জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ইট ভাটার শ্রমিকের বুদ্ধিমত্তায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী দ্রুত গতির পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটিসহ ট্রেনের শতশত যাত্রীদের প্রাণ।

শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকালে পাঁচবিবি-বাগজানা রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী কোঁকতারা নামক স্থানে এ ঘটনাটি ঘটে।

ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষাকারী ইটভাটার শ্রমিক যুবক নাজির হোসেন (৩৫) সে উপজেলার বালিঘাটা ইউনিয়নের কোঁকতারা গ্রামের মৃত আফসার আলীর ছেলে। সে আটাপাড়া এনামুল মেম্বারের ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করে।

শ্রমিক নাজির হোসেন জানায়,শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রেল লাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় রেল লাইনের ফিস প্লেট খোলা এবং রেল লাইনের অনেকটা অংশ ভাঁঙ্গা দেখতে পায়।

এসময় সে দেখেন ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড় গামী আন্তঃনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (৭৯৩ নং) ট্রেনটি পাঁচবিবির দিক থেকে দ্রুত ছুটে আসছে। অবস্থা বেগতিক দেখে রেল লাইনের পাশে একটি লাল শপিং ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে। প্রথমে সে দ্রুত ব্যাগটি ছিড়ে বাঁশের কঞ্চিতে বেঁধে ট্রেনটি থামানের জন্য উড়াতে থাকে।

কিন্তু ট্রেনের গতি কমতে না থাকায় তার ঘাড়ে থাকা লাল গামছা দিয়ে রেল লাইনের উপড় দাড়িয়ে ঘুরাতে ও চিৎকার দিতে থাকেন।তার চিৎকার শুনে পাশের বাড়ীর শহিদুল ইসলামের ছেলে গোলজার দৌঁড়ে এসে লাল গামছাটি উঁচু করে ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। এমতবস্থায় ট্রেন চালক বিপদের আংশকার সংকেত বুঝতে পেরে ট্রেনের গতি কমিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত রেল লাইনের ৫-৬ গজ দূরে এসে দাঁড়িয়ে যায়। ট্রেন থামার পর চালক ও যাত্রীরা নেমে রেল লাইনের ভাঁঙ্গা দেখে তাকে ধন্যবাদ জানান।

কোঁকতাড়া গ্রামের কেরামত আলী বলেন, সকাল বেলা রেলের ব্রেকের উচ্চ শব্দ শুনে তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বের হই। এসে দেখি তারা রেল লাইনের উপর গামছা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

স্থানীয় বালিঘাটা ইউপি সদস্য আবু হাসান বলেন, নাজির আমার চাচাত ভাই তারমত একটি নির্অক্ষর ছেলে যে বৃদ্ধি খাটিয়ে শত শত মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে দিলো তা ভেবেই গর্বে বুকটা ভরে গেছে।

এবিষয়ে পাঁচবিবি রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আব্দুল আওয়াল জানান, রেল লাইনের ফেঁটে যাওয়ার কথা স্থানীয়রা আমাকে জানালে,আমি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা স্থলে রেললাইনটি মেরামতের জন্য লোক পাঠিয়ে মেরামত করানো হয়।বর্তমানে ফেঁটে যাওয়া রেল লাইনটি মেরামতের কাজ শেষ করা হয়েছে এবং ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।