1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
আগাম ও পরিবেশ বান্ধব সবজি চাষে কৃষকের সাফল্য
বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কুড়িগ্রামের উলিপুরে মহান বিজয় দিবস পালিত বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন সাভার পৌরসভা ৩ নং ওয়ার্ডে সবুজ স্বদেশ যুব সংঘের আয়োজনে আলোচনা সভায় মেয়র পদপ্রার্থী মোঃ খোরশেদ আলম রেডার ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন: সভাপতি লাভলু, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রতিবন্ধী নাগরিকদের সঙ্গে তারেক রহমানের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা ১৬ই ডিসেম্বরের বিজ্ঞাপন সংগ্রহ চলছে সকল প্রতিনিধিকে বিজ্ঞাপনের আহ্বান জানানো হলো তাড়াশ মহিলা ডিগ্রী কলেজের নবগঠিত কমিটিকে সংবর্ধনা সিরাজগন্জের তাড়াশে পূর্বশত্রুতার জেরে এক কৃষকের ১২ বিঘা জমির ভুট্টার গাছ কেটে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে তাড়াশে তীব্র ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন

আগাম ও পরিবেশ বান্ধব সবজি চাষে কৃষকের সাফল্য

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯.৫৬ পিএম
  • ২৭ বার পঠিত

মাসউদ রানা, দিনাজপুর:

বলা হয়ে থাকে বাংলার মাটি, সোনা ফলায় খাটি। শুধু মৌসুমেই সব্জিচাষ হয় এ ধারণা পাল্টে দিয়েছে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ও ফুলবাড়ী উপজেলার সব্জি চাষীরা। তারা বছরব্যাপী সব্জি চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। আগাম পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ সবজি চাষাবাদ দিন দিন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠায় এবং বাজারে চাহিদা বাড়ায় এলাকার কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। এসব সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন বাজারে। অর্থকরী এসব অর্গানিক ফসল চাষাবাদে সফলতার হাতছানিতে শিক্ষিত যুবকরাও ফিরছে কৃষির এ আদি পেশায়। কর্মসস্থান হয়েছে শত শত মানুষের।

গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র পিকেএসএফসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার আর্থিক সহযোগীতায় উত্তরাঞ্চলের মাইক্রোফাইন্যান্স ও অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কর্মসূচী সুনামের সাথে বাস্তবায়ন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ), ডেনিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ডানিডা) ও পল্লী কম র্সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে “রুরাল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্ট আরএমটিপি” প্রকল্পের ধারায় উত্তরাঞ্চলের স্বনামধন্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করছে “ইকোলজি বান্ধব নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ ”শীর্ষক ভ্যালু চেইন উপ—প্রকল্প। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য— পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী স্থিতিশীল আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে চাষাবাদ করা হয় এবং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক সার ও কৃটনাশক ব্যবহার সম্পূর্ণ বর্জন করা হয়। অর্গানিক এসব খাদ্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণে ভরপুর হয়। যা মানুষের শরীরের জন্য উপকারী। এ পদ্ধতি গ্রহণ করলে খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে।

সরেজমিন পরিদর্শনে ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের শমসেরনগর ৫নং সবজী ক্লাষ্টারের কৃষক রশিদুল ইসলাম জানান, “দুই—তিন বছর আগত হামারে এলাকায় বাইগুন আর ঝাঁল ছাড়া কোন তরকারী আবাদ হতোনা, এলা ম্যালা বারি গেছে”। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, প্রকল্প অন্তভুক্ত এলাকায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ৪,৫৫০জন কৃষক ৩,৫৯১ একর জমিতে বাধাঁকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, সীম, পটল, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, বীটরুট, চাইনিজ ক্যাবেজ জাতের সবজি চাষ করে এ বছর প্রায় ৪৭,৮৭৭ টন সবজি উৎপাদন করেছেন, যার বাজার মূল্য প্রায় ১৯১.৫০ কোটি টাকা।
ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের শিক্ষিত যুবক সুমন মিয়া জানান, “শিক্ষিত হয়েও কিছু করতে না পেরে আজও বিয়ে করার সাহস পাইনি, আরএমটিপি প্রকল্পের সাব্বির ভাইয়ের পরামর্শে আমি ১০০ শতাংশ জমিতে কোকোডাস্টের আগাম জাতের ফুলকপি ১২০০০ হাজার চারা রোপন করে ৬৫ থেকে ৭৫ দিনের মধ্যে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি কেও প্রায় ১ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা লাভ করি। আজ সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসাবে বিভিন্ন স্থান থেকে যখন আমার নিকট অনেকে পরামর্শ নিতে আসে তখন বেশ ভালোলাগে”।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আকতার বলেন “এ প্রকল্পের মাধ্যমে মানসন্মত কৃষি উপকরণ বিশেষ করে কোকোডাষ্টের চারা, কেঁচো সার, মালচিং ফিল্মসহ নানাবিধ জৈবিক উপকরণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে একদিকে যেমন উদ্যোক্তাদের খরচ কমানো হয়েছে অন্য দিকে তেমনি নিরাপদ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদনে কর্ম এলাকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলছে”।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ আব্দুল আউয়াল সরকার জানান, “প্রকল্পের অন্তভুক্ত পার্বতীপুর ও ফুলবাড়ি উপজেলার ১১৫০০ কৃষকের মধ্যে ইতোমধ্যে ৫৩৭৫ জনকে হর্টিকালচার বিষয়ে প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত উন্নততর প্রশিক্ষন, ৭৫০ জনকে গ্লোবালগ্যাপ প্রশিক্ষন, ৪০০ জনকে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং প্রশিক্ষন, ১১০২৫ জনকে পুষ্টি, জলবায়ু, পরিবেশগত ও সামাজিক ইস্যু বিষয়ে প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে”।

এছাড়াও ৫০০ জনের মাটির গুনাগুন পরিক্ষা, ২০৫ জনকে নিরাপদ সাধারন সবজি উৎপাদন প্রদর্শনী প্লট, ১১৭ জনকে নিরাপদ উচ্চ মুল্যের ব্রোকলি, রেড ক্যাবেজ, চাইনিজ ক্যাবেজ, বীটরুট, ক্যাপসিকাম, লেটুস ইত্যাদি সবজি উৎপাদন প্রদর্শনী প্লট, ৫০ জনকে সাধারন ও ১৩ জনকে বানিজ্যিক কেচো সার উৎপাদন প্রদর্শনী , ৫ জনকে নার্সারী, ৪ জনকে সবজি প্রকৃয়াজাতকরনের (চিপস, কুমড়া বড়ি) উপকরন, বাজারজাতকরনে ৩ টি কালেকশন সেন্টার, ৫ টি আউটলেট স্থাপন করা হয়। নিরাপদ সবজি চাষের প্রকল্প এলাকা ঘুরে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের প্রতিনিধি মাসউদ রানা বলেন, জনসচেতনা ও আইনগত নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়নে জোর দিতে হবে। কৃষিতে বিকল্প পদ্ধতি ও টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি বিজ্ঞানীদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। জৈব পদ্ধতি ও প্রাকৃতিক কীটনাশকের ব্যবহার আরও কার্যকর ও সহজলভ্য করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় করতে হবে। যা আগামীর প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews