশের পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়া বিএনপি সমর্থিত আনারস মার্কার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুর রহমান আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সাঈদ জোয়ারদার কে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন।
সারাদেশের ন্যায় দ্বিতীয় ধাপে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় ৫ ও ক্ষেতলাল উপজেলায় দুটি ইউপি নির্বাচনে তিনিই একমাত্র স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত করেছেন। আর বাঁকি ৬ টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রতীকের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।
হাবিবুর রহমান পেয়েছেন ৮ হাজার ৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকার প্রার্থী আবু সাইদ জোয়ারদার পেয়েছেন ৭ হাজার ৭২ ভোট।
পর্যবেক্ষক কালে দেখা যায়,জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সকাল থেকে মনোরম পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটারেরা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করছিলেন। হঠাৎ দুপুরে করেই গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি কক্ষে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে নৌকার সিল মারাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল সৃষ্টি হয়। যার প্রতিবাদ ও প্রকাশ্যে ভোট দেয়ার বিষয়টি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিুবর রহমান জানাতে গিলে তাকে লাঞ্ছিত হলে
মুহুর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এমন খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জয়পুরহাট র্যাব-৫ ও পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে র্যাব-পুলিশের উপস্থিতি দেখে আইনের আশ্রয় চেয়ে পুলিশ পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান তিনি প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ তুলে বলে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ছেলে সজীব ও সাবেক ইউপি সদস্যের ছেলে রয়েল গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে জোড় করে সন্ত্রাসীদের মতো প্রকাশ্যে নৌকার ব্যালট সিল মারতে থাকে। এমন দৃশ্য দেখে প্রতিবাদ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টসহ তার আনারস মার্কার কর্মী-সমর্থকরা। এমন খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয়ে প্রতিবাদ ও প্রকাশ্যে সিল মারার বিষয়ে জানাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হাতে লাঞ্ছিত হন চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুর রহমান। এ অবস্থায় পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত ও প্রশাসনে উপস্থিতি দেখে সজীব ও রয়েল দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।
খবর পেয়ে র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের কমান্ডার লে. কমান্ডার তৌকির র্যাব সদস্যদের নিয়ে ছুটে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে হাজির হন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।
এসময় তরিকুল ইসলামের পায়ে হাত দেওয়ার ভঙ্গিমায় বসে ভোট কারচুপির অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাবিবুর রহমান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম এসময় নিরপেক্ষ ভোটের নিশ্চয়তা দিয়ে তাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই কেন্দ্রে অবস্থান নেয় র্যাব ও পুলিশ। পরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হলে বেসরকারি ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান নির্বাচিত হয়।
হট্টগোলের ওই ঘটনায় হাবিবুর রহমান জানান, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছিল। কিন্তু দুপুর ১টার দিকে বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকার প্রার্থী আবু সাইদ জোয়ারদারের ছেলে সজীব ও তার সহযোগী রয়েল নামের দুই যুবক কেন্দ্রের ৭ নম্বর কক্ষ দখল করে প্রকাশ্যে নৌকার সিল মারতে থাকলে তার লোকজন এতে বাধা দেয়। এতে চরম হট্টগোল শুরু হয়। তারা আমাকেও গলাধাক্কা দেয়। পরে পুলিশ এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আমি পুলিশের কাছে কান্নাকাটি করেছি। প্রশাসনের কঠোর ও নিরপেক্ষ ভূমিকায় আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমি নির্বাচিত হয়েছি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, হট্টগোলের পর থেকে ঘটনাস্থলে তিনি নিজেই অতিরিক্ত পুলিশসহ অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন এবং অবাদ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ পরিসরে সেখানে নির্বাচন হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy