জাহাঙ্গীর হোসাইন বাবলু
বৈদেশিক মুদ্রা বা Remittance. বাংলাদেশের মুল অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার হামলার কথা আমরা মোটেও ভুলে যাইনি এবং আমরা এও ভুলে যাইনি যে ঐ সময় হতে কমপক্ষে দশ বছর সমগ্র পৃথিবীতে যে অর্থনৈতিক ধ্বস নেমেছিলো কিন্তু গর্ব করে বলা যায়, পৃথিবীর অন্যতম প্রধান দেশ বাংলাদেশে সে ধ্বসের প্রভাব ফেলতে পারেনি। যে সব কারনে পারেনি তার অন্যতম একটি কারন হলো বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ। আর এ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ব্যাংকের নাম বৃহত প্রবাসী জনগোষ্ঠী বা বিদেশ বিভুইয়ে অর্থনৈতিক যোদ্ধা।
বাংলাদেশের মুল উন্নয়নে প্রায় এক চতুর্থাংশ আর্থিক যোগান দেয় চির দুঃখি প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ প্রবাহ, পোশাক শিল্প, চামড়া শিল্প, জাহাজ শিল্পসহ অজস্র খাত তো রয়েছেই। এছাড়াও একটি শিল্প তির তির করে নিরবে নিভৃতে যে কতোটা পথ এগিয়েছে তা অনুমান করা অসম্ভব। প্রমান স্বরুপ করোনার প্রথম ডেউয়ে একাধারে তিনমাস দেশের কল-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমন কি সমগ্র পৃথিবীর ন্যায় উপাশনালয়, পরিবহনসহ প্রায় ৮০% সেক্টর বন্ধ ছিলো। কিন্তু একটি সেক্টর যার নাম ই-কমার্স নির্ভর ফ্রি-ল্যান্সিং থেমে থাকেনি। বিষয়টি মাননীয় মন্ত্রী ফজলে নুর তাপসসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও উঠে এসেছে। ই-কমার্স, ফ্রি-ল্যান্সিং নির্ভর অর্থনিতীর কারনে কিছুটা হলেও বাংলাদেশকে সচল রেখেছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার সাথে দেশ পরিচালনার কারনেও অন্য দেশের মতো বাংলাদেশকে দুর্বল হয়ে পড়েনি।
এখন কথা হলো ই-কমার্স, ফ্রি-ল্যান্সিং কি? এ সম্পর্কে এখনো দেশের পয়ত্রিশোর্ধ ৯০% মানুষ বোঝে না। অথচ মাত্র তিন বছরের শিশু থেকে ৯০ বছরের বয়স্ক মানুষ, শিক্ষিত, কম শিক্ষিত, অশিক্ষিত সকলই নেট ব্রাউজিং করেন। এ এক মহা নেশার সর্গরাজ্য। নিজের ঘামের অর্থে, স্কুলের টিফিনের পয়সা জমিয়েও রক্তচোষা বহুজাতিক কোম্পানীগুলো থেকে নেট কিনে অর্থ খরচ করে, কেহ বিনোদন কামায়, কেহ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে ব্যাস্ত, কেহ ইহুদী নাসারাদের অর্থ চেটে ধর্মের অপব্যখ্যা দেয়, কেহ রাজনীতি করে আবার কেহ যে যা নয় তা জাহিরের চেষ্টা করে, প্রেম-পরকিয়া সবই করে তবে এ থেকে যে অর্থ কামিয়ে নেয়া যায় বৈধ পথে তা মাথায় খাটায় না ৯৯,৯৯% মানুষই।
আমি একটি ই-কমার্স কোম্পানির সমিক্ষা চালাতে গিয়ে আশ্চর্য হয়েছি। এতো অল্প বিনিয়োগে, এতো কম সময়ে এতোটা হ্যান্ডসাম ইনকাম কি করে সম্ভব। খতিয়ে দেখা গেলো কোম্পানীটি ECAB এর সদস্যও বটে। ধরুন ব্যাপারটা এমন যে আপনি ১৫৬০০/= টাকা বিনিয়োগ করে মাসে ৭০০০= আয় করলেন, সেখানে প্রতিদিন মাত্র ৪থেকে ৫মিনিট নেটে কাজ করলেই হলো। এছারাও চাইলে লাখ টাকাও আয় করা সম্ভব, এখানে স্বপ্ন দেখার প্রয়োজন পরে না। সম্ভব অনুযায়ী বিনিয়োগ করে কাজ করা আর টাকা আয় করা। যতাটা সত্য ততটাই বাস্তবতা।
তা হলে ভেবে দেখুন তো যদি দেখি ১০০,০০০/ (একলাখ) টাকা বিনিয়োগ করে কতো আর করা যেতে পারে? এখানে এক টাকার গাছ লাগিয়ে ১হাজার টাকা নয়, বর্ধিত যে আয়টি করবেন তা নেহায়েত মেধা মগজ খরচ করে। এবার খুঁজে নিন স্বপ্নের বারামখানা।
এ কাজটি সর্ব প্রথম তার জন্য- যে ছেলেটির জন্য আপনার ঘুম হারাম, বেকার, অলস, নেশাগ্রস্থ আপনি হয়তো ভাবছেন ৩০০,০০০% তিনলাখ থেকে ১০,০০০% (দশলাখ) টাকা নানান পন্থায় সংগ্রহ করে, যেমন এটা ওটা বিক্রি করে, এনজিও কিংবা ব্যাংক লোন নিয়ে বিদেশ পাঠাবেন। এই বাংলাদেশের মানুষকে আর ও কাজটি আর করতে হবে না। কারন ও টাকা হয়ত বিদেশ হতে আর একত্র নাও হতে পারে। মাত্র ১০% প্রবাসী সাফল্য অর্জন করে ৯০% অসম্ভব। যারা পারে তারা জীবনের সকল বিসর্জন দিয়েই শুধু অর্থই আহরন করে জীবনের বাকি সব হাহাকার।
আপনার ঐ ছেলেটি/ মেয়েটি কে সম্ভব অনুযায়ী মাত্র ১০,০০০(দশ হাজার) ১৫,৬০০(পনেরো হাজার ছয়শত) থেকে ১২০,০০০ (একলাখ বিশ) দিয়ে কিংবা আরো বেশি হোক। দেখবেন আপনার ঐ ছেলে/ মেয়েকেই বৈধ নগদ অর্থ আয়ের নেশায় পেয়ে বসবে, আর সব নেশা, অলসতা ভুলে যাবে। এছাড়াও যাদের অল্প আয় পরিবারে খরচ বেশি, করোনাকালে ব্যাবসায় লস করে পথে বসেছেন, যাদের বিত্তের নেশা, যে ছাত্র ছাত্রীর হাতে যথেষ্ট আড্ডার সময়, যারা পার্টটাইম খুজছেন,যিনি গৃহিণী, অন্য পেশাজীবি সকলেই নিজের কিছু গোপন সঞ্চয়, কিছু নগদ টাকা হাতে রেখে তৃপ্তি পায়, তাছাড়াও ভালো-মন্দে, বিপদ-আপদে কিছু টাকা থাকতেও হয়। অর্থাৎ যাদেরই অর্থের প্রয়োজন সম্ভব অনুযায়ী সে ততটা বিনিয়োগে ও কাজ করে আয় করে নিন। যে কোম্পানীটির সমিক্ষা করেছি, আমি দেখেছি তাদের যে ভিডিও ক্লিপগুলো ওপেন এন্ড সাবমিট করে, সেগুলো প্রায়ই বিদেশী নামি দামি কোম্পানির বিজ্ঞাপন।
ই-কমার্সের ঐ কোম্পানির প্রতিটি টাকা বৈধ ও ন্যায্য।
ই-কমার্স/ফ্রি ল্যান্সিংয়ের সফলতা কি?
----
১/ ই-কমার্স/ফ্রি ল্যান্সিংয়ের কারনে দেশের বেকারত্ব দুর হবে।
২/ পরিবারের বোঝা থেকে সচ্ছলতার মুখ দেখানো।
৩/অর্জিত অর্থের ৫% সরকার রাজস্ব, যা দেশের রাজশ্ব খাতে বড় ধরনের সংযোজন।
৪/ বিদেশি বিজ্ঞাপনে কাজ করে ফ্রিল্যান্সার ও কোম্পানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন।
৫/ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে অবদান রাখা।
৬/ কথায় বলে ব্যাবসায় লস থাকবে লাভ থাকবে। ই-কমার্স তা বলে না ও বিশ্বাস করে না বরং ৬৩ দিনে আপনার পূর্ন বিনিয়োগের অর্থ উঠে আসবে।
৭/ সকল ব্যাবসায় ডেমারেজ থাকবে, এখানে ডেমারেজের কোন কিছুই নেই, বিনিয়োগ, কাজ, উপার্জন, আয়েস করা ও গর্বিত নাগরিক হওয়া। কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে বেকারত্বের খাতায় নাম লেখানো নয়। আমরা চাইলে সবাই এগিয়ে যেতে পারি বাংলাদেশকে সাথে নিয়ে।
----------
লেখকঃ কবি, কলামিস্ট, গবেষক ও সংগঠক
E-mail: spotinformation.1971@gmail.com
Cell: 01784874659- 01810077615
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy