ফিরোজ,বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মো: রুম্মন তালুকদার(৩০) ও তার চাচাতো ভাই ইসাত তালুকদার(২৪) নামে ওই ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবকলীগের এক সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে একই দলের নেতাকর্মীরা। রবিবার সন্ধ্যায় কেশবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতের স্বজনরা এ হামলার জন্য বাউফল থানা ওসির দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করেন।
স্থানীয়রা জানান, কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহম্মেদ লাভলু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছিলেন। ওই অনিয়ম- দুর্নীতির প্রতিবাদ করেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কেশবপুর কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু। এ নিয়ে উভয়ের মধ্য বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এরপর শুরু হয় আধিপত্য বিস্তারের পালা। ওই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কোরবানীর আগের দিন শুক্রবার পিকু ও লাভলু গ্রুপের মধ্যে সংঘষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৪ জন আহত হন। এ ঘটনায় সালেহউদ্দিন পিকুর স্বজনেরা শনিবার থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি ওসি।
পরে ওই ঘটনার জের ধরে রবিবার সন্ধ্যায় কেশবপুর বাজারে নবী আলীর চায়ের দোকানের সামনে চেয়ারম্যান লাভলুর সমর্থক রফিক বেপারি রাসেল,নরু ও ইব্রাহিমের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জনের একটি সসস্ত্র দল সালেহ উদ্দিন পিকুর ছোট ভাই রুম্মন তালুকদার(৩০) ও তার চাচাতো ভাই ইফাত তালুকদর(২৪) ওপর হামলা চালায়। এ সময়ে তাদেরকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ঘটনাস্থলেই রুম্মন ও ইসাতের মৃত্যু নিশ্চত করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
পরে রাত ৮ টার দিকে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে দুজনকেই মৃত্য বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সালেহ উদ্দিন পিকুর ছোট বোন জেবুন্নেছা অনি অভিযোগ করেন, বাউফল থানার ওসি ওই দিন মামলা নিলে জোড়া খুনের ঘটনা নাও ঘটতে পারতো। মামলা না নিয়ে ওসি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, ওই বিরোধ নিষ্পত্তি করতে দলের উপজেলা পর্যায়ে কোন নেতা হস্তক্ষেপ করেননি। ফলে এই বিরোধ চলমান ছিল। আর এর জের ধরেই এই জোড়া খুন সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার বাউফল সার্কেল মোঃ ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত তাহের, নুরু সহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনার সাথে যে বা যারা জড়িত থাকুক না কেন তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য আজ সোমবার সকালে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে।