
আমির হোসেন বাউফল প্রতিনিধি:
দেখলে মনে হয় ১০-১২ বছরের শিশু। লম্বায় তিনি ২ ফুটের একটু বেশি। নাম তার বজলুর রহমান, বয়স তার (৫১)। শাররীক প্রতিবন্ধী হলেও তিনি কর্মক্ষম নয়। অদম্য ইচ্ছায় মানুষের সাহায্য নিয়ে বাড়ির পাশেই কায়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে তার ছোট্ট একটি দোকান ছিল।
বিদ্যালয়ে আসা শিশুদের কাছে খেলনা চকলেট আচার বিস্কুট বিক্রি করে জীবন জীবিকা চালাতো। কিন্তু মহামারি করোনায় বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে তার দোকানটি বন্ধ হয়ে যায়। দোকানটি বন্ধ থাকায় তা ঝড় বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে ভেঙ্গে পরেছে।
শাররীক প্রতিবন্ধী হওয়াতে কোন ভারি কাজ করতে পারেনা বজলুর রহমান। এলাকাবাসি তাকে বেটে নামে ডাকে। বজলু জানান, স্থানীয় মেম্বর তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার কাছে গেলে সাহায্যের ব্যবস্থা করে দিবে বলে আশ্বাস দেয়।
কার্যালয়ের সামনে এসে সাহস পাচ্ছিলেন না অফিসে ঢুকতে। প্রতিদিনই ভিড় থাকে নির্বাহী দপ্তরে।
এর মধ্যেই বজলুর ডাক পড়ে। বজলুর সমস্যার কথা জেনে সরকার প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী করার প্রকল্প থেকে একটি দোকান ও কিছু মালামাল ক্রয়ের জন্যে অর্থ বরাদ্ধ দেয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বজলু বলেন,
‘মোর আল্লা ছাড়া কেউ নেই। আল্লাই মোরে স্যারকে দিয়া করাইছে। মুই নৌকায় ভোট দিছি, শেখ হাসিনা মোগো গরীবরে এ সাহায্য করছে।
আল্লায় শেখ হাসিনারে ও স্যারেরে বড় করুক। এই বলে বাঁধ ভাঙ্গা হাসি তার চোখে মুখে। পটুয়াখালীর বাউফল ইউনিয়নের কায়না গ্রামের মৃত কাদের হাওলাদারের দুই ছেলে বজলুর রহমান বড় ও তার ছোট ভাই রশিদ।
ছোট ভাই রশিদ শারীরিক প্রতিবন্ধী না হলেও সে একজন কৃষক। বাবার সম্পত্তি নাই বলেই চলে। বর্গা জমিতে কৃষিকাজ করে কোন রকমে ভরন পোষনের ব্যবস্থা চলছে। তার উপর বড় ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। রশিদ বড় ভাই বজলুকে ১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে ছোট্ট একটি দোকানে সামান্য চকলেট চানাচুর বিস্কুট লজেন্স কিনে দিয়ে দোকান ঘর তুলে দিয়ে ছিল।
সে সুখ স্থায়ী হয়নি তার। মহামারি করোনায় দোকানটি বন্ধ হয়ে যায় এবং ঝড় বৃষ্টিতে সম্পুর্ণ নষ্ট হয়ে গেলে চরম বিপাকে পড়ে বড় ভাইকে নিয়ে রশিদ। বজলু জানায় সে কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যায়না। কারন তাকে দেখে সবাই বেটে বেটে বলে ডাকে ।
‘মুই কামাই করে খাই, এ্যাহন দোকান পাইছি, টাহাও পাইছি। যার কেই নাই হ্যার আল্লা আছে।’ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সে শারীক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক, তাকে পুর্ণবাসন প্রকল্পের আওতায় এনে স্বাবলম্বী করে আয়ের পথ তৈরী করে দেওয়া হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply