যোবায়ের হোসাইন:
উত্তরা ১৩ নং সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ রোডের ১ নং বাড়ীর ৩য় তলায় ইন্সপিরেশন একাডেমী নামের একটি কোচিং সেন্টারের মালিকদের বিরুদ্ধে ডলার প্রতারনা ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে।
ভূক্তভোগীদের তথ্য সূত্রে জানা যায়, ইন্সপিরেশন একাডেমী নামের কোচিং সেন্টারটি কিছু দিন আগে ১৩ নং সেক্টরের ৮ নং রোডে ছিল। প্রতারনা ব্যবসার মূল হোতা ও কোচিং সেন্টারের পরিচালক হিসেবে দাবিদার মোঃ আনোয়ার হোসাইন মার্চ মাসে এটিকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হিসেবে পরিচয় দিয়ে, গরেিব নেওয়াজ রোডে ৮০ হাজার টাকার মাসিক ভাড়ায় একটি ফ্ল্যোর ভাড়া নেয়। উক্ত ফ্ল্যোরে ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে টাইলস, দরজা , জানালাসহ সবকিছুতে পরিবর্তন করা হয়। বানানো হয়েছে বিভিন্ন কোর্স করার জন্য অত্যাধনিক ডিজিটাল অডিটোরিয়াম এবং আইটি রুম। এসব রুমে উত্তরা আবাসিক এলাকায় বসবাসরত যে সব মহিলাদের স্বামী বিদেশ, তাদেরকে বিশেষ কোর্সের মাধ্যমে আউট সোর্সিং এর নামে অজ্ঞাত কোম্পানীর পণ্যের উপর বিনোয়োগ করানো হয় এবং উত্তরার যেসব ধনাট্য ব্যক্তিরা বিনোয়োগে উৎসাহী, তাদেরকে তার বিশেষ ব্যক্তিদের মাধ্যমে দাওয়াত দিয়ে এনে কোর্স করানো হয়। কোর্স শেষে অনলাইন ভিত্তিক অজ্ঞাত আন্তর্জাতিক কোম্পানীর ডলার ব্যবসার বিনোয়োগে নামানো হয়।
সরে জমিন অনুসন্ধানে যা দেখা যায় ঃ গত মাসের ২৯ তারিখ সোমবার সন্ধ্যায় প্রতিবেদক ইন্সপিরেশন কোচিং সেন্টারে সরে জমিন অনুসন্ধানে গেলে দেখতে পান যে, একটি রুমে বিনোয়োগ বিষয়ে একজন প্রশিক্ষক ১২ থেকে ১৫ জন সদস্যের সামনে উত্তেজনাকর উক্তব্য দিচ্ছেন। উক্ত বিনোয়োগ বিষয়ক কোর্সে আগত ছাত্র ছাত্রীদের বয়স ৩৫ থেকে ৫০ এর মধ্যে। বিনোয়োগ বিষয়ক কোর্স সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের মালিক আনোয়ার এর সাথে যোগাযোগ করতে তার অফিস রুমে প্রবেশ করলে, তিনি রবিউল সরদার নামে এক ব্যক্তির সাথে সাংবাদিকদের পরিচয় করিয়ে দেন। যিনি নিজেকে উত্তরার একজন সমাজসেবক, বিশিষ্ট শীল্পপতি একটি পত্রিকার উপদেষ্টা এবং মন্ডল গ্রæপের ভাইস চেয়ারম্যান বা পার্টনার হিসেবে দাবি করেন। রবিউল সরদারের দেওয়া ভিজিটিং কার্ড অনুযায়ী তার সিলভার নামক শীল্প কারখানা ও গার্মেন্স এর কোন অস্তীত্ব পাওয়া যায়নি। কোচিং সেন্টারের নামে প্রতারনা ব্যবসা বিষয়ে আনোয়ারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন, পরে সাংবাদিকদের জেরার মূখে তিনি বলেন, আমাদের এখানে আউট সোর্সিং এর কোর্স করানো হয়। কি ধরনের আউট সোর্সিং প্রশ্ন করলে তিনি একেক সময় একেক ধরনের উত্তর দেন। সাংবাদিকদের তিনি একটি ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দেন। যে ভিজিটিং কার্ডে তিনি ইকো স্টাইল সোর্সিং লিঃ এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিজেকে উপস্তাপন করেছেন। তার ইকো স্টাইল সোর্সিং লিং নামক কোম্পানীতে রয়েছে টেক্সটাইল, গার্মেনস্ ও বায়িং হাউজ ব্যবসা। সরে জমিন অনুসন্ধানে তার ঐ ব্যবসার কোন অস্তিত্ব নেই। আনোয়ার প্রশ্নের উত্তরের ফাঁকে এক যুবলীগ নেতাকে ঠেকে আনেন এবং তার আন্তর্জাতিক ব্যবসার লাইসেন্স, ভ্যাট - টেক্স ও অন্যান্য কাগজপত্র সাংবাদিকদের দিবেন বলে জানান। গত সোমবার দুপুরে সাংবাদিকরা আনোয়ারকে মুঠো ফোনে কাগজপত্রের কথা স্বরণ করিয়ে দিলে তিনি এক সাংবাদিককে বলেন, আপনারা আমার কাছে চাঁদার জন্য এসেছেন, আপনাদেরকে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি ধরে নিয়ে যেতে বলেছেন। তার এই হুমকি পরিপ্রেক্ষিতে সাপ্তাহিক দূর্নীতি সমাচার পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ রফিক উত্তরা পূর্ব থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন। সাধারন ডায়রি নং ২৩৫, তারিখ ৭/৭/ ২০২০, এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক ( অপারেশন ) আলমগীর গাজী এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তার বিষয়ে আমাদের কাছে আরো তথ্য এসেছে, তার বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যাবস্থা গ্রহন করা রহবে।
সাংবাদিকদের নজড়ে প্রতারনা ঃ উত্তরায় আনোয়ার একজন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। তার ইকো স্টাইল সোর্সি লিঃ নামক কোম্পানীর অফিসের ফ্ল্যাটটির বিষয়ে বাড়ীর কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করলে তারা প্রতিবেদককে জানান যে, ফ্ল্যাটটি ‘এমেটি কেয়ার একাডেমি’ নামক একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নামে ৮০ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বাড়িটির অন্যান্য ফ্ল্যাটের ব্যবসায়ীরা জানান, গত তিন - চার মাস আগে যখন স্কুলের কাজ করানো হয় তখন আমরা এর মালিক হিসেবে ৩ জনকে দেখেছি, এখন শুধু আনোয়ারকে দেখি। এ বিষয়ে আনোয়ারের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, এটি তার কোচিং সেন্টার ও বিজনেস অফিস। এখানে কোন স্কুল নেই
প্রতারনা - ১
আনোয়ার এর প্রতারনার বিষয় অনুসন্ধান করলে বের হয়ে আসে গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকা মহানগর উত্তর এর ৪৯, ৫০ ও ৫১ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী স্বপ্না এর তথ্য। স্বপ্না এর সাথে মুঠো ফোনে আনোয়ারের অজ্ঞাত কোম্পানীতে বিনোয়োগ করার কথা বলে আলোচনা করলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন ( যার সারমর্ম ), আনোয়ারের এখানে একটি বিদেশী কোম্পানী রয়েছে, ঐ কোম্পানীতে বিনোয়োগ করা হয়। আমি কয়েকজনকে বিনোয়োগে নিয়ে এসেছি। বিনোয়োগ করাইলে একটা পার্সেন্টিজ দেওয়া হয়। আমি আগামী দুই দিনের মধ্যে বিনোয়োগ করব। ........চলবে
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy