সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একটি স্থান যেভাবে পাল্টে যায়, তেমনি নামও বদল হয়। নবাবপুরের ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে। মুঘল আমলের শেষ দিকে এখানে আমির-উমরাগণ বসবাস করতেন বলে এলাকাটি উমরাপাড়া বা উমেরপুর নামে পরিচিত ছিল। তবে ইসলাম খানের আমলে নবাব বাহাদুর এই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘নবাবপুর’।
নবাবপুর এলাকার মধ্যেই আবার টাকারহাট এবং মহাজনপুর নামে দুটি ভাগ ছিল। মোঘল আমলের শেষদিকে এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে ধার দেয়া; মানে ঋণ প্রদান আর বন্ধকী ব্যবসা ও সোনা-রুপা টাকায় পরিবর্তনের কাজ কারবার হতো টাকারহাট এলাকায়। আর মহাজনপুরে ছিল ওইসব ব্যবসার অর্থ বিনিয়োগকারী অর্থাৎ মহাজনদের বাসস্থান।
উনিশ শতকের চল্লিশের দশকের পর ঢাকায় ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু হলে এসব ব্যবসায় ভাটা পড়ে। ফলে মহাজনপুর বা টাকার হাট এই নামগুলো আস্তে আস্তে হারিয়ে যায়। ফলে সুপরিচিত হয়ে ওঠে নবাবপুর নামটি। প্রায় ৪০০ বছর আগে এখানে জনবসতি গড়ে উঠেছিল। সেকালে ঢাকার তাঁতি আর বসাক শ্রেণির মানুষেরা নবাবপুরে বসবাস করতো। ঢাকার ঐতিহাসিক মসলিন এবং কাসিদা কাপড় তৈরির অন্যতম স্থান ছিল এটি। অথচ সেসব আজ কেবলই স্মৃতি।
বর্তমানে এখানে নানা প্রকার মেশিনারিজ, ইলেট্রনিক ও স্যানিটারি সামগ্রীর বিশাল বাজার তৈরি হয়েছে। নবাবপুর সংলগ্ন রাস্তাটিই নবাবপুর রোড নামেই পরিচিত।