নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ২৯ শে জুলাই ঢাকা শহরে প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্য সচিব মোস্তফা জগলুল পাশা (পাভেল) সর্বক্ষনিক রাজপথে থেকে বিএনপির পূর্ব ঘোষিত প্রোগ্রাম সফল করার জন্য শতভাগ ঢেলে দেওয়া নেতাকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটির ঘোষণা আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মূলতঃ ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাথে ঢাকা মহানগরের সকল অঙ্গ সংগঠনের সাথে সমন্বয় হীনতার কারণে কর্মসূচিতে বিএনপি ব্যর্থ হয়।আর তাই পুরাতন কমিটি ভেঙে দেওয়া হয় নতুন কমিটি। নতুন কমিটিতে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হন মোস্তফা জগলুল পাশা ওরফে পাভেল । তাকে বাদ দিয়ে করা হলো নতুন কমিটি অথচ ২৯শে জুলাই সমন্বয় হীনতার কারনে ব্যর্থ হওয়া প্রোগ্রাম টিতে যা প্রাপ্তি তার শতভাগ সাফল্য অর্জন হয় মোস্তফা জগলুল পাশার নেতৃেত্ব ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সফল প্রতিরোধের মাধ্যমে।
দ্বাদশ নির্বাচনের আগ মূহুর্তে দলটি যখন গুছিয়ে নিয়ে সরকার পতনের আন্দোলনে ব্যস্ত ঠিক এমন সময়ে এ ধরনের সিদ্ধান্তে হতবাক ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের নেতা-কর্মীরা।
পূর্বের ভুলের পূনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছে না তো দলটি ! ২০১৩ সালে দেখেছি শুধু মাত্র সময় মতো যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানকারী দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করার জন্য ২০১৩ সালে বিএনপির আন্দোলন সফল হয় নাই এবং যার ফলে বিএনপি দূর্বল হতে হতে ২০১৫/২০১৬ সালে তার সর্বোচ্চ দূর্বল সময় পার করেছে। আর সেই অবস্থান থেকে দলকে সুসংগঠিত করে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদল কে সকল ইউনিট থেকে শক্তিশালী ইউনিটে রুপান্তরিত করেন (মিল্টন -পাভেল) কমিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর উত্তর যুবদলের এক নেতা বলেন, মিল্টন -পাভেল ভাই কমিটি যুবদলের ইতিহাসের ঢাকা মহানগর উত্তরের সবচেয়ে সুসংগঠিত, ত্যাগী,পরিশ্রমী ও দলের প্রতি আনুগত্যশীল নেতা কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত সফল একটি কমিটি।
২৯ শে জুলাই ঢাকা শহর প্রতিটি রাজপথ ঘেরাও করার জন্য কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের রাজপথের নেতা মোস্তফা জগলুল পাশা ওরফে পাভেল সর্বক্ষণিক রাজপথে ছিলেন কিন্তু কিছু কর্মীর কারণে কর্মসূচিতে বিএনপি ব্যর্থ হয়।
আর এই ব্যর্থতার দায়ে পুরাতন কমিটি ভেঙ্গে দেয় বিএনপি, ঘোষণা দেয় নতুন কমিটি যেখানে মহানগর উত্তর যুবদলের সদ্য ভেঙে দেওয়া কমিটির সদস্য সচিব মোস্তফা জগলুল পাশা (পাভেল) কে রাখা হয়নি। এতে করে সংগঠনটির বড় একাংশের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংগঠনের এক কর্মী বলেন, ‘আমরা দেখেছি পার্টি অফিসের সামনে একটা অনুমতি বিহীন প্রোগ্রাম করতে গিয়ে পার্টি অফিসে আগে থেকে অবস্থান করা অল্প কিছু নেতাকর্মী সহ গোলাম মাওলা শাহীন আর ছাত্রদলের রাকিব, জহুরুল হক হলের আমিনুল নিচে নেমে স্লোগান দিচ্ছিল। আশেপাশে অনেক নেতাকর্মীরা থাকলেও কেউ যখন পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আসতে পারছিলো না, তখন পাপেল ভাইয়ের নেতৃত্বেই প্রথম মিছিল এসেছিলো পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে এবং প্রোগ্রাম টি সফল হয়েছিলো।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর যুবদলের একাধিক কর্মী বলেন, পাপেল ভাই মহানগর উত্তর বিএনপির আমান-আমিনুল কমিটি ঘোষনার পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে গিয়ে পুলিশের হামলার মুখে বীরের মতো প্রতিরোধ করেন। আমরা দেখেছি ৭ ডিসেম্বরের হামলা বীরের মতো প্রতিরোধ হয়েছে পাপেল ভাইয়ের নেতৃত্বে।
মহানগর উত্তর যুবদলের একাংশ মনে করেন, গত ২৯শে জুলাইয়ে সমন্বয় হীনতার কারনে ব্যর্থ হওয়া প্রোগ্রাম টিতে যতটুকু প্রাপ্তি ছিল তার অনেক বড় একটা অংশ ছিল পাভেল এর জন্য।
তাদের প্রশ্ন, পাভেল যে সময়ে যে জায়গায় মিছিল করেছিল, নতুন মহানগর কমিটির কেউ কি সেই পরিস্থিতিতে মিছিল করার সাহস পেয়েছে?
ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলকে মোস্তফা জগলুল পাশা ওরফে পাভেল রাজপথে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারন সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না এরেস্ট হওয়ার পর শফিকুল ইসলাম মিল্টন দায়িত্ব পায় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের। এরপর থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলে মোস্তফা জগলুল পাশা পাভেল ভাই একক নেতৃত্বে সংগঠন চালিয়েছেন। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদল এবং এর আওতাধীন সকল থানা, ওয়ার্ড, ইউনিট পর্যন্ত বিগত কমিটিগুলোকে অনেক শক্তিশালী সংগঠনে রুপান্তরিত করেছিলেন।
মহানগর উত্তর যুবদলের পাভেল সমর্থকরা বলেন, গত বছর ডিসেম্বর যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন জেনেও ১ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিনে এবং রাতে সার্বক্ষণিক দলের জন্য পার্টি অফিসে ছিলেন। ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যই তার মধ্যে বিরাজ করছিল, গ্রেফতার আতংক তিনি ভীত ছিলেন না।
তাদের প্রশ্ন এটা কি উনার ব্যর্থতা? তারা মনে করেন মোস্তফা জগলুল পাশা সর্বক্ষণিক রাজপথে ছিলেন আর তাকেই বঞ্চিত করা হয়েছে, যা তার প্রতি সুবিচার করা হয়নি।
এ ঘটনায় ধিক্কার জানিয়েছে বিএনপির যুবদলের নেতাকর্মী গণ এবং এবং ঢাকা মহানগরের ২৬ টি থানার যুবদলের কমিটির সমর্থকরা, পাভেল ভাই কে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের জন্য নিন্দা ও ক্ষোভ জানান।
মোস্তফা জগলুল পাশা’র সমর্থকদের সংগঠনটির বড় অংশই দূর্দিনের রাজপথের সৈনিক। পাভেল কে পাশ কাটিয়ে নতুন যে কমিটি দেওয়া হল এতে তারা যারপরনাই হতাশ।
তারা মনে করেন, দুর্দিনের লোকগুলোকে সরিয়ে দিয়ে যখন বিএনপি আশার আলো দেখা শুরু করেছে তখনই সুবিধাভোগীদের টেনে আনা হয়েছে।
পাভেল সমর্থকরা (যারা ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের বড় অংশের সমর্থক) বলেন, দীর্ঘদিনের রাজপথের মার খাওয়া নেতাদের কল্যাণে বিএনপি সরকার পতন ঘটিয়ে মসনদে বসবে মাঝখান থেকে আপনারা হয়ে যাবেন, হাসিনা পতনের মহানায়ক!!! পার্টির হাইকমান্ডের কাছে বলতে চাই, যারা এতোদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন দলকে আজকের এই অবস্থায় নিয়ে আসতে, তাদেরকেই আজ ছুঁড়ে ফেলে দিলেন? এভাবে ঘোড়াকে বাদ দিয়ে গাধাকে মনোনয়ন করলে ঘোড়াদৌড়ে জেতার জন্য। এভাবে চালালে নিজ যোগ্যতায় বিএনপি র ক্ষমতায় আসা অসম্ভব। শুধুমাত্র আমেরিকাই ভরসা।