বুধবার সকালে র্যাব-১ অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই বাড়িতে সাহেদকে নিয়ে অভিযান চালানো হতে পারে।
এর আগে, রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতারণা মামলার প্রধান পলাতক আসামি ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়।
গোপন সংবাদে র্যাব জানতে পারে, সাতক্ষীরার দেবহাটার সীমান্ত এলাকা দিয়ে মোহাম্মদ সাহেদ ভারত পালিয়ে যাবেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা ওৎ পেতে থাকে। পরে ভোর ৫টার দিকে এক নৌকার ভেতর থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
গত ৬ জুলাই করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে র্যাব উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। এরপর রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়। ৭ জুলাই করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র্যাব।
মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদ করিমকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এজাহারে। এরপর থেকেই পালিয়ে ছিলেন সাহেদ। তাকে গ্রেফতারে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় র্যাব। অবশেষে সাতক্ষীরা থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় তারা।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাহেদের প্রতারণা কাজের অন্যতম সহযোগী রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
পাশাপাশি এদিন রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।
এদিকে সাহেদের রিজেন্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অফিস দখলে রাখা, আর মাসের পর মাস ভাড়া বকেয়া রাখার অভিযোগ রয়েছে। মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে এখনো অর্ধকোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি ভবন মালিকের। আর উত্তরায় রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ের ভাড়া বকেয়া রয়েছে ৮ মাসের। উত্তরা শাখা সিলগালা করে দেয়ার পর রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর শাখাও এখন বন্ধ।
উত্তরা রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, আমরা শুরুতে ভুয়া টেস্টের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। কিন্তু এখন দিন যতই যাচ্ছে দেখছি অসংখ্য জঘন্য অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল সাহেদ। যাদের সঙ্গে তার ব্যবসা ছিল, তাদের সঙ্গেই প্রতারণা করেছে। অভিযানের পর অসংখ্য মানুষ আমাকে কল করে তার প্রতারণার ফিরিস্তি তুলে ধরছে।
পুরান ঢাকার এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তার থেকে পদ্মাসেতু প্রকল্পের জন্য নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে সাপ্লাই দিয়ে আর টাকা দেয়নি। সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে একজন কল করে জানিয়েছে, তার থেকে বালু এনে সাপ্লাই দিয়ে সে টাকা আর পরিশোধ করেনি। এছাড়া বিভিন্ন নিয়োগ ও বদলির কথা বলে কোটি কোটি টাকা সে হাতিয়ে নিয়েছে।
এছাড়া সাহেদের বিরুদ্ধে সুন্দরী তরুণীদের ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তরুণীদের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে কাজ বাগিয়ে নিত সাহেদ। অনেক সময় সরবরাহকারীদের দিয়ে কাজ করিয়ে বিলও দিতেন না।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy