প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ১০:৪৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ১৬, ২০২১, ৯:৫৬ পি.এম
জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ- নিরেন দাস
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউপির চলবিলা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহুরম বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রসুল চৌধুরীর পুত্র, রুকিন্দিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান, আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সফল সাবেক সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর গতকাল ১৫ মার্চ সোমবার আক্কেলপুর পৌরসভার নব-নির্বাচিত পৌর মেয়রকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার পর কান্নায় ভেঙে পরে
পৌরসভারসকল কাউন্সিলর, কর্মকর্তা,কর্মচারী সহ শতশত সাধারন জনগণ। তাদের কান্নায় নিজেও কেঁদে ফেলেন এই পরিশ্রমী আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর। তিনি বিকেলে কান্না ভেজা অশ্রু নিয়ে আক্কেলপুর থেকে বিদায় নিয়ে জয়পুরহাটে তার নিজ বাসভবনে গিয়ে তার ব্যবহারিক ফেইসবুক আইডিতে একটি আবেগময় স্ট্যাটাস লিখেছেন যা ইতিমধ্যে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড়
যোগাযোগ গণমাধ্যম ফেইসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। তার লেখা ভাইরাল হওয়া স্ট্যাটাসটি হুবহ জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকায় তুলে ধরা হলো তিনি লিখেছেন- জীবনে এই প্রথম বোধহয় আবেগের কাছে হার মানলাম। আজ মেয়র হিসেবে শেষ দিন অফিসে এসেছিলাম,প্রস্তুতি নিয়েছিলাম আনুষ্ঠানিকভাবে সবকিছু হস্তান্তর করবো শহিদুল আলম চৌধুরীর নিকট,সহকর্মীদের মুখভার! কি রে ভাই !
শহিদুলআলম চৌধুরী ও তো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান! ও তো আওয়ামী লীগের ত্যাগী একজন মুখ! নেতা কর্মীদের আশ্বস্ত করছিলাম,আমার মতো শহিদুল আলম চৌধুরী ও আপনাদের ভালবাসবে,মূল্যায়ন করবে এই বিশ্বাস টুকু রাখুন ,ভবিষ্যতে মিলিয়ে নিবেন। আমি অবসর চৌধুরী কখনও মানুষ চিনতে তো ভুল করিনি, করিনা। নীচে নেমে এসে দেখি শত শত কর্মী ভাইয়েরা মুখ গোমড়া করে দাঁড়িয়ে আছেন। সবার চোখ ভেজা ভেজা। কিরে ভাই! আমি কি হারিয়ে যাচ্ছি নাকি! জীবনে এই প্রথম বোধহয় আবেগের কাছে হার মানলাম।
দুচোখ আর লুকোতে পারিনি। নোনতা জলের স্পর্শে হারিয়ে গেলাম। সবার উদ্দেশ্যে মাইকে বক্তব্য দিয়ে আশ্বস্ত করলাম তারপর জাতির পিতার মুরালে শ্রদ্ধা জানিয়ে যখন বিদায় নিচ্ছিলাম তখন সব নেতাকর্মী রা আমাকে জডিয়ে ধরে কান্নার রোল পড়ে গেলো,আকাশ বাতাস ভারী হল।আমিও নিজেকে সামলাতে পারলাম না।
সেএক হৃদয়বিদারক দৃশ্য।নিজেকে বড়ই ভাগ্যবান মনে হলো এই ভেবে আমার মতো ক্ষুদে মানুষের জন্য কেউ কাঁদে,কেউ ব্যথিত হয়! রাজনৈতিক জীবনে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি আছে !অনেকেই মাথা নীচু করে অবাধ্য শিশুর মতো দাঁড়িয়ে আছে। আড়ষ্টতা ভেঙে দেই, পিঠ চাপড়ে দেই ওদের,
আমি অবসর আসছি নতুন শক্তি নিয়ে আরো প্রগাঢ় হয়ে। আরো সক্রিয় হয়ে আরো গতিময় হয়ে। প্রিয় আক্কেলপুর বাসী, আপনারা তো এই অবসর চৌধুরী কে তিলে তিলে তৈরী করেছেন।
এই অবসর চৌধুরী আপনাদের ছেড়ে কোথায় যাবে ? এই অবসর চৌধুরীর যাওয়ার যে আর কোন জায়গা নেই। এই আক্কেলপুরই আমার শেষ ঠিকানা। এই আক্কেলপুরের মাটিই আমার মা,আমার বাবা মানুষের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে,সুবিধাবঞ্চিত ও ছিন্নমূল মানুষের পাশে থাকতে গিয়ে আমার পরিবারকে সময় দিতে পারিনি। আমার কনিষ্ঠ পুত্র কতদিন
যে আমাকে "বাবা" বলে ডেকে জড়িয়ে ধরেনি! বাবা পুত্র ঝগড়া করিনি কত দিন হলো। আজ সকালে ঢাকায় যাচ্ছি কলিজার পুত্রর কাছে। ও বলেছে, বাবা, আক্কেলপুরে জনগণই কী তোমার কাছে সব? আমি তোমার কী কেউ না! চোখ ভিজে যায়! জীবনে এই প্রথম বোধহয় আবেগের কাছে হার মানলাম। আমি ছাত্ররাজনীতি তে এসে খোঁজ নিতে পারিনি আমার বাবা-মা স্ত্রী পুত্র কন্যাদের। তাই আজ সকালে যাচ্ছি চলে
ঢাকায় আমার ছোট ছেলে অপূর্ব চৌধুরীর কাছে। কিছুদিন তার সাথে থেকে আবার আসিবো ফিরে আমার প্রিয় ভূমি আক্কেলপুরে,আমার প্রিয় নেতাকর্মীদের মাঝে। থাকবো সারাজীবন তোমাদের সাথে। আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।এখন নাই কোনো রাজনৈতিক পদে অথবা প্রশাসনিক চেয়ারে, তারপরও আমার সর্বস্ব দিয়ে আপনাদের কল্যাণে আমার সবটুকু দিয়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি আক্কেলপুরে সকল মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে।
হারিয়েছি ৭ই জানুয়ারি তে আমার পিতৃতুল্য চাচা "গোলাম মোস্তফা চৌধুরী" কে, হারিয়েছি আমার রাজনৈতিক অভিভাবক আমার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা "গোলাম রসূল চৌধুরী" কে গত ১৪-ই জানুয়ারি আক্কেলপুর পৌরসভার নির্বাচনের দিনে বিজয় লগ্নে। আমি এখন এতিম হয়ে গেছি। এখন আপনারা ই আমার বাবা আপনারাই আমার মা আপনারাই আমার ভাই আপনারাই আমার সব। থাকতে চাই আপনাদের সাথে,রাখবেন সারাজীবন আপনাদের তরে। আল্লাহ্ হাফেজ।