1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ জেলেরা
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন

ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ জেলেরা

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১, ২.০৫ এএম
  • ২৪৪ বার পঠিত

ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ জেলেরা

হাবিবুর রহমান,শাহরাস্তি উপজেলা প্রতিনিধি,
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ হাজিমারা আশ্রয়ণ কেন্দ্রের জেলেরা।
চরবংশীর চরকাছিয়া-হাজিমারা গ্রামের মেঘনার পাড়ের জেলেরা মেঘনায় ইলিশ ধরেন। চরবংশীর ফাঁড়ি থানা সংলগ্ন ইলিশ ঘাটের পাশে মেঘনার কূলে হাঁটতে হাঁটতে কথা হচ্ছিল দুলাল বেপারি ও আবুল খায়ের মাঝিসহ কয়েকজন জেলের সঙ্গে।
দুলাল বেপারি বলেন, গত তিনদিন বড় আশায় নদীতে গিয়েছিলাম। কিন্তু যেমন আশা করেছি, তার ধারে-কাছে যাওয়ার চিন্তাও করতে পারিনি। দুই দিনের খরচ ৪ হাজার টাকা। ইলিশ পাইছি ৩ হালি। বিক্রি করেছি আড়াই হাজার টাকা। স্বাভাবিকভাবে ইলিশ থাকলে কম করে নিচে হলেও ২০ হাজার টাকা রোজগার হইতো।
তিনি বলেন, অভিযানের সময় (নিষেধাজ্ঞাকালীন) নদীতে নামি নাই। আমার জেলে কার্ড আছে। অভিযানের সময় চাল পাইছি। কিন্তু ৪০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও চাল পাইছি ৩০ কেজি। ২ মাসও আমাদের সংসার চলে নাই?
নদীতে মিলছে না ইলিশের দেখা। বলা হয়ে থাকে, ইলিশের বাড়ি রায়পুর, রামগতি ও চাঁদপুর। কিন্তু মেঘনার এপার-ওপার ঘুরে ইলিশের খোঁজ মেলেনি।
ইলিশের আকাল চিত্রের দেখা মেলে আলতাফ মাস্টার ও সাজু মোল্লার মাছঘাটে গিয়ে। আড়ত ব্যবসায়ীদের অনেকেই বলছেন, এসময় মেঘনায় টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের কারণে নদীতে ইলিশ নেই। বরিশালের দিকে মোটামুটি ইলিশের দেখা মিলছে।
মেঘনায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরার সঙ্গে মেঘনাপারের বহু মানুষের জীবন-জীবিকা চলে। মেঘনার জেলে ও মেঘনাপারের মৎস্য ব্যবসায়ী, বরফ কারখানার মালিক-শ্রমিক, স্থানীয় দোকানপাটের ব্যবসায়ীদের জীবিকা কেবল ওই মেঘনা নদীর ওপরই নির্ভর।
হাজিমারা এলাকার সাহাবুদ্দিন সর্দার। বয়স ৩৫ বছর। স্ত্রী-এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সংসার। মেঘনাপারেই চায়ের দোকান। এতেই জীবন বাঁচে। তিনি বলেন, নদীর জেলেদের আয় থাকলে তাদের আয়। নদীতে গিয়ে তারা যদি মাছ না পান, তাহলে দোকানের বেচাকেনাও বন্ধ। বেচাকেনা না হলে তাদের আয়-রোজগারও হবে না। এ জন্য তারাও বলতে গেলে নদীতে মাছ পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। তা ছাড়া জেলেদের বাকিতে সদাই (পণ্য) দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাও সম্ভব নয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তফা বেপারী বলেন, গত একমাস নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা না পড়ায় সবার মাঝে হতাশার কালো ছায়া নেমে এসেছে। তাছাড়া অভিযান চলাকালীন জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত কার্ডের সংখ্যা রায়পুর অঞ্চলে কম রাখা হয়। যার জন্য এখানের বহু জেলেই অভিযানের সময় মানবেতর জীবন পার করে থাকেন। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, নদীতে জীবিকানির্ভর মানুষের জন্য কোনো বরাদ্দও নেই। নদীতে গিয়ে ইলিশ না পেলে সংসার চলে না। অসহায় অবস্থায় থাকে। মাছ ধরতে না পেরে অন্য পেশায় মনোযোগী হচ্ছে জেলেরা।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, এ সময়ে নদীতে একটু ইলিশ কম থাকে। যা ইলিশ তা চাঁদপুর হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম চলে যায়। ছোট মাছগুলো গ্রামের বাজারগুলোতে পাওয়া যায়। জেলেদের কাঙ্ক্ষিত আশা পূরণ হয় নি।
এ সময় জেলে সম্প্রদায়ের জন্য কোনো বাজেট আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযান চলাকালে কিছু বরাদ্দ আসে। তবে সেটা অতটা না, যে সব জেলে পাবে। আর এ করোনার সময় জেলেদের জন্য কোনো বাজেট নেই।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৫০ হাজার ২৫২ জেলে পরিবার রয়েছে। তার মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদরে- ৭ হাজার ৫১৮, রায়পুরে ৭ হাজার ৫৫০, রামগতিতে ২০ হাজার ৩৬০ ও কমলনগর উপজেলায় ১৪ হাজার ১০০ কার্ডধারী জেলে পরিবার রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews